একসময়ের লিগ চ্যাম্পিয়ন তারা। মৌসুমে শেষ ম্যাচের পর লিগ শিরোপা জয়ের রঙিন উৎসব হয়েছে ক্লাবে। কিন্তু সময়ের চাকা ঘুরে রঙিন এখন ধূসর। শিরোপা দূরে থাক, দেশের শীর্ষ লিগে টিকে থাকাই হবে বড় সংগ্রাম।
ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের ২০২২-২৩ মৌসুম এখন শেষের পথে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ আর জার্মান বুন্দেসলিগার দলগুলো আজ ও আগামীকাল খেলতে নামবে শেষ ম্যাচ। দুই লিগে অবনমন ঠেকানোর লড়াইয়ে নামবে এমন পাঁচটি দল, যারা একসময় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ইতালির সিরি ‘আ’ আর ফ্রান্সের লিগ আঁ-তেও আছেন সাবেক চার চ্যাম্পিয়ন, যারা লিগে টিকে থাকা না–থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন হয় তিনটি দলের। এরই মধ্যে ২০তম স্থান নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে গেছে সাউদাম্পটন। অবনমনের বাকি দুটি স্থান ১৮ ও ১৯তম স্থানে আছে যথাক্রমে লেস্টার সিটি ও লিডস ইউনাইটেড। দুই দলেরই পয়েন্ট ৩১ করে।
পয়েন্ট তালিকার ১৭তম স্থান নিরাপদ হলেও সেখানে খুব একটা স্বস্তিতে নেই এভারটন। কারণ, লেস্টার ও লিডসের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র ২। অর্থাৎ শেষ দিনে হেরে গেলে সমীকরণ পাল্টে অবনমন হয়ে যেতে পারে এভারটনেরও। লেস্টার, লিডস ও এভারটন—তিন ক্লাবই ইংলিশ লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন।
১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের আগে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল প্রতিযোগিতা ছিল ফার্স্ট ডিভিশন। এই প্রতিযোগিতায় ৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এভারটন, যার সবশেষটি ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে। একই প্রতিযোগিতায় তিনটি শিরোপা আছে লিডসের। প্রিমিয়ার লিগ যুগে একবার রানার্সআপ হওয়া লিডস ফার্স্ট ডিভিশনের সবশেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। লিডস আর এভারটনের তুলনায় লেস্টার সিটির শিরোপা জয়ের স্মৃতি একদম তাজা। ২০১৫-১৬ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছিল রিয়াদ মাহরেজ-জেমি ভার্ডিদের দল।
শেষ ম্যাচে এভারটনের প্রতিপক্ষ বোর্নমাউথ। অবনমন এড়ানো নিশ্চিত করতে জিততেই হবে। হারলে বা ড্র করলেই বিপদের সম্ভাবনা ছুঁয়ে বা টপকে যেতে পারে লিডস ও লেস্টার সিটি। এর মধ্যে লেস্টারের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট হাম, লিডসের প্রতিপক্ষ টটেনহাম। এভারটন জিতে গেলে লেস্টার ও লিডসের অবনমন অবধারিত, জিতলেও কাজ হবে না।
১৮ দলের বুন্দেসলিগায় সরাসরি অবনমন ঘটে শেষ দুটি দলের। পয়েন্ট তালিকার ১৬তম দলকে খেলতে হয় রেলিগেশন প্লে-অফে। এরই মধ্যে সবশেষ স্থান নিশ্চিত হওয়ায় হার্থা বার্লিনের অবনমন নিশ্চিত। আজ শেষ দিনে অবনমন এড়ানোর লড়াইয়ে নামবে চারটি দল—শালকে (৩১ পয়েন্ট), বোখাম (৩২), স্টুটগার্ট (৩২) ও অগসবুর্গ (৩৪)।
এই চার দলের মধ্যে ১৭তম স্থানে থাকা শালকে জার্মান ফুটবলের শীর্ষ লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে বুন্দেসলিগা নামকরণের আগে জার্মান ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা ছিল জার্মান চ্যাম্পিয়নশিপ। এই প্রতিযোগিতায় ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয় শালকে, সবশেষ ১৯৫৮ সালে।
শালকের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে ১৫ নম্বরে থাকা স্টুটগার্টও সাবেক চ্যাম্পিয়ন। জার্মান চ্যাম্পিয়নশিপ আমলে দুবার আর বুন্দেসলিগা আমলে তিনবার শিরোপা জিতেছে তারা। শেষ ম্যাচে শালকের প্রতিপক্ষ লাইপজিগ, যারা লিগে তৃতীয় স্থানে আছে। আর ৩২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে থাকা স্টুটগার্টের প্রতিপক্ষ হফেনহাইম (১৩তম)।
স্টুটগার্ট বিপদে পড়বে যদি নিজেরা হেরে যায়, ওদিকে শালকে ও বোখাম জিতে যায়। তিন দলের পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র ১ হওয়ায় যে কাউকেই বুন্দেসলিগা-২তে নেমে যেতে হতে পারে।