ব্রাজিল, বলিভিয়া আর উরুগুয়ে—দেশ তিনটির বড় মিল, সব কটিরই অবস্থান দক্ষিণ আমেরিকায়। ক্লাব ফুটবলের সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান বলছে, সবচেয়ে বেশি ফাউল, হলুদ কার্ড আর লাল কার্ডের ঘটনাও ঘটে এই তিন দেশের লিগে। তবে আয়োজনে, অর্থে আর জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে যে পাঁচ লিগ, সেখানে ১ নম্বরে স্পেনের লা লিগা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গত বছর বিশ্বজুড়ে হওয়া ৭১টি লিগের তথ্য বিশ্লেষণ করে ফাউল, কার্ডসংখ্যা এবং যোগ করা সময়ের হিসাব তুলে ধরেছে সিআইইএস। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে ম্যাচপ্রতি ৫টি হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে লা লিগায়। এই লিগে গড়ে ফাউল ছিল ২৫.৬৫টি। সব মিলিয়ে রেফারিদের লাল কার্ড দেখাতে হয়েছে প্রতি ম্যাচে গড়ে ০.৩১টি। হলুদ ও লাল কার্ড এবং ফাউলের সংখ্যায় পাঁচ লিগের মধ্যে লা লিগাই সবার ওপরে।
বেশি বেশি শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনার জেরে যোগ করা সময়ও বেড়েছে লা লিগায়। স্পেনের শীর্ষ লিগটিতে হিসাবে নেওয়া ৪১১ ম্যাচে গড় যোগ করা সময় ছিল ৯ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড। অর্থাৎ লা লিগায় প্রতিটি ম্যাচের দৈর্ঘ্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ মিনিটে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে ফাউলের ঘটনায় দ্বিতীয় স্থানে লিগ আঁ। ফ্রান্সের লিগটিতে ম্যাচপ্রতি ফাউল হয়েছে ২৪.৯০টি। তবে ফাউলের তুলনায় হলুদ কার্ড কমই—৩.৬৫টি (পাঁচ লিগের মধ্যে সর্বনিম্ন)। এই লিগে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে গড়ে ০.২৪টি।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা ইতালির সিরি ‘আ’-তে হলুদ কার্ডের সংখ্যা গড়ে ৪.৬২, লাল কার্ড ০.২২টি আর ফাউল ২৩.৯৩টি। এই লিগে গড়ে যোগ করা সময় ছিল ৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। জার্মানির বুন্দেসলিগায় অবশ্য যোগ করা সময় আরও বেশি—প্রতি ম্যাচে ৯ মিনিট ১২ সেকেন্ড। এখানে হলুদ কার্ডের গড় ৪.৪২, লাল কার্ডের ০.১৬ আর ফাউল ২৩.০৮।
শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে ফাউল আর লাল কার্ড সবচেয়ে কম প্রিমিয়ার লিগে। ইংল্যান্ডের লিগটিতে গড়ে ২২.১২ ফাউলের সঙ্গে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে ০.১৫টি। তবে একটা জায়গায় প্রিমিয়ার লিগ বেশ ওপরেই। এখানে প্রতি ম্যাচে যোগ করা সময় দেওয়া হয়েছে ১১ মিনিট। যার অর্থ, প্রিমিয়ার লিগে প্রতিটি ম্যাচ ছিল ১০১ মিনিট ব্যাপ্তির।
মোটের ওপর ৭১টি লিগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড করে যোগ করা সময় ছিল কাতারের স্টার লিগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড সময় যোগ হওয়া লিগটিও মধ্যপ্রাচ্যের—সৌদি আরবের প্রো লিগ। এদিক থেকে সবচেয়ে কম ৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল স্লোভাকিয়ার সুপার লিগে।
ফাউলের দিক থেকে সবার ওপরের নামটি ব্রাজিলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা সিরি ‘বি’র। এখানে প্রতি ম্যাচে ফাউল হয়েছে ৩০.৩৪টি। লাল কার্ডের সংখ্যায় ১ নম্বরে বলিভিয়ার লিগ। দেশটির প্রিমেরা ডিভিশনে প্রতি ম্যাচে লাল কার্ডের হার ০.৬১টি। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ ম্যাচে কমপক্ষে তিনটি লাল কার্ড। হলুদ কার্ডে এগিয়ে আবার উরুগুয়ে। ক্যাম্পেনাতো উরুগায়ো লিগে ম্যাচ প্রতি ৬.০৭টি হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছিল।
সর্বোচ্চ বিভাগে লাতিন আমেরিকার দেশ হলেও সর্বনিম্নে আবার এশিয়ার উপস্থিতি বেশি। সবচেয়ে কম হলুদ ও লাল কার্ড দেখা গেছে জাপানের জে-টু লিগে। হলুদ ২.৭৩টি আর লাল ০.১০। জাপানের শীর্ষ স্তর জে-ওয়ান লিগে হলুদ কার্ডের গড় ২.৮২, লাল কার্ডের ০.১৩। যে ৭১টি লিগের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, জাপান ছাড়া আর কোনো দেশের লিগে গড় হলুদ কার্ডের সংখ্যা ৩–এর নিচে নেই। কার্ডের সংখ্যায় মনে হতে পারে, জাপানে ফাউল হয়তো কম হয়। কিন্তু চিত্রটা তেমন নয়। জে-টু লিগে ফাউল হয়েছে ২৩.০৮টি করে, এর চেয়ে কম ফাউলের লিগ আছে আরও ১৬টি।