গোললাইন থেকে

আর্জেন্টিনার ওপরই বাজি রাখছি

বৃহস্পতিবার রাতে স্পেনের বিপক্ষে জাপানের অমন জয় দেখে বিশ্বকাপ নিয়ে কিছু অনুমান করতে ভয়ই লাগছে। কখন কোন দল কার হাতে ‘খুন’ হবে, বলা কঠিন। ভাবতেই পারিনি, স্পেনের মতো দল জাপানের কাছে হারবে। জাপান এর আগে জার্মানিকে সর্বনাশের পথে ঠেলে দিয়েছে, যেখান থেকে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা আর বেরোতে পারেনি।

সৌদি আরবও একইভাবে আর্জেন্টিনার পথে কাঁটা বিছিয়েছিল। কিন্তু আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত ‘জার্মানি’ হয়নি। ছন্দ ফিরে পাওয়া আর্জেন্টিনা আজ শেষ ষোলোতেও স্বাচ্ছন্দ্যে বেরিয়ে যাবে মনে হচ্ছে। এতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথাটা বলার কারণ, দুই দলের শক্তির ব্যবধান অনেক।

অস্ট্রেলিয়া এই প্রথম বিশ্বকাপে টানা দুটি জয় পেয়েছে, ঠিক আছে। গ্রাহাম আরনল্ডের ছেলেরা বেশ উজ্জীবিত, সেটাও সত্য। মাঠে ওদের অ্যাথলেটিসিজম ভালো। কিন্তু ওরা বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় ম্যাচ জিতে যাবে, এতটা ভাবছি না। তা ছাড়া টেকনিক্যালি অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আর্জেন্টিনা ঢের এগিয়ে।

আর্জেন্টিনার ওপরই তাই বাজি রাখছি। সেটা এমন নয় যে নামের কারণে। আসলে আর্জেন্টিনা গত ম্যাচে ‘আর্জেন্টিনার’ মতোই খেলেছে। পোল্যান্ডকে যেভাবে চেপে ধরে জয় তুলে নিয়েছে, দুর্দান্ত শব্দটাও কম হয়। নীল-সাদা জার্সিধারীরা সব সংশয় উড়িয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এসেছে। সেই গতিটা ধরে রাখতে পারলে মেসিদের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া কোনো বাধা হবে না বলেই আমার বিশ্বাস।

আর্জেন্টিনার গোটা দলই ভালো খেলেছে গত ম্যাচে। তবে আক্রমণভাগে আনহেল দি মারিয়ার কথা আলাদাভাবে বলব। বিশ্বকাপ শুরুর আগে আমার সংশয় হচ্ছিল তাকে নিয়ে। কেমন খেলবে ঠিক নিশ্চিত ছিলাম না। তবে বিশ্বকাপের মঞ্চে মনে হচ্ছে দি মারিয়া যৌবন ফিরে পাচ্ছে। ওর পায়ের কাজ আগে থেকেই ভালো। কিন্তু ৩৫ ছুঁই ছুঁই বয়সেও তা এতটুকু কমেনি। তবে জানতে পারলাম দি মারিয়ার খেলা আজ অনিশ্চিত। সে যা-ই হোক, লিওনেল স্কালোনির দল তবু বেরিয়ে যাবে। তাদের দুই সাইড ব্যাক তেড়েফুঁড়ে ওপরে উঠে খেলছে, পরিপূর্ণ উইঙ্গারের ভূমিকা পালন করছে। এই খেলোয়াড়েরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে আর্জেন্টিনাকে শেষ আটে দেখছি।

নেদারল্যান্ডস-যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচটা সমানে সমান হতে পারে। এই ম্যাচের গভীরতা থাকবে অনেক, জমে উঠবে বলেই আমার বিশ্বাস। যুক্তরাষ্ট্র এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে তরুণ দল। যারা ফুরফুরে মেজাজে খেলছে।

খেলাটা উপভোগ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনভিজ্ঞ ছেলেদের ভিড়ে ‘নাম্বার টেন’ ক্রিস্টিয়ান পুলিসিককে বেশ ভালো লাগল। ওরা খেলাটা নিচ থেকে অনেক পাস খেলে তৈরি করে না। বল পেলে সামনে সরাসরি পাস খেলে বেশি। আর এভাবেই তৈরি করে গোলের সুযোগ।

কিন্তু মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা নেদারল্যান্ডস। নিজেদের শক্তি ও ফুটবল ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মেম্ফিস ডিপাইরা মাঠে দিতে পারলে নেদারল্যান্ডস সুযোগ তৈরি করবে বেশি।

ওরা বড় মঞ্চের টিম। বড় আশা নিয়েই এসেছে কাতারে। তবে আজ আর্জেন্টিনাকে যতটা এগিয়ে রাখছি, নেদারল্যান্ডসকে ততটা নয়। যুক্তরাষ্ট্র ‘জাপান’ হয়ে উঠলে অবাক হব না। তাই জোর দিয়ে বলতে পারছি না নেদারল্যান্ডস জিতবেই।