ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ

ফাইনালে ভারতের কাছে হার বাংলাদেশের

পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দল। ২ গোলে পিছিয়ে পড়েও ২–২ করে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে জিতে জায়গা করে নেয় ফাইনালে। মহানাটকীয় সেই ম্যাচের পুনরাবৃত্তি অবশ্য আজ ফাইনালে করতে পারেনি কোচ সাইফুল বারীর দল। থিম্পুতে সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের কাছে ২–০ গোলে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

টাইব্রেকারে জয়কে যেহেতু কাগজ–কলমে জয় ধরা হয় না, এবার কোনো ম্যাচ না জিতেই সাফের বয়সভিত্তিক আসর শেষ করল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৭ দলকে ফরোয়ার্ড লাইনের ব্যর্থতা ভুগিয়েছে পুরো টুর্নামেন্টেই। গোলের সুযোগ তৈরি কিংবা গোল করায় দুর্বলতা ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে হারেরও বড় কারণ।

ফাইনালে কোচ সাইফুল বারীর কৌশল ছিল প্রতি–আক্রমণনির্ভর; কিন্তু ভারতীয় দলের কৌশলের কাছে সেই কৌশল বারবার ধাক্কা খেয়েছে। ভারতীয় দল মধ্য মাঠে বাংলাদেশকে সেভাবে জায়গাই দেয়নি। বাংলাদেশের মিডফিল্ডাররাও জায়গা বের করতে পারেনি। উল্টো দুই উইং দিয়ে ভারত বারবার ভেঙেছে বাংলাদেশের রক্ষণ।
প্রথমার্ধের ১৯ মিনিটে লেইরেনজাম সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ভারত তখনই এগিয়ে যায়। মোহাম্মদ কাইফ ও সুমিত শর্মা হুমকি হয়ে ছিলেন পুরো ম্যাচেই।

৩০ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি কিক পেয়েছিল ভারত, লেভিস জাংমিনলুনের দারুণ ফ্রি কিকটি বাংলাদেশের বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৩৫ মিনিটে মোহাম্মদ আরবাশ আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। ভারতের এত সুযোগের বিপরীতে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে সুযোগ পেয়েছিল মাত্র একটি। ম্যাচের ১৪তম মিনিটে মোর্শেদ আলীর শট ঠেকিয়ে দেন ভারতের গোলকিপার সুরুজ সিং আহেইবাম।

দ্বিতীয়ার্ধে ভারত আরও চড়াও হয় বাংলাদেশের ওপর। এই অর্ধেও নিচ থেকে বল নিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা হয়েছে; কিন্তু সেটি বাধাপ্রাপ্ত হয় ভারতের মিডফিল্ডারদের সামনে। বল পায়ে রাখতে না পারার ব্যর্থতায় আক্রমণগুলোও দানা বাঁধেনি।

বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচে বল দখলের একটি মুহূর্ত

অন্যদিকে ভারতীয় ফরোয়ার্ডরা বারবার জায়গা পেয়েছেন, তৈরি করেছেন গোলের সুযোগ। ৫৮ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে গোল করে ভারতকে এগিয়ে দেন মোহাম্মদ কাইফ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও সেটপিসে গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। ফাইনালেও সেট–পিস দুর্বলতা পিছু ছাড়েনি তাদের।

ভারত এগিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ আর তাদের চেপে ধরতে পারেনি। ৬১ মিনিটে সেমিফাইনালের জোড়া গোল করা মোহাম্মদ মানিককে নামিয়েও আক্রমণের ধার বাড়ানো যায়নি। ৬৭ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় জয় আহমেদ আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। প্রতিটি সুযোগেই বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের গোলে শট নেওয়ার দুর্বলতা প্রকটভাবে চোখে পড়েছে।

যোগ করা সময় আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মোহাম্মদ মানিক। তাঁর দুর্বল শট ঠেকাতে কোনো সমস্যাই হয়নি ভারতের গোলকিপার সুরুজ সিংয়ের। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে ভারত দ্বিতীয় গোল পায়। মোহাম্মদ আরবাশ বক্সের ঠিক মাথা থেকে বাংলাদেশের গোলকিপার নাহিদুল ইসলামকে পরাস্ত করেন। অনূর্ধ্ব–১৭ সাফে গত আসরেও শিরোপা জিতেছিল ভারত।