অন্য প্রতিযোগিতাগুলোতে অবস্থা যা-ই হোক, লা লিগায় জোর কদমেই ছুটে চলছিল বার্সেলোনা। মহানাটকীয় কিছু না ঘটলে বার্সাই যে লিগ শিরোপা জিততে চলেছে, সেটা একরকম নিশ্চিত।
লিগে দুর্বার গতিতে ছুটতে ছুটতে আচমকা হোঁচট খাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে কাল। অপেক্ষাকৃত ‘দুর্বল’ দল জিরোনার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে কাতালানরা। গত সপ্তাহে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে কোপা দেল রেতে বিধ্বস্ত হওয়ার রাতেও গোল করতে পারেনি তারা। মৌসুমে প্রথমবার টানা ২ ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে বার্সা; সেটাও নিজেদের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে।
জাভি হার্নান্দেজের দলের জিরোনায় আটকে যাওয়ার কারণ আসলে কী?
কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু থেকে ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফিরেছিল বার্সা। মনে হচ্ছিল, ফাইনালে এক পা দিয়েই রেখেছে জাভির দল। কিন্তু গত সপ্তাহে ফিরতি লেগে পাশার দান বদলে দেয় রিয়াল। হ্যাটট্রিক করে ক্যাম্প ন্যুকে নীরব কর দেন করিম বেনজেমা। রিয়াল বার্সাকে উড়িয়ে দেয় ৪-০ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ অগ্রগামিতায় পৌঁছে যায় ফাইনালে। এল ক্লাসিকোয় সেই ‘এক হালি’র ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বার্সা। জিরোনার সঙ্গে ড্রয়ের পেছনে রিয়ালের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার নেতিবাচক প্রভাবকে অন্যতম কারণ মনে করছেন অনেকে।
ম্যাচে ১৮টি শট নিয়েছে বার্সা, যার ৩টি ছিল লক্ষ্যে। বল দখলেও এগিয়ে ছিল কাতালানরা-জিরোনার ৪০ শতাংশের বিপরীতে তাদের বল দখল ৬০ শতাংশ। কিন্তু ম্যাচ জিততে যেটা জরুরি, সেই কাজটা করতে পারেননি রবার্ট লেভানডফস্কি, আনসু ফাতি, রাফিনিয়ারা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন লেভা। উড়িয়ে মেরে সেটা নষ্ট করেছেন। প্রথমার্ধে এ রকম আরও তিনটি সুযোগ এসেছিল। ৩৬ মিনিটে রাফিনিয়া শট নেন জিরোনা গোলরক্ষক বরাবর। বিরতির পরেও হাইপ্রেসিং ফুটবল খেলেছে বার্সা। কিন্তু গোলটা পাওয়া হয়নি। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে আক্ষেপও ঝরেছে কোচ জাভির কণ্ঠে, ‘সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ওদের ডিফেন্ডাররা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। আমাদের চূড়ান্ত শটগুলো নিখুঁত ছিল না। ফিনিশিংয়ে ঘাটতি ছিল। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে, বেশ কয়েকটি জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’
বার্সা আর জয়ের মাঝে পার্থক্য তৈরি করেছেন জিরোনার আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক পাওলো গাজ্জানিগা। প্রথমার্ধে অন্তত তিনবার বার্সাকে হতাশ করেছেন আর্জেন্টিনার হয়ে একটি ম্যাচ খেলা গাজ্জানিগা।
একবার তো আত্মঘাতী গোল খেয়েই ফেলেছিল জিরোনা। গাজ্জানিগার অবস্থান না বুঝেই তাঁকে ব্যাক পাস বাড়ান সতীর্থ ডিফেন্ডার সান্তিয়াগো বুয়েনো। গোল যখন হয় হয়, সে সময়েই অনেকটা দৌড়ে এসে কোনোরকমে বলটাকে বাইরে পাঠান গাজ্জানিগা। ৩১ বছর বয়সী গোলরক্ষক একবার রোনালদ আরাউহোর, আরেকবার গাভির হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাইরে পাঠান। বার্সা মূলত জিততে পারেনি জিরোনা গোলরক্ষকের বীরত্বের কারণেই।