হতাশার তলানিতে হলান্ডরা
হতাশার তলানিতে হলান্ডরা

১২ ম্যাচে নবম হার—আরও তলানিতে গার্দিওলার সিটি

অ্যাস্টন ভিলা ২: ১ ম্যানচেস্টার সিটি

অবিশ্বাস্য—সাম্প্রতিক সময়ে ম্যানচেস্টার সিটির প্রতিটি ম্যাচ শেষে এই শব্দটি যেন ঘুরেফিরে বারবার লিখতে হচ্ছে। ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী দলটির এমন দুর্দশা কে কল্পনা করেছিল! জীবন অবশ্য এমনই। গতকাল যে দলটি সাফল্যের চূড়ায় ওঠে উদ্‌যাপন করেছিল, আজ তারাই দেখছে পতনের তলানি।

একই বৃত্তে ঘুরপাক খেতে খেতে হেরে চলেছে একের পর এক ম্যাচ। সর্বশেষ আজ রাতে সিটি ২-১ গোলে হারল অ্যাস্টন ভিলার কাছে। এই হারে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১২ ম্যাচে নবম আর প্রিমিয়ার লিগে ৮ ম্যাচে ষষ্ঠ হার দেখল সিটি। যে দলটি গত দুই মৌসুমে ৭টির বেশি ম্যাচ হারেনি, তারাই এখন হারকে যেন গলার মালা বানিয়ে নিয়েছে।

এই হারের ফলে টানা চার মৌসুমে লিগ জেতা সিটির ট্রফি ধরে রাখার সম্ভাবনা আরও কমে গেল। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জিততে অবশ্য অলৌকিক কিছুই করতে হবে সিটিকে। আজকের হারের পর তালিকার ছয়ে নেমে যাওয়া সিটির পয়েন্ট ১৭ ম্যাচে ৮ জয়, ৩ ড্র ও ৬ হারে ২৭। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে ২ ম্যাচ বেশি খেলে পেপ গার্দিওলার দল পিছিয়ে আছে ৯ পয়েন্টে।  

ভিলা পার্কে শুরুতেই ম্যান সিটিকে কাঁপিয়ে দেয় অ্যাস্টন ভিলা। এ সময় স্বাগতিকদের পরপর দুটি প্রচেষ্টা রুখে দিয়ে কোনোরকমে সিটিকে বাঁচান গোলরক্ষক স্টেফান ওর্তেগা। শুরুর এই ধাক্কা সামলে সিটি অবশ্য ভালোই খেলছিল। বদলে দখলও রেখেছিল তারা। কিন্তু ম্যাচের গতিপথ বদলে যায় ১৬ মিনিটে জন দুরানের গোলে।

ইউরি টিলেমানসের অসাধারণ এক পাস ধরে বল নিয়ে সিটি বক্সে ঢুকে পড়েন মরগান রজার্স। এরপর নিজে প্রচেষ্টা না নিয়ে বল বাড়িয়ে দেন দুরানকে। বাকি কাজটা সহজেই সেরে অ্যাস্টন ভিলাকে এগিয়ে দেন কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড।

পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় থাকা সিটির আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। বলের দখল রেখে আক্রমণে যাচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু দলকে সমতায় ফেরানোর জন্য তা মোটেই যথেষ্ট ছিল না। এর মধ্যে অ্যাস্টন ভিলাও ভঙ্গুর সিটিকে চাপে রেখে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু বিরতির আগে গোল পায়নি তারাও।

সিটির বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে অ্যাস্টন ভিলা

বিরতির পরও ম্যাচের চিত্র খুব একটা বদলায়নি। শুরুর কয়েক মিনিটে সিটির চেয়ে অ্যাস্টন ভিলাই হুমকি ছড়িয়েছে বেশি। কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ না হলে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত তারা। এর মধ্যে অবশ্য একবার লক্ষ্যভেদ করেও ফেলেছিল ভিলা। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি শেষ পর্যন্ত আর পাওয়া হয়নি তাদের।

৬০ মিনিটে সিটি রক্ষণে বিবশ করে অসাধারণ এক আক্রমণ গড়েছিল অ্যাস্টন ভিলা। ওয়ান টাচ ফুটবলের সৌন্দর্য ছড়ানোর পর রজার্সের নেওয়া শট প্রতিহত হয় পোস্টে লেগে। সে যাত্রায় না পারলেও ৫ মিনিট পর আর ভুল হয়নি স্বাগতিকদের।

আরেকটি দুর্দান্ত আক্রমণ থেকে জন ম্যাকগিনের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন রজার্স। এই গোলের পরই সিটির জন্য ম্যাচ একরকম শেষ হয়ে যায়। এরপর শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি গার্দিওলার দল। যোগ করা সময়ে ফিল ফোডেন গোল করলেও তা শুধুই সান্ত্বনা হয়ে রইল।