লিওনেল মেসি নেই চোটের কারণে। বাধ্য হয়ে আক্রমণভাগে পরিবর্তন আনতেই হচ্ছে লিওনেল স্কালোনিকে, যে পরিবর্তন নিয়ে শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায় এল সালভাদরের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। প্রশ্ন হচ্ছে, মেসিবিহীন দলে আর্জেন্টিনার গোল করার দায়িত্বটা কে নেবেন?
আর্জেন্টিনার বর্তমান দলে সেন্টার ফরোয়ার্ডে খেলা স্ট্রাইকার আছেন দুজন। একজন লাওতারো মার্তিনেজ, অন্যজন হুলিয়ান আলভারেজ। ইন্টার মিলান ও ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলা দুই স্ট্রাইকারই দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে গোলখরায় ভুগছেন। ২০২৩ সালে কেউই আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল করতে পারেননি। দুয়ারে যখন কোপা আমেরিকা কড়া নাড়ছে, তখন মার্তিনেজ–আলভারেজদের গোলখরা নিয়ে সমর্থকদের ভাবনা থাকছেই।
এমন নয় যে মেসি আর্জেন্টিনা দলে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে থাকেন। কিন্তু ইন্টার মায়ামি তারকা দলে থাকলে বেশির ভাগ গোলের পথ বের করার কাজটা তিনিই করে থাকেন। যেমন ২০২২ বিশ্বকাপেই দলের সর্বোচ্চ ৭ গোলই এসেছিল মেসির পা থেকে। অথচ নিয়মিত স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেও মার্তিনেজ ছিলেন গোলশূন্য।
বিশ্বকাপের আগে ২৩ সেপ্টেম্বর হন্ডুরাসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার প্রথম গোলটি করেছিলেন মার্তিনেজ। এর পর থেকে টানা ১৫ ম্যাচ তিনি গোলহীন। এর মধ্যে বিশ্বকাপে সৌদি আরব এবং বিশ্বকাপের পর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন। অন্য ম্যাচগুলোতে ছিলেন বদলি খেলোয়াড়। সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বশেষ ১৫ ম্যাচে ৬৫২ মিনিট খেলে গোল নেই তাঁর।
অথচ ক্লাব ফুটবলে ইন্টার মিলানের হয়ে ছন্দেই আছেন মার্তিনেজ। সিরি ‘আ’তে চলতি মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ২৩ গোল তাঁর, অ্যাসিস্টও আছে ৪টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৭ ম্যাচে গোল ২৬টি, প্রতি ১১২ মিনিটে এক গোল। যদিও জাতীয় দলে গোল নেই সাড়ে ৬০০ মিনিটেও!
আর্জেন্টিনা দলে মার্তিনেজকে যার সঙ্গে বদলি করা হয়, সেই আলভারেজও এখন দীর্ঘ গোলখরায়। ম্যানচেস্টার সিটিতে আর্লিং হলান্ডের পর দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে থাকেন আলভারেজ। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৪২ ম্যাচে মাঠে নেমে ১৬ গোল করেছেন ২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকার, অ্যাসিস্ট আছে ১৩টি। অথচ একই আলভারেজ আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১০ ম্যাচ গোলহীন।
২০২২ বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো এক টুর্নামেন্ট কাটিয়েছিলেন এই তরুণ। গোল করেছিলেন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ড ও শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মেসির পেনাল্টি থেকে করা গোলটিতে পেনাল্টিটি আদায় করেছিলেন তিনিই। আলভারেজের কারণেই বিশ্বকাপে মার্তিনেজের গোলখরার পরও ভোগেনি আর্জেন্টিনা।
কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনাল থেকে শুরু করে জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে গোল নেই আলভারেজের। এ সময়ে তিনি মাঠে ছিলেন ৬৪৯ মিনিট। অর্থাৎ, মার্তিনেজের চেয়ে ৫ ম্যাচ কম হলেও মিনিট প্রায় সমানই।
এল সালভাদর কিংবা তিন দিন পরের কোস্টারিকা ম্যাচে আলভারেজ–মার্তিনেজকে হয়তো একসঙ্গেই একাদশে দেখা যেতে পারে। গোলখরা থেকে বেরিয়ে আসার এটিই সময় তাদের।