গোলের পর দানি কারভাহালের সঙ্গে রদ্রিগোর উদ্‌যাপন
গোলের পর দানি কারভাহালের সঙ্গে রদ্রিগোর উদ্‌যাপন

রদ্রিগোর জোড়া গোলে রাজার মতো জিতে সেমিতে গেল রিয়াল

ড্র কিংবা ন্যুনতম ১-০ গোলের হারও রিয়াল মাদ্রিদের জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু রিয়াল তো চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজা। তাই হয়তো রাজার মতো জিতেই সেমিতে যাওয়ার পণ করে নেমেছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দলটি। চেলসি লড়াই করেছে, সুযোগও তৈরি করেছে। কিন্তু সেসব রিয়ালকে থামানোর জন্য মোটেই যথেষ্ট ছিল না। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে পাওয়া রদ্রিগোর জোড়া গোল চেলসির বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে রিয়ালকে তুলে দিল সেমিফাইনালে।

দারুণ এ জয়ের পর ১৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপার মালিক রিয়াল হয়তো এখনই থেকে ১৫তম শিরোপা নিয়ে স্বপ্ন বুনতে শুরু করে দিয়েছে। প্রথম লেগে ২-০ গোলে জেতা রিয়াল দ্বিতীয় লেগেও জিতেছে ২-০ গোলে। দুটি গোলই করেছেন রদ্রিগো। দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের জয় ৪-০ গোলে।

প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারের পর, সেমিতে যেতে রিয়ালের বিপক্ষে নিজেদের পারফরম্যান্সকে পরের ধাপে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন চেলসি বস ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। হয়তো মনে মনে প্রত্যাবর্তনের আশাও বুনেছিলেন। চেলসি চেষ্টাও করেছে অনেক কিন্তু পরের ধাপের সেই পারফরম্যান্সের দেখা আর মেলেনি। এ জন্য অবশ্য কৃতিত্ব দিতে হয় রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকেও। একাধিকবার নিশ্চিত গোলের হাত থেকে রিয়ালকে রক্ষা করেন এ বেলজিয়ান।

রিয়াল খেলোয়াড়দের গোল উদ্‌যাপন

চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম লেগে ২ বা তার বেশি গোলে এগিয়ে থাকা ১৯ বারের ১৮টিতেই পরের পর্বে গেছে রিয়াল। ইতিবাচক এই সমীকরণ নিয়েই স্টামফোর্ড ব্রিজে খেলতে নেমেছিল রিয়াল। শুরুটা যদিও খুব একটা ইতিবাচক ছিল না। লুকা মদরিচের হারানো বল থেকেই ম্যাচের প্রথম সহজ সুযোগটা পেয়েছিলেন এনগালু কান্তে।

রিয়াল ডি-বক্সে একরকম ফাঁকা জায়গা পেয়ে গিয়েছিলেন ফরাসি মিডফিল্ডার। কিন্তু ১২ গজ দূর থেকে তাঁর বাঁ পায়ের ভলিটি চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। কান্তের মিসের পর চেলসির ভারপ্রাপ্ত কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের প্রতিক্রিয়া বলে দিচ্ছিল সূবর্ণ এক সুযোগ মিস করেছে ব্লুজরা।

কিছুটা রক্ষণ সামলে খেলা রিয়াল বলার মতো সুযোগটা পায় ম্যাচের ২০ মিনিটে। বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে দারুণ এক শট নেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো। কিন্তু তাঁর শট কাছের পোস্টে প্রতিহত হয়ে ফিরে আসলে বেঁচে যায় চেলসি।

ম্যাচের ২৮ মিনিটে রিয়ালের আরেকটি সম্মিলিত আক্রমণ নষ্ট করেন চেলসি ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। ৩২ মিনিটে মদরিচের শট ঠেকিয়ে চেলসিকে বাঁচান গোলরক্ষক কেপা। ৪২ মিনিটে মদরিচের ক্রসে ঠিকঠাক পা লাগাতে পারলে দলকে এগিয়ে দিতে পারতেন ভিনিসিয়ুস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রিয়ালকে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ৬ গজ দূর থেকে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়ার শট ঠেকান বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

বল জালে জড়াচ্ছেন রদ্রিগো

বিরতির পর ৫৩ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় চেলসি। কিন্তু এ যাত্রায় এদের মিলিতাওয়ের দেয়াল টপকাতে পারেনি তারা। স্বাগতিকেরা একের পর এক সুুযোগ হাতছাড়া করলেও সে ভুল করেনি রিয়াল। ৫৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে চেলসিকে বিদায়ের পথ দেখিয়ে দেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো।

ডানপ্রান্ত থেকে বল নিয়ে চেলসির ডি-বক্সে ঢুকে রদ্রিগো বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসকে। আর ভিনির কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে গোল করে দলকে সেমির পথে এগিয়ে দেন রদ্রিগো।

৬৫ মিনিটে ফের রিয়ালের ত্রাতা কোর্তোয়া। ৭০ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করে চেলসি। যদিও তাতে সাড়া দেননি রেফারি। ৮০ মিনিটে ফেদে ভালভের্দের কাছ থেকে বল পেয়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি এনে দেন রদ্রিগো। এই গোলই নিশ্চিত করে রিয়ালের সেমির টিকিট।