রোনালদোর জন্মদিনে মেসি–রোনালদোর বেশে কেক নিয়ে এসেছিলেন দুই খর্বকায় ব্যক্তি
রোনালদোর জন্মদিনে মেসি–রোনালদোর বেশে কেক নিয়ে এসেছিলেন দুই খর্বকায় ব্যক্তি

গারনাচোর জন্মদিনে এ কোন মেসি-রোনালদো

ভবিষ্যৎ তারকা কিংবা সময়ের সেরা উদীয়মান ফুটবলারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা করলে আলেহান্দ্রো গারনাচো ওপরের দিকেই থাকবেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে অনুকরণ করা এই আর্জেন্টাইন উইঙ্গার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থেকে গত মৌসুম শেষ করেছেন। কদিন আগে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলেও অভিষেক হয়েছে।

মানে, গারনাচো ইউনাইটেডে রোনালদোকে পেয়েছিলেন সতীর্থ হিসেবে, এরপর আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে তাঁর সতীর্থ হয়েছেন লিওনেল মেসি। এই শতাব্দীর সেরা দুই ফুটবলারের সঙ্গে খেলতে পারা স্বাভাবিকভাবেই গারনাচোর জন্য স্বপ্ন পূরণের মতো ব্যাপার।

শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও আমুদে সময় কাটছে গারনাচোর। পরশুই কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছেন। কেটেছেন ১৯তম জন্মদিনের কেক। বিশেষ দিনে আনন্দঘন সন্ধ্যায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন মেসি–রোনালদোও!

অবাক হচ্ছেন? এই মেসি–রোনালদো আসল নন। আসলে মেসি–রোনালদোর বেশে এসেছিলেন দুই খর্বকায় ব্যক্তি, যাঁদের ‘বামন মেসি–রোনালদো’ নামে ডাকা হয়। ‘বামন মেসি’ আর্জেন্টিনা আর ‘বামন রোনালদো’ পর্তুগালের জার্সি পরেই এসেছিলেন। যদিও সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের দাবি, ‘মিনি মেসি’ যে জার্সি পরে এসেছিলেন, সেটা ছিল গারনাচোর ক্লাব ও জাতীয় দলের সতীর্থ লিসান্দ্রো মার্তিনেজের।

আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকা ও ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) লোগোর আদলে বানানো জন্মদিনের কেকটি সেই মেসি–রোনালদোই ধরে ছিলেন। তাঁদের পাশে রেখে ছবিও তুলেছেন গারনাচো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুবাদে সেই ছবি এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

গারনাচোর জন্মদিনের কেকের উপরিভাগে ফুটবলের নকশার ওপর লেখা ছিল ‘১৯’। যেটা দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর ১৯তম জন্মদিনকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু কেকের মাঝামাঝি অংশে লেখা ছিল ‘৭’। আর এই সংখ্যা দেখেই ভক্তদের মনের কৌতূহল দূর হয়েছে। কদিন আগে ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ইউনাইটেড কোচ এরিক টেন হাগের আস্থা অর্জন করে নেওয়ায় আগামী মৌসুমে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর আইকনিক ৭ নম্বর জার্সি পাচ্ছেন গারনাচো। জন্মদিনের কেকে ‘৭’ সংখ্যাটা দেখার পর ভক্তরা দুইয়ে–দুইয়ে চার মিলিয়ে ফেলেছেন।

২০২১ সালে মহানাটকীয় দলবদলে এক যুগ পর ইউনাইটেডে ফেরেন রোনালদো। এদিনসন কাভানি সদিচ্ছায় ২১ নম্বর জার্সি নিয়ে রোনালদোকে ফিরিয়ে দেন তাঁর চিরচেনা ‘নাম্বার সেভেন’। কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সফলতম ক্লাবে সিআরসেভেনের দ্বিতীয় অধ্যায় সুখকর হয়নি। এরিক টেন হাগ রেড ডেভিলদের কোচ হয়ে আসার পর দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গত বছর কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাব ও কোচকে নিয়ে করেন বিস্ফোরক সব মন্তব্য। এরপরই রোনালদোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ইউনাইটেড

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৭ নম্বর পরা ছবি দিয়েছেন গারনাচো

২০২২–২৩ মৌসুমের মাঝপথে রোনালদো ওল্ড ট্রাফোর্ড ছাড়ার পর থেকে ৭ নম্বর জার্সিটা কাউকে দেওয়া হয়নি। কারণ, প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম অনুযায়ী মৌসুম চলাকালীন কোনো খেলোয়াড় জার্সি নম্বর পরিবর্তন করতে পারেন না। মৌসুম শেষ হওয়ায় এখন আর আইকনিক জার্সি নম্বর পরে খেলতে বাধা নেই।

ইউনাইটেডের হয়ে এত দিন ৪৯ নম্বর জার্সি পরে খেলে আসা গারনাচো আগামী মৌসুমে তাঁর আদর্শ রোনালদোর জার্সিই পাচ্ছেন। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ৭ নম্বর পরা একটি ছবি দিয়েছেন তরুণ উইঙ্গার। এবার নিজেকে রোনালদোর মতো করেই মেলে ধরার পালা।

গত মৌসুমে ইউনাইটেডের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৪ ম্যাচে ৫ গোল ও ৪ অ্যাসিস্ট করেছেন গারনাচো। এই পরিসংখ্যান দেখে মনে হতে পারে, এ আর এমন কী! কিন্তু এই ৩৪ ম্যাচের ১৯টিতেই তাঁকে বদলি হিসেবে নামানো হয়েছে। পুরো ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে মাত্র ২ ম্যাচে। মাঝখানে চোটের কারণে ৭ ম্যাচে ছিলেন মাঠের বাইরে। এই সীমিত সুযোগের সদ্ব্যবহার গারনাচো যেভাবে করছেন, সেটাই রোনালদোর ৭ নম্বর জার্সি পাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। ইউনাইটেডের নতুন ‘নাম্বার সেভেন’ হওয়ায় আগামী মৌসুমে নিশ্চয়ই আরও বেশি সময় মাঠে থাকার সুযোগ পাবেন গারনাচো।