ব্রাজিলের ফুটবলপ্রেমীদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন মারিও জাগালো। কিংবদন্তি এই ফুটবলার ও কোচ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বয়স নব্বইয়ের কোটা ছুয়ে ফেলায় জাগালোকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন অনেকেই। কাল হাসপাতাল থেকে দেওয়া সুসংবাদে সে দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও লাঘব হবে। ৯০ বছর বয়সী জাগালোর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রিও ডি জেনিরোর বারা ডি’অর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জাগালোকে। কাল হাসপাতালটির পক্ষ থেকে বলা হয় জাগালোর শারীরিক অবস্থার ‘উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসক দলের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।’
এর আগে গত ২৭ জুলাই অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তিকে।
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের তালিকাটা খুব ছোট। সবার আগে এই কীর্তি গড়া ব্যক্তিটি মারিও জাগালো। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও দিদিয়ের দেশম এরপর তাঁকে ধরে ফেলেন। জাগালো তবু একটি জায়গায় অনন্য—খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন একাধিকবার!
আগামী মাসে ৯১ বছরে পা রাখতে যাওয়া জাগালো ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ‘বুড়ো নেকড়ে’ নামে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বয়সেও তিনি বেশ সরব। প্রায়ই নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের বিভিন্ন ছবি ও স্যুভেনির ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন।
ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীসংখ্যা এক লাখের বেশি। ইনসাইড ফরোয়ার্ড ও বাঁ প্রান্তের উইঙ্গার হিসেবে ব্রাজিল দলে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত খেলেছেন। পেলের সঙ্গে জিতেছেন ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপ। এরপর ১৯৭০ সালে কোচ হিসেবে জেতেন বিশ্বকাপ।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে সহকারী কোচ হিসেবেও জিতে নেন বিশ্বকাপ। চার বছর পর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে ফাইনালে উঠেও শিরোপার দেখা পাননি। ২০০৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের টেকনিক্যাল সহকারীর ভূমিকায় ছিলেন জাগালো।
জাগালো ছাড়া খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন শুধু জার্মান কিংবদন্তি বেকেনবাওয়ার (১৯৭৪ ও ১৯৯০) ও ফ্রান্সের বর্তমান কোচ দেশম (১৯৯৮ ও ২০১৮)। বলার অপেক্ষা রাখে না, ১৯৭০ বিশ্বকাপই জাগালোর কোচিং ক্যারিয়ারে সেরা মুহূর্ত। তোস্তাও, পেলে, জর্জিনহো, রিভেলিনো, গারসনদের নিয়ে সে বিশ্বকাপে চোখধাঁধানো ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল।
জাগালো অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছিলেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলে, ‘আমার বন্ধু জাগালো, জানি তুমি কঠিন সময় পার করছ। কিন্তু এটা জেনে রাখো, তোমার দ্রুত সুস্থতার জন্য আমি প্রার্থনা করছি।’