শেষ আট নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস
শেষ আট নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে শেষ আটে ডাচরা

প্রথমবারের মতো নারী বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় উঠে আসা দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্নটা ছিল আরও বড় কিছু করার। কিন্তু সেই স্বপ্নযাত্রাকে আর দীর্ঘায়িত করতে পারল না তারা। শক্তিশালী নেদারল্যান্ডসের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ মিনিটে পিছিয়ে যাওয়ার পর মাঠের লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য চেষ্টা করেছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। দারুণ কিছু সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু ডাচ গোলরক্ষক ডাফনে ফন ডোমসেলারের বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত গোলের দেখা পায়নি তারা। শেষ আটে নেদারল্যান্ডসের প্রতিপক্ষ স্পেন।

সিডনির আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে এদিন ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল নেদারল্যান্ডস। ম্যাচে তাদের শুরুটাও ছিল ফেবারিটের মতোই। থিতু হয়ে এগিয়ে যেতে সময় লাগে মাত্র ৯ মিনিট। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলকে হেডে জালের ঠিকানায় পাঠানোর চেষ্টা করেন লিয়েকে মার্টেনস। কিন্তু গোললাইন থেকে সেই বল ফিরিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে না পারায় ফিরতি বল কাছাকাছি জায়গা থেকে হেডে জালের ঠিকানায় পাঠান জিল রোর্ড। এটি টুর্নামেন্টে জিলের চতুর্থ গোল।

পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩ মিনিটে থেমবি কেগাথলানার শট ঠেকিয়ে ডাচদের রক্ষা করেন ডোমসেলার। দুই মিনিট পর আবার গোলের কাছাকাছি গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এবারও সাফল্য পায়নি তারা। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসও চেষ্টা করছিল ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে দারুণ কিছু আক্রমণও করে তারা। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় গোলটি আর পাওয়া হচ্ছিল না।

২৯ মিনিটে দক্ষিণ আফ্রিকান গোলরক্ষক কিলিয়ান সোয়ার্ট পা দিয়ে ঠেকিয়ে বল বাইরে না পাঠালে ব্যবধান প্রায় ২-০ করেই ফেলেছিল ডাচরা। অন্যদিকে ৩৬ মিনিটে দারুণ খেলতে থাকা থেমবি আরও একবার গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। এবারও ডোমসেলারের বিশ্বস্ত হাতকে ফাঁকি দিতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রাইকার। এদিন আক্ষরিক অর্থেই যেন থেমবির জন্য বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ডাচ গোলরক্ষক।

আক্রমণ ঠেকাচ্ছেন ডাচদের হয়ে দুর্দান্ত খেলা গোলরক্ষক ফন ডোমসেলার

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তাঁকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি থেমবি। একটু পর আবারও দুর্দান্ত সেভে সেই থেমবিকে ঠেকিয়ে দেন ডোমসেলার। প্রথমার্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার এই স্ট্রাইকারকে অন্তত ৪ বার নিরাশ করেছেন ডাচ গোলরক্ষক। সমতা ফেরাতে না পারার হতাশা নিয়েই বিরতিতে যেতে হয় দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

বিরতির পর দুই দলই আক্রমণে গিয়ে গোল আদায়ের চেষ্টা করে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও ভুল করেনি নেদারল্যান্ডস। ৫৪ মিনিটে নেদারল্যান্ডস দক্ষিণ আফ্রিকার জালে বল পাঠালেও গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। ৬৮ মিনিটে ঠিকই দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেয় ডাচরা। অবশ্য এই গোলে ডাচদের কৃতিত্বের চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার গোলরক্ষক সোয়ার্টের দায়টাই ছিল বেশি। হাতে আসা বলকে নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন এই গোলরক্ষক। আর তাঁকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ালে নেদারল্যান্ডস এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

প্রথমার্ধের মতো এই অর্ধেও গোলবারের নিচে ডাচদের দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে ছিলেন ডোমসেলার। এই অর্ধেও একাধিকবার দক্ষিণ আফ্রিকার আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন এই গোলরক্ষক। এর মধ্যে ৮০ মিনিটে আবারও গোল পায় নেদারল্যান্ডস। কিন্তু এবারও সেই গোল বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে। এরপর শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ২-০ গোলের জয় নিয়েই শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করে নেদারল্যান্ডস।

শেষ ষোলোয় থেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের স্বপ্নযাত্রা

আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ পর্বে দাপটের সঙ্গে খেলে শেষ ষোলোয় এসেছে সুইডেন। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সুইডিশদের। সেটিই এখন পর্যন্ত নারী বিশ্বকাপে সুইডেনের সর্বোচ্চ অর্জন। অন্যদিকে ৪ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল দল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটার ম্যাচটিতে রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের অপেক্ষা করতেই পারেন ফুটবলপ্রেমীরা।