ম্যাচ শেষে দর্শক অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন হ্যারি কেইন
ম্যাচ শেষে দর্শক অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন হ্যারি কেইন

ইতিহাস বদলাতে পারেনি ইংল্যান্ড

বিশ্ব রাজনীতিতে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র একই কাতারে। সেখানে দুটি দেশই পরাশক্তি। কিন্তু বিশ্ব ফুটবলে ব্যাপারটা সে রকম নয়। ধারে ও ভারে এখানে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক এগিয়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু ফুটবলের লড়াইটা যখন বিশ্বমঞ্চে, ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়েই আছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপে এই নিয়ে তৃতীয়বার মুখোমুখি দুই দল। আগের দুবারের সাক্ষাতে ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ডকে ১–০ গোলে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর ২০১০ বিশ্বকাপের ম্যাচটি হয়েছিল ১–১ গোলে ড্র।

ম্যাচ–পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ ধারা ভাঙার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কিন্তু সেটা তাঁর দল করতে পারেনি। ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’—আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ঠাসা এমন রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটির শেষ গোলশূন্য ড্রয়ে।

গোলশূন্য ড্র ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা বিনিময়

লম্বা পাসে গগনে গগনে ফুটবল এখন আর খেলে না ইংল্যান্ড। এখন তাদের ফুটবলে নতুন ধারা। ছোট ছোট পাস আর ব্যক্তি নৈপুণ্যের ঝলক দেখিয়ে নতুন ধারার ফুটবলের সুগন্ধ ছড়িয়ে শুরুতে মিনিট বিশেক উড়লেন সাকা–কেইন–স্টার্লিংরা। এরপর যেন যুক্তরাষ্ট্রের মনে পড়ে গেল মঞ্চ যখন বিশ্বকাপের, তারা তো এ দলটির চেয়ে এগিয়ে। প্রতি–আক্রমণের পসরা সাজাতে শুরু করলেন পুলিসিক–মুসা–উইয়াহরা। তাঁদের সেই প্রতি–আক্রমণাত্মক ফুটবলে এলোমেলো হয়ে যেতে বসে ইংল্যান্ডের মাঝমাঠ আর রক্ষণ। ম্যাচের প্রথম দুটি কর্নারও পায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে আক্রমণ করাই যেন ভুলে যাচ্ছিলেন কেইন–স্টার্লিংরা।

প্রথমার্ধেই তাই গোলের ভালো কিছু সুযোগ পেয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে লুক শ, হ্যারি ম্যাগুয়ার, জন স্টোনস ও কিয়েরন ট্রিপিয়ারের রক্ষণ দেয়াল ভেঙে জর্ডান পিকফোর্ডের পরীক্ষা খুব বেশি নিতে পারেননি পুলিসিক–উইয়াহরা। বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে গোলে নেওয়া ৯টি শটের একটিই লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইংল্যান্ডও বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণে হানা দেয়, গোলে ৮টি শটও নেয়। কিন্তু লক্ষ্যে ছিল একটিই। ম্যাসন মাউন্টের নেওয়া নিচু সেই ড্রাইভ শটটি কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার ম্যাট টার্নার।

প্রথমার্ধটা যেখানে শেষ করেছিল, দ্বিতীয়ার্ধটা ঠিক সেখান থেকেই শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এ অর্ধের শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের রক্ষণে আক্রমণের ঢেউ নিয়ে আছড়ে পড়েন পুলিসিকরা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল আর পাননি তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ সামলে ইংল্যান্ডও গোলের চেষ্টা করে গেছে। দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে পড়া স্টার্লিংকে তুলে নিয়ে জ্যাক গ্রিলিশকে মাঠে নামান সাউথগেট। বারকয়েক তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণে আতঙ্কও ছড়ান। তবে গোলের দেখা পাননি। সাউথগেটও তাই ইতিহাস বদলাতে পারেননি।

এই ড্রয়ের পর ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে যুক্তরাষ্ট্র। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইরানের পয়েন্ট ৩।