জানুয়ারির দলবদলে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় আমদানি–রপ্তানি করেছে ব্রাজিল
জানুয়ারির দলবদলে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় আমদানি–রপ্তানি করেছে ব্রাজিল

ব্রাজিল যখন খেলোয়াড় ‘আমদানি–রপ্তানি’তে সেরা

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্রাজিলের সময়টা তেমন ভালো যাচ্ছে না। কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে থেকে বিদায়ের পর থেকে ধুঁকছে ব্রাজিল জাতীয় দল। শুধু জাতীয় দলই নয়, দেশটির বয়সভিত্তিক দলও বেশ সংগ্রাম করছে। সর্বশেষ দুই অলিম্পিকের চ্যাম্পিয়নরা এবার বাছাইয়ের গণ্ডিই পেরোতে পারেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে আঞ্চলিক বাছাই থেকেই।

দেশের জার্সিতে ব্রাজিল ভালো করতে না পারলেও তাদের ক্লাব ফুটবলের অবস্থা কিন্তু মোটেই তেমন নয়। দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর কোপা লিবার্তাদোরেসের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স। এমনকি জানুয়ারির দলবদলের দিকে তাকালেও ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফুটবলের রমরমা অবস্থাটা ধরা পড়বে। ফিফার দেওয়া হিসাব অনুসারে, এবার খেলোয়াড় ‘আমদানি-রপ্তানি’তে সবার ওপরে ছিল ব্রাজিল।

ফিফার দেওয়া তথ্য বলছে, শীতকালীন দলবদলে বাইরে থেকে ব্রাজিলে খেলতে গেছেন ৪০৯ জন ফুটবলার। যা কিনা ফিফা সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এসব খেলোয়াড় কিনতে ব্রাজিলকে খরচ করতে হয়েছে ১২ কোটি ২৬ লাখ ডলার। খেলোয়াড়সংখ্যার দিক থেকে সবার ওপরে থাকলেও অর্থের অঙ্কে ব্রাজিলের অবস্থান পঞ্চম। খরচে সবার ওপরে আছে ফ্রান্স। ১১৪ খেলোয়াড় কিনতে দেশটির ক্লাবগুলো খরচ করেছে ২৯ কোটি ১৯ লাখ ডলার। যা কিনা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২১ শতাংশ বেশি।

সংখ্যায় ব্রাজিলের চেয়ে বেশ পিছিয়ে ২ নম্বরে পর্তুগাল। এবারের দলবদলে সেখানে নাম লিখিয়েছেন ২৫২ জন ফুটবলার। খেলোয়াড় কিনতে দেশটির ক্লাবগুলোর খরচ হয়েছে ৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার। খেলোয়াড় কেনায় তিনে আছে ব্রাজিলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা। ২২৬ জন খেলোয়াড় কিনতে দেশটির খরচ ৪ কোটি ১০ লাখ ডলার।

সংখ্যার দিক থেকে খেলোয়াড় কেনায় ইংল্যান্ডের অবস্থান চারে। জানুয়ারির দলবদলে তারা কিনেছে ১৭৪ জন ফুটবলার। যদিও খরচে ফ্রান্সের পরই অবস্থান ইংলিশদের। এ খাতে ১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার খরচ করেছে তারা। ইংল্যান্ডের পরের অবস্থান স্পেনের। ১৭১ জন খেলোয়াড় কিনতে ১৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলার খরচ করেছে তারা।

এবার আসা যাক খেলোয়াড় বিক্রির প্রসঙ্গে। এখানেও ব্রাজিলের অবস্থান সবার ওপরে। জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে ২৪৯ জন খেলোয়াড় বিক্রি করেছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো। ফুটবলার বিক্রি করে আয়েও সবার ওপরে আছে ক্লাবটি। এই খাত থেকে ব্রাজিলে এসেছে ২৫ কোটি ১২ লাখ ডলার। যা কিনা আগের বছরের দ্বিগুণের বেশি (৯ কোটি ৭৩ লাখ)। খেলোয়াড় বিক্রিতে সামান্যের জন্য ব্রাজিলকে টপকাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের দেশ দলবদলে খেলোয়াড় বিক্রি করেছে ২৪৮ জন।

আয়ে অবশ্য তাদের অবস্থান চারে। যেখানে ১০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার পেয়েছে তারা। সংখ্যার দিক থেকে খেলোয়াড় বিক্রিতে তিনে আছে ইংল্যান্ড। জানুয়ারির দলবদলে ইংল্যান্ড ছেড়েছেন ১৯৩ জন ফুটবলার। বিক্রি বাবদ উঠেছে ৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার। খেলোয়াড় বিক্রিতে চারে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৭১ জন ফুটবলারের জন্য ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারের বেশি পায়নি তারা।

সামগ্রিকভাবে জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৭১৬টি বৈশ্বিক দলবদল দেখা গেছে। যেখানে ৩ হাজার ৯৬৪টি দলবদল ছিল ফ্রি ট্রান্সফারের। যাতে কোনো অর্থ লাগেনি। অন্যদিকে ৭৫২টি দলবদল হয়েছে ট্রান্সফার ফির মাধ্যমে। এবারের দলবদলে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১৪৬ কোটি ডলার। যা কিনা ২০২৩ সালের জানুয়ারি চেয়ে ৮.২ শতাংশ কম। সেবার দলবদলে খরচ হয়েছিল ১৬০ কোটি ডলার।