টাইব্রেকারে জয়ের পর ইউনাইটেডের উদ্‌যাপন
টাইব্রেকারে জয়ের পর ইউনাইটেডের উদ্‌যাপন

এফএ কাপ

রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে ব্রাইটনকে হারিয়ে ফাইনালে ইউনাইটেড

এফএ কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও ছিল গোলশূন্য। ম্যানচস্টোর ইউনাইটেড ও ব্রাইটনের এই ম্যাচে ফল পেতে ভাগ্য নির্ধারক টাইব্রেকারই ছিল শেষ ভরসা। কিন্তু সেখানেও প্রথম ৬ শটে আসেনি ফল। গোল করে উভয় দল। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল এই ম্যাচ বোধহয় আর শেষই হবে না। তবে ভুলটা ভাঙলেন ব্রাইটনের সলি মার্শ ।

৭ নম্বর শটে আকাশের ঠিকানায় বল পাঠিয়ে মনে করিয়ে দিলেন ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে রবার্তো ব্যাজ্জোর সেই ট্রেডমার্ক মিসটিকে। মার্শ মিস করলেও নিজেদের ৭ম শটে ভুল করেননি ভিক্তর লিন্ডেলফ। তাঁর গোলই ইউনাইটেডকে ৭-৬ ব্যবধানে জিতিয়ে তুলে দিয়েছে এফএ কাপের ফাইনালে।

ইউনাইটেডের জয়ে আগামী ৩ জুন এফএ কাপের ফাইনালে দেখা মিলবে ম্যানচেস্টার ডার্বির। যেখানে শিরোপার জন্য লড়বে দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটি। সিটি প্রথম সেমিফাইনালে স্টোক সিটিকে হারায় ৩-০ গোলে। আর এফএ কাপের ফাইনালে উঠে কয়েক দিন আগে ইউরোপা লিগে সেভিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার কষ্টও কিছুটা কমল এরিক টেন হাগের দলের।

ওয়েম্বলিতে এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দলের খেলাতেই মিলছিল রোমাঞ্চের আভাস। শুরুটা বেশ ভালোভাবেই করে ব্রাইটন। ম্যাচের ৭ মিনিটে ফ্রি-কিকে আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের প্রচেষ্টা কোনোভাবে ঠেকান ইউনাইটেড গোলরক্ষক দাভিদ দি হেয়া।

ব্রাইটনের হতাশা

তবে ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয় ইউনাইটেড। ১৫ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজকে নিরাশ করেন ব্রাইটন গোলরক্ষক রবার্ট সানচেজ। ১৭ মিনিটে ফের ফার্নান্দেজকে হতাশ হতে হয়।

এরপর দুই দলই চেষ্টা করে সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে। কিন্তু মিলছিল না কাঙ্ক্ষিত গোলটি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ব্রাইটনকে বেশ চাপে ফেলে ইউনাইটেড। ফার্নান্দেজ–এরিকসেনদের সামনে সুযোগ এসেছিল দলকে এগিয়ে দেওয়ার। কিন্ত ব্রাইটনের গোলরক্ষক এবং রক্ষণের দৃঢ়তায় নিরাশ হয়েই বিরতিতে যেতে হয় ‘রেড ডেভিল’দের।

বিরতির পরও ম্যাচ জমিয়ে তোলে দুই দল। ৫৬ মিনিটে ব্রাইটন লিড প্রায় নিয়েই নিয়েছিল। কিন্তু ইউনাইটেডকে অসাধারণ নৈপুণ্যে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন দি হেয়া। এরপর হেডে গোল করার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ব্রাইটনের ড্যানি ওয়েলবেক।

৬০ মিনিটে সলি মার্শকে হতাশ করেন দি হেয়া। ৪ মিনিট পর আন্তনিকে রুখে দেন ব্রাইটন গোলরক্ষক। এরপর দুই দলই রক্ষণ সামলানোয় মনোযোগ দেওয়ায় সুযোগও তৈরি হচ্ছিল কম। ৮৩ মিনিটে আবারও ইউনাইটেডের ত্রাতা দি হেয়া। এবার ডি–বক্সের বাইরে থেকে মার্শের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক। এরপর দুই দল চেষ্টা করেও নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোলের দেখা পায়নি। ম্যাচ চলে যায় অতিরিক্ত সময়ে।

নির্ধারিত সময়ে গোল পায়নি কোনো দল

৯২ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টারের শট বারের ওপর দিয়ে যায়। ২ মিনিট পর ফের গোলের সুযোগ নষ্ট করে ব্রাইটন। ৯৮ মিনিটে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সাবিতজারের হেড। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধও শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

১০৭ মিনিটে ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা দি হেয়া আবারও রক্ষা করেন দলকে। ৫ মিনিট পর কাসেমিরোর কাছ থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। তবে ইংলিশ তারকার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

১১৮ মিনিটে কাসেমিরোর শট ঠেকান ব্রাইটন গোলরক্ষক। একটু পর অল্পের জন্য গোল বঞ্চিত হয় ব্রাইটন। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও কোনো দল গোল না পেলে ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে। যেখানে বাজিমাত করে ইউনাইটেড। ৭-৬ গোলে জিতে চলে যায় ফাইনালে।