গোল করে খেলোয়াড়েরা কত রকম উদ্যাপনই তো করেন! কেউ জার্সি খুলে ফেলেন। কেউ আবার আনন্দের আতিশয্যে টাচলাইনের বাইরে চলে যান। সীমা লঙ্ঘন করলে রেফারি কার্ড দেখিয়ে শাস্তিও দেন।
গতকাল রাতে এশিয়ান কাপের শেষ ষোলোয় ইরাকের বিপক্ষে জর্ডানের ৩–২ গোলে জয়ের ম্যাচে এমন এক ঘটনাই ঘটেছে। গোল উদ্যাপন করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ইরাকের স্ট্রাইকার আয়মান হুসেইন। তবে শেষ ষোলো থেকে ইরাকের বিদায় ও লাল কার্ড ছাপিয়ে আয়মানের গোল উদ্যাপন নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি।
প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে করা গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জর্ডান। কিন্তু বিরতির পর (৬৮ থেকে ৭৬) আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচে এগিয়ে যায় ইরাক। ৭৬ মিনিটে করা গোলটি আয়মানের। গোল করেই দৌড়ে মাঠের বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংগুলো একবার পার হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দর্শকদের কাছে যাননি, মাঠে ফিরে টাচলাইনের কাছাকাছি বসে ঘাস খাওয়ার ভঙ্গি করেন। এই একই উদ্যাপন জর্ডানের খেলোয়াড়েরাও করেছেন প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে গোল পাওয়ার পর। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ জানিয়েছে, জর্ডানের খেলোয়াড়েরা তাঁদের দেশের জাতীয় খাবার ‘মানসাফ’ খাওয়ার ভঙ্গিতে গোল উদ্যাপন করেছেন।
আয়মান কয়েক সেকেন্ড এভাবে গোল উদ্যাপন করার পর উঠে দাঁড়িয়ে নিজেদের অর্ধে ফিরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রেফারি আলিরেজা ফাগহানি তাঁকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ১০ জনে পরিণত হওয়া ইরাকের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ম্যাচের যোগ করা সময়ে ২ গোল করে জয় তুলে নেয় জর্ডান। শেষ বাঁশি বাজার পর জর্ডান দল মাঠে ঘাস খাওয়ার ভঙ্গিতে জয় উদ্যাপন করেছে।
ইরাক কোচ জেসাস কাসাসও ছেড়ে কথা বলেননি। রেফারির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। কাসাস বলেন, ‘লাল কার্ডটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। যেকোনো বড় টুর্নামেন্টেই খেলোয়াড়েরা গোল উদ্যাপন করে। রেফারি এ জন্য লাল কার্ড দেখাতে পারেন না। জর্ডানও একইভাবে উদ্যাপন করেছে কিন্তু তাদের কোনো কার্ড দেখানো হয়নি, সেটা আমরা দেখেছি।’
এশিয়ান কাপে এবার ইরাকের ৪ ম্যাচে ৬ গোল করেছেন আয়মান। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচই জিতে শেষ ষোলোয় উঠে এসেছিল ইরাক।
ইরানি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেফারি আলিরেজা ফাগহানি এশিয়া মহাদেশে সম্মানিত রেফারিদের একজন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি ফিফার তালিকাভুক্ত আন্তর্জাতিক রেফারি। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল, এএফসি এশিয়ান কাপ ফাইনাল, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০১৬ অলিম্পিক ফুটবল ফাইনাল, ফিফা কনফেডারেশনস কাপ ছাড়াও ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ফাগহানি।
২০১৯ সাল থেকে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হয়েছেন। ইরাকের হারের পর অনলাইনে তাঁর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পিটিশন চালু করা হয়েছে। তবে ফুটবল অস্ট্রেলিয়া (এফএ) ফাগহানির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, ‘ফুটবল অস্ট্রেলিয়া আলিরেজার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছে এবং তার পরিবারকে প্রয়োজনীয় সব সমর্থনই দেবে।’