রোনালদোর গোল উদ্‌যাপন
রোনালদোর গোল উদ্‌যাপন

ইউরো বাছাই

জোড়া গোলে রেকর্ডের রাতে রঙিন রোনালদো

দুর্দান্ত এক মাইলফলক সামনে রেখেই আজ রাতে লিখটেনস্টেইনের বিপক্ষে নেমেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এই ম্যাচে মাঠে নেমেই এককভাবে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা নিজের করে নেন পর্তুগিজ মহাতারকা। এটুকুই তো শিরোনাম হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল!

কিন্তু নামটা যখন রোনালদো, এত অল্পতে থামবেন কেন! তাঁর যে অনেক কিছুর জবাবও দেওয়ার ছিল। ইউরো বাছাইয়ে খেলতে নেমে সেই জবাবটাই দিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা। লিখটেনস্টেইনের বিপক্ষে পর্তুগালের ৪-০ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন রোনালদো। জানিয়ে দিলেন, বয়স ৩৮ পেরোলেও এখনো ফুরিয়ে যাননি।

বিশ্বকাপে মরক্কোর বিপক্ষে হেরে পর্তুগালের বিদায় নেওয়া ম্যাচটি ছিল রোনালদোর ১৯৬তম ম্যাচ। সেই ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে তখন পর্যন্ত সবচেয়ে ম্যাচ খেলা কুয়েতের বদল আল মুতাওয়াকে স্পর্শ করেন রোনালদো। বিশ্বকাপ–ব্যর্থতার পর নতুন করে রোনালদোর আর পর্তুগালের জার্সি পরা হবে কি না, তা নিয়ে ছিল সংশয়

কিন্তু নতুন কোচ রবার্তো মার্তিনেজের দলে ঠিকই জায়গা পান আল নাসর তারকা। আর ইউরো বাছাইপর্বে মাঠে নেমেই রোনালদো গড়েন অবিশ্বাস্য এক মাইলফলক। ১৯৭ ম্যাচ নিয়ে এখন সবাইকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় রোনালদো।

কীর্তি গড়ার রাতে ম্যাচের শুরুতেই বল পেয়ে দারুণভাবে বাড়িয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। যদিও সেটি কাজে লাগানোর জন্য উপস্থিত ছিল না কেউই। এগিয়ে যেতে অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি পর্তুগালকে।

গোলের পর উচ্ছ্বসিত রোনালদো

আক্রমণের ধারায় ৮ মিনিটেই গোল পেয়ে যেত পর্তুগাল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করেছিলেন লিখটেনস্টেইন গোলরক্ষক। কিন্তু সেই বলকেই ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে জালের পথ দেখান জোয়াও কানসেলো। বলটি জালে জড়ানোর আগে অবশ্য লিখটেনস্টেইনের এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে দিক বদলায়।

এগিয়ে গিয়েও দাপট ধরে রাখে পর্তুগাল। আক্রমণের পর আক্রমণে দারুণ সব সুযোগ তৈরি করে তারা। ১৪ ও ১৬ মিনিটে কাছাকাছি গিয়েও গোলের দেখা পায়নি ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। তবে ২২ মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন রোনালদো নিজেই।

দারুণ জায়গায় বল পেয়েও পোস্টের ওপর দিয়ে মারেন ‘সিআর সেভেন’। ২৭ মিনিটে আবারও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় পর্তুগাল। বিরতিতে যাওয়ার আগপর্যন্ত দাপুটে ফুটবলই উপহার দেয় পর্তুগাল। তবে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করেও বিরতির আগে একটির বেশি গোল পায়নি পর্তুগাল।

বিরতির পর গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পর্তুগালকে। ৪৭ মিনিটে বের্নার্দো সিলভা ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ৩ মিনিট পর পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। স্পট কিকে রোনালদোর শট ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারেননি লিখটেনস্টেইন গোলরক্ষক।

পেনাল্টি শট নিচ্ছেন রোনালদো

৫৮ মিনিটে রোনালদো আরেকবার লক্ষ্যভেদ করলেও গোলটি বাতিল হয় অফ সাইডের ফাঁদে। তবে দুরন্ত রোনালদোকে ৬৩ মিনিটে আর ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। ডি-বক্সের একটু বাইরে ফ্রি-কিক পায় পর্তুগাল। বুলেট গতির শটে জাল কাঁপিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেন রোনালদো। এটি আন্তর্জাতিক ফুটবলে রোনালদোর ১২০তম গোল।

৭৮ মিনিটে রোনালদোর বদলি হিসেবে গনসালো রামোসকে নামান মার্তিনেজ। ম্যাচের বাকি সময়েও দাপট দেখিয়েছে পর্তুগাল। কিন্তু আর কোনো গোল পাওয়া হয়নি।