ডিয়েগো ম্যারাডোনা থাকলে কী করতেন!
শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ, রোমাঞ্চের নানা অলিগলি পেরিয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ম্যারাডোনা বেঁচে থাকলে নিশ্চিতভাবে খবরের শিরোনাম হতেন। হয়তো গ্যালারিতে অভিনব কোনো উদ্যাপন করে কিংবা ম্যাচ শেষে মেসিদের অনুপ্রেরণাদায়ক কোনো বার্তা দিয়ে। ম্যারাডোনা নেই—এ কথা সবার জন্য সত্য, তবে মেসিদের জন্য বোধ হয় আংশিক সত্য। মেসি বিশ্বাস করেন, ফুটবল জাদুকর এখনো তাঁদের সঙ্গেই আছেন, অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন।
কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে নেদারল্যান্ডসকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে আর্জেন্টিনা উঠে গেছে সেমিফাইনালে। এই ম্যাচের পর আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেছেন, ‘ডিয়েগো আমাদের স্বর্গ থেকে দেখছেন,আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন। বিশ্বকাপের শেষ পর্যন্তও এটা একই রকম থাকবে।’
শুধু কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাচের পর নয়, কাতার বিশ্বকাপে আগেও মেসি স্মরণ করেছেন ম্যারাডোনাকে। তিনি বলেছিলেন, ‘ম্যারাডোনা সব সময় আর্জেন্টিনাকে ভালোবাসতেন। সব সময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন, এখনো আমাদের সঙ্গেই আছেন।’
আর্জেন্টিনাকে শেষবার বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা, ১৯৮৬ সালে। ৩৬ বছর পর যে দায়িত্বটা আরও একবার মেসির কাঁধে। মেসি সে দায়িত্ব এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই পালন করছেন। এই বিশ্বকাপে গোল করছেন ৪টি।
আর্জেন্টিনার হয়ে যৌথভাবে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্ততার সঙ্গে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন এই খুদে জাদুকর। মেসির বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের কঠিন পরীক্ষাটা দিতে হয়েছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। সে পরীক্ষায় উতরে গেছে আর্জেন্টিনা। ৮২ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পরও শেষ মুহূর্তে ২ গোল হজম করায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও দুই দল সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের নায়ক গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ প্রথম দুটি শট ঠেকিয়ে দলের কাজটা সহজ করে দেন। আর্জেন্টিনা গোল পায় প্রথম তিন শটেই। কিন্তু এনজো ফার্নান্দেস চতুর্থ শটটা বাইরে মারায় আবার জমে ওঠে টাইব্রেকার। ডাচরা চতুর্থ ও পঞ্চম দুটি শটেই গোল করে। ফলে লাওতারো মার্তিনেজের নেওয়া পঞ্চম শটটা হয়ে ওঠে ম্যাচের ভাগ্যনির্ধারক। তবে এবার আর ভুল করেননি মার্তিনেজ।
মার্তিনেজের শট জালে জড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন আর্জেন্টাইনরা। মেসির ভাষায়, ‘যখন মার্তিনেজের গোলে আমরা সেমিফাইনালে উঠলাম, মুহূর্তটা খুবই আনন্দের ছিল। আমরা খুবই খুশি এবং উপভোগ করেছি। এখানে আমরা সবার মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখছি এবং আর্জেন্টিনায়ও দেখছি। আর্জেন্টাইন সবাই খুব খুশি, দারুণ রোমাঞ্চিত। শুরু থেকেই ম্যাচটা কঠিন ছিল, আমরা জানতাম, ম্যাচ মোটেই সহজ হবে না।’