সোলেমান দিয়াবাতেকে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাফুফে। গতকাল প্রথম আলোকে তা নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন।
তবে মোহামেডানের মালির এই তারকা স্ট্রাইকার আজ জানিয়েছেন, তিনি এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মোহামেডান ক্লাব প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দিয়াবাতে বলেছেন, ‘আমি আসলে এখন ফেডারেশন কাপ ফাইনাল নিয়েই ভাবছি। আমার সব মনোযোগ সেদিকেই। আমি এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে চাই না।’
কিন্তু যে খেলোয়াড়কে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলানোর ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে, তিনি সে ব্যাপারে কিছুই বলবেন না? বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার প্রসঙ্গে যেতেই দিয়াবাতে হেসে বললেন, ‘আসলে এই প্রশ্নের উত্তর আমি অনেকবার দিয়েছি। তবে এখন যে প্রক্রিয়ার কথা আপনারা বলছেন, সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। বাংলাদেশের হয়ে খেলার প্রসঙ্গটি প্রথম ওঠে গত বছর ফেডারেশন কাপ ফাইনালের পর। তখন বাফুফে থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আমাকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। আমি আর নকীব ভাই (মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব) একসঙ্গে বাফুফেতে গিয়ে কথা বলেছিলাম। ওই পর্যন্তই। আজকের তারিখ পর্যন্ত বাফুফে থেকে আর কিছু আমাকে জানানো হয়নি।’
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অবশ্য গতকাল বলেছিলেন, দিয়াবাতের ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে, মালির এই ফুটবলার বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ জানিয়েছেন বাফুফের কাছে। নতুন করে তাঁকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে তাঁকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হবে। দিয়াবাতেকে বাংলাদেশে খেলানোর প্রক্রিয়া খুব সহজও নয়। এ মুহূর্তে ব্যাপারটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছে। ইমিগ্রেশন বিভাগে খোঁজখবর করা হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে দিয়াবাতের বাংলাদেশে অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
দিয়াবাতে পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন। এই পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতিবছরে তিনি কমপক্ষে ১৮০ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করেছিলেন কি না, এ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর তাঁর নাগরিকত্বের ব্যাপার আছে, পাসপোর্টের ব্যাপার আছে। দিয়াবাতেকে মালির নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে কি না, সে প্রক্রিয়াও আছে।
দিয়াবাতে অবশ্য এত কিছু বোঝেন না। তাঁর কথা, ‘দেখুন কী প্রক্রিয়ায় আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলব, আমি জানি না, এটা আমার বিষয় নয়। এটা বাফুফের দায়িত্ব। তারা আমাকে বাংলাদেশের হয়ে খেলার আমন্ত্রণ দিয়েছে, বাফুফে চায় আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলি, এটাও ঠিক আমিও খেলতে চাই। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না পারলে আমার সবকিছু শেষ হয়ে যাবে না। বাফুফে যদি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে, তাহলে আমার খেলতে কোনো সমস্যা নেই।’
মোহামেডান ক্লাবের লনে দাঁড়িয়ে একফাঁকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথাটাও জানালেন দিয়াবাতে, ‘বাংলাদেশে খেলতে এসে দেখলাম দেশটা মালির মতোই। একই ধরনের আবহাওয়া। ওখানেও গরম, এখানেও গরম। এ দেশের মানুষকে পছন্দ হলো। মানুষ আমাকে ভালোবাসতে শুরু করল। আমিও তাদের ভালোবাসি।’