চোটের কারণে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো না থাকায় এই ম্যাচ আবেদন হারিয়েছিল আগেই। কেবল লিওনেল মেসির দিকেই চোখ ছিল সবার। কিন্তু সেই মেসিও ছিলেন না একাদশে। মেসি-রোনালদো না থাকলেও আল নাসর-ইন্টার মায়ামির ম্যাচে গোলের কোনো অভাব ছিল না। যদিও সব গোলই ছিল একপাক্ষিক।
মায়ামির জালে একে একে ছয় গোল দিয়েছে আল নাসর। এরপর ম্যাচের ৮৩ মিনিটে মেসি নামলেন বটে, ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। আধ ডজন গোল হজম করে ম্যাচ থেকে অনেক দূরে ছিটকে গেছে মেসি-সুয়ারেজদের মায়ামি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হেরেছে ৬–০ ব্যবধানে।
কদিন আগেই সৌদি লিগকে ফরাসি লিগের চেয়ে এগিয়ে রেখে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন রোনালদো। অনেকেই তখন বলেছিলেন, মেসি খেলে গেছেন বলেই রোনালদো এমন কথা বলেছেন। তাই আজ মেসিদের সামনে সুযোগ ছিল অন্য ভাবে রোনালদোর এ দাবির জবাব দেওয়ার এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার। তবে মাঠের লড়াইয়ে আল নাসরের সামনে দাঁড়াতেই পারল না মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দলটি।
এমন নয় যে ম্যাচে বল দখলে দুই দলের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য ছিল। আল নাসরের ৫৩ শতাংশের বিপরীতে মায়ামির দখলে বল ছিল ৪৭ শতাংশ। তবে আল নাসর বড় পার্থক্য গড়েছে সুযোগ তৈরিতে। ২১টি শট নিয়ে ১৪টি লক্ষ্যে রাখে তারা। অন্য দিকে ইন্টার মিয়ামি ১২ শটের মাত্র ৩টিই রাখে লক্ষ্যে। আক্রমণের এই দৃঢ়তা শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।
রিয়াদের কিংডম অ্যারেনায় রোনালদো না থাকলেও ম্যাচের মাত্র ৩ মিনিটে ‘সিআর সেভেন’র পর্তুগিজ সতীর্থ ওতাবিওর গোলে এগিয়ে যায় আল নাসর। এরপর ১২ মিনিটের মধ্যে সেই লিডকে ৩-০ করে রিয়াদের ক্লাবটি। ১০ মিনিটে তালিসকা এবং ১২ মিনিটে গোল করেন আইমেরিক লাপোর্তা। অর্থাৎ ম্যাচের সময় ১৫ মিনিট পেরোনোর আগেই ইন্টার মায়ামি পৌঁছে যায় খাদের কিনারে। যদিও প্রথমার্ধে লিডটাকে আর বাড়তে দেয়নি তারা।
কিন্তু বিরতির পর ফের দেখা মেলে আল নাসরের রুদ্রমূর্তির । ৫১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চর্তুথ গোলটি করেন তালিসকা। পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন এ ব্রাজিলিয়ান। ৬৮ মিনিটে মোহাম্মদ মারানও গোল করলে ব্যবধান হয়ে যায় ৫-০। আর ৭৩ মিনিটে অর্ধ ডজনের শেষ গোলটি আসে তালিসকার কাছ থেকে। আর এ গোলের মধ্য দিয়ে নিজের হ্যাটট্রিকও পূরণ করেন তালিসকা। আল নাসরের গোলবন্যার সঙ্গে এদিন দেখা মিলেছে উত্তাপের। ট্যাকেল করা নিয়ে দুদল ম্যাচের একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। যা প্রীতি ম্যাচকে বেশ অপ্রীতিকরও করে তুলেছিল।
সব মিলিয়ে ইন্টার মায়ামি একের পর এক ভুলে যাওয়ার মতোই প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে। যেখানে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে ৩টিতেই হেরেছে এবং অন্যটিতে ড্র করেছে। প্রথম ম্যাচে এল সালভাদরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে তারা। এরপর এফসি ডালাসের কাছে হারে ১-০ গোলে।
সৌদি আরবে এসে আল হিলালের বিপক্ষে মেসিরা হারেন ৪-৩ গোলে। আর আল নাসর তো আজ উড়িয়েই দিল মায়ামিকে। মেসিরা হংকংয়ে গিয়ে হংকং একাদশের বিপক্ষে পরের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ৪ ফেব্রুয়ারি। বিপরীতে মেসিদের হারানোর সুখস্মৃতি নিয়ে আল নাসর শীতকালীন বিরতির পর সৌদি প্রো লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলবে শীর্ষে থাকা আল হিলালের বিপক্ষে।