সাত ঘণ্টার বেশি সময় আলোচনার পর স্পেনের হয়ে খেলতে রাজি হয়েছেন স্কোয়াডের বেশির ভাগ খেলোয়াড়। ২৩ সদস্যের দলের ২১ জন উয়েফা নেশনস লিগে সামনের দুই ম্যাচে খেলতে সম্মত হয়েছেন। তবে এখনই খেলতে প্রস্তুত নন বলে দুজন অনুশীলন ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সবাই রাজি না হলেও এর মধ্য দিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অচলাবস্থার আপাত অবসান ঘটল। শুক্রবার সুইডেন ও মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে স্পেন।
স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন আরএফইএফে বেশ কিছু পরিবর্তন চেয়ে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলা বয়কট করেছিলেন ৩৯ ফুটবলার। যার মধ্যে স্পেনের সামনের দুই ম্যাচের ঘোষিত দলের খেলোয়াড়েরাও ছিলেন। ইএসপিএন সকারের খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে ভ্যালেন্সিয়ার একটি হোটেলে বৈঠকে বসে খেলোয়াড়, ফেডারেশনের কর্মকর্তা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (সিএসডি) ও নারী ফুটবলারদের ইউনিয়ন ফুটপ্রো। সাত ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠকের পর বুধবার স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটার দিকে সব পক্ষ একটি সিদ্ধান্তে একমত হয়।
বৈঠক থেকে বের হয়ে সিএসডি প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ফ্রাঙ্কোস ফুটবলারদের বয়কট প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে বলেন, ফেডারেশন দ্রুত ও অর্থবহ পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আলোচনায় বসা পক্ষগুলোর মধ্যে একটি যৌথ কমিশন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল একটি চুক্তি সই হবে, যেটা নজরদারি করার জন্য আরএফইএফ, সিএসডি এবং খেলোয়াড়দের নিয়ে একটি যৌথ কমিশন হবে। ফুটবলাররা তাদের উদ্বেগ এবং ফেডারেশনে অর্থবহ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বলেছে। ফেডারেশনও অবিলম্বে পরিবর্তনের অঙ্গীকার করেছে।’
অবশ্য ফ্রাঙ্কোস বা স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের নারী ফুটবলের চেয়ারম্যান রাফায়েল দেল আমো কেউই কী পরিবর্তন আনা হবে খোলাখুলি জানাননি।
স্কোয়াডে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে মাপি লিওঁ এবং প্যাতরি গুইহারো অবশ্য ফেডারেশনের প্রতিশ্রুতির পরও খেলতে রাজি হননি। কেন ক্যাম্প ছেড়ে যাবেন জিজ্ঞেস করা হলে গুইহারো সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে। এটা আমাদের জন্য ভিন্ন পরিস্থিতি। এটা কঠিন। যা কিছু ঘটেছে, তার পরে এখন এই অবস্থানে...মানসিকভাবে আমরা থাকতে প্রস্তুত নই। এটাই চলে যাওয়ার কারণ।’
লিওঁ এবং গুইহারো খেলোয়াড়দের প্রতি বিরূপ আচরণের কারণ দেখিয়ে গত মার্চেও জাতীয় দলে খেলতে অস্বীকৃতি জানান এবং নারী বিশ্বকাপ বয়কট করেন। জুলাই-আগস্টজুড়ে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া ফিফা নারী বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন।
ফাইনালের পুরস্কার বিতরণীতে আরএফইএফের প্রেসিডেন্ট লুইস রুবিয়ালেস মিডফিল্ডার হেনি হেরমোসোর সঙ্গে চুমু-কাণ্ডে জড়ালে এর জেরে স্প্যানিশ ফুটবলে তৈরি হয় অস্থিরতা। যার একপর্যায়ে রুবিয়ালেসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে ফিফা। পরে তিনি নিজেই পদ থেকে সরে যান। তবে নারী ফুটবলাররা ফেডারেশনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনার দাবি তোলেন, যা নিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে ফেডারেশনের টানাপোড়েন চলছিল অনেক দিন ধরে।