ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বাজারে আসেনি রাসমুস হইলুন্দের জার্সি
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বাজারে আসেনি রাসমুস হইলুন্দের জার্সি

ড্যানিশ ফন্ট না থাকায় হইলুন্দের জার্সি বাজারে ছাড়তে দেরি

উচ্চতা সাড়ে ৬ ফুট ছুঁই ছুঁই, গতি প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ানোর মতো, গোল করা ও করানোর সামর্থ্য—আর্লিং হলান্ডের সঙ্গে টেক্কা দিতে তাঁর মতোই  স্ট্রাইকার খুঁজছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেটাও হলান্ডের মতোই স্ক্যান্ডিনেভিয়ান কাউকে।

ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের হাবভাবে বোঝা যায়, পছন্দের সেই খেলোয়াড়কে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেয়েছে তারা। তিনি রাসমুস হইলুন্দ। ২০ বছর বয়সী এই সেন্টার ফরোয়ার্ডকে ইতালিয়ান ক্লাব আতালান্তা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে রেড ডেভিলরা। হলান্ডের মতো হইলুন্দও একজন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান। ম্যানচেস্টার সিটির হলান্ড একজন নরওয়েজিয়ান আর তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হইলুন্দ হলেন ড্যানিশ।

সদ্য সমাপ্ত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ইউনাইটেড যে কজন খেলোয়াড় কিনেছে, তাঁদের মধ্যে এই হইলুন্দই সবচেয়ে দামি (৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো)। আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাওয়ার আগে রেড ডেভিলদের হয়ে হইলুন্দের অভিষেকও হয়েছে। অথচ এত দাম দিয়ে খেলোয়াড় কিনেও তাঁর জার্সি এখনো পর্যন্ত বাজারে আনতে পারছে না রেড ডেভিলরা। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইউনাইটেডের মেগাস্টোরে হইলুন্দের জার্সি কিনতে এসে তাই ফিরে যেতে হচ্ছে সমর্থকদের।

এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ইউনাইটেডের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হইলুন্দ

কেন হইলুন্দের জার্সি বিক্রি শুরু করতে দেরি করছে ইউনাইটেড? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’ কারণ হিসেবে সামনে এনেছে দুটি বিষয়। প্রথমত, জার্সি নম্বর বাছাইয়ে দেরি এবং দ্বিতীয়ত, ড্যানিশ বর্ণমালা ফন্ট পেতে দেরি।

জাতীয় দল ডেনমার্কে ১১ ও ২১ নম্বর জার্সি পরে খেললেও ইউনাইটেড হইলুন্দকে ১৭ নম্বর জার্সি দিতে চেয়েছিল। ১৭ নম্বর জার্সি গায়ে আতালান্তাতেও তিনি খেলেছেন। তবে ইউনাইটেডে এই জার্সি পরতেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্রেদ; যিনি এবারের দলবদলেই তুর্কি ক্লাব ফেনেরবাচেতে যোগ দিয়েছেন। তবে ওল্ড ট্রাফোর্ড ছাড়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশ সময় লেগেছে ফ্রেদের। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, একজন খেলোয়াড় তাঁর দলবদলের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করা পর্যন্ত তাঁর নম্বরের জার্সি অন্য খেলোয়াড়কে দেওয়া যাবে না। সে কারণে ১৭ নম্বর জার্সিটা তখন হইলুন্দকে দিতে পারেনি ইউনাইটেড।

ফ্রেদ চলে যাওয়ার পর অবশ্য সুযোগ ছিল ১৭ নম্বর জার্সি পাওয়ার। তবে ১৭ নয়; হইলুন্দকে শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ১১ নম্বর জার্সি। যেটা পরে খেলতেন ম্যাসন গ্রিনউড। সম্প্রতি গ্রিনউডও ইউনাইটেড ছেড়েছেন। ধারে খেলতে গেছেন স্প্যানিশ ক্লাব হেতাফেতে।

কিন্তু এতে শুধু নম্বর-সংক্রান্ত জটিলতা কেটেছে; নাম বসানো বাকিই ছিল। ইংরেজি বর্ণমালায় হইলুন্দ বানান এভাবে (Hojlund) লিখে বাজারে জার্সি ছেড়ে দিতে পারত ইউনাইটেডের বিপণন বিভাগ। কিন্তু খোদ হইলুন্দের চাওয়া জার্সিতে তাঁর নামের বানান মাতৃভাষা ড্যানিশ বর্ণমালায় এভাবে (Højlund) লেখা হোক। তাতে জার্সি বিক্রির প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হয়। কারণ, ইউনাইটেডের প্রিন্টারে ড্যানিশ ফন্ট ছিল না।

হইলুন্দের চাওয়া জার্সিতে তাঁর নামের বানান ড্যানিশ বর্ণমালায় লেখা হোক

ক্লাবটির প্রিন্টিংয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ড্যানিশ ফন্ট পেয়েছে গত বৃহস্পতিবার। সেটা জার্সিতে বসিয়েও ফেলেছেন তাঁরা। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই হইলুন্দের জার্সি বিক্রি শুরু হবে।

ইউরো বাছাইয়ের ম্যাচ খেলতে গত এক সপ্তাহ ডেনমার্ক দলের সঙ্গে ছিলেন হইলুন্দ। এ মাসে বাছাইয়ে খেলা দুটি ম্যাচই জিতেছে ড্যানিশরা। সান মারিনো ও ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে বদলি হিসেবে খেলেছেন হইলুন্দ। সদ্য চোট কাটিয়ে ফেরার কারণে তাঁকে শুরু থেকে খেলানোর ঝুঁকি নেননি ডেনমার্ক কোচ ক্যাসপার হিউলমান্দ।

জাতীয় দলের দায়িত্ব শেষ হওয়ায় আজকালের মধ্যেই ম্যানচেস্টারে ফেরার কথা হইলুন্দের। তিনি ফিরলে তাঁর সই করা জার্সি আরও বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে ইউনাইটেড।