জাহিদ হোসেনের ব্যাপারে একটি কথাই বলা যায়—এলেন, দেখলেন, জয়সূচক গোলটি করে দলকে জেতালেন।
বসুন্ধরা কিংসের নিয়মিত খেলোয়াড় নন জাহিদ। কোচ অস্কার ব্রুজোন কালেভাদ্রে তাঁকে মাঠে নামান। তবে এই ফরোয়ার্ডের প্রতি তাঁর আস্থার জায়গা নিশ্চয়ই যথেষ্ট, নয়তো ফেডারেশন কাপ ফাইনালে এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁকে নামাবেন কেন!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বিশ্বনাথ ঘোষের জায়গায় জাহিদকে নামানো হয়েছে উইং দিয়ে আক্রমণগুলোকে আরও কার্যকর করার জন্য। জাতীয় দল ও কিংসে নিয়মিত বিশ্বনাথের জায়গায় এই জাহিদ—আস্থার জায়গা নিয়ে কোনো কথা বলার উপায় নেই।
সেই জাহিদই শেষ পর্যন্ত দলের ‘হিরো’। ম্যাচের ১০৬ মিনিটে করলেন জয়সূচক গোল। যদিও সেই গোল নিয়ে মোহামেডানের অভিযোগ অনেক। কিন্তু তাতে জাহিদের কিছুই যাচ্ছে–আসছে না। ম্যাচের পর গোটা দল যখন উৎসবে ব্যস্ত, তখন জাহিদ রইলেন আড়ালেই। তাঁকে খুঁজেই পাওয়া গেল না।
কোচ অস্কার ব্রুজোনের কথা, ‘জাহিদকে যে কাজে নামিয়েছিলাম, সেটা সে ভালোভাবেই করতে পেরেছে, সে জন্য আমি খুশি। গোল যে কেউ করতে পারে। ওর কাজই ছিল উইং দিয়ে আক্রমণের ধার বাড়ানো।’
ব্রুজোনকে ম্যাচ শেষে দেখে মনে হলো তাঁর ওপর যেন ঝড় বয়ে গেছে। সেই ঝড় থেকে কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। কারণটা পরিষ্কার। আজ ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপ ফাইনালটা তাঁর স্নায়ুর যথেষ্ট পরীক্ষা নিয়েছে, ‘মোহামেডান ভালো খেলেছে, আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে আমরা ঘাবড়ে যাইনি। আমরা নিজেদের ধরে রেখে বীরত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলেছি।’
ব্রুজোনের কথা, ‘অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর পর মোহামেডান ম্যাচটা টাইব্রেকারে নিতে চেয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম তার আগেই জিততে।’
কিংসের উৎসবের কেন্দ্রে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার মিগুয়েল দামাসেনো। ৮৬ মিনিটে প্রায় একক প্রচেষ্টায় করা তাঁর গোলটিই যে ম্যাচে ফিরিয়েছিল কিংসকে। এর আগে ১–০ গোলে পিছিয়ে থাকা দল হারের শঙ্কাতেই ছিল।
ইংরেজিতে খুব একটা সড়গড় নন মিগুয়েল। গোলটি নিয়ে প্রশ্ন করতেই হাসলেন। তাঁর কাছে প্রশ্নটা ছিল গোলের আগে তিনি কী ভেবেছিলেন। মাঝমাঠ থেকে প্রায় একক প্রচেষ্টায় বল এঁকেবেঁকে লক্ষ্যে শট নিয়েছেন তিনি। মিগুয়েলের সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘আমি শুধু গোলপোস্টের দিকেই চোখ রেখেছিলাম।’
মিগুয়েলের মতো স্কোরার গোলপোস্টের দিকে চোখ রাখা যে কতটা বিপজ্জনক, সেটি আজ মোহামেডান খুব ভালো করেই বুঝেছে।