গত বছর চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ঘটনা সেটি। ও রকম একটা বড় ম্যাচ আয়োজনে যে এত বিশৃঙ্খলা হতে পারে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। প্যারিসের সেই ফাইনালে শেষ পর্যন্ত আয়োজকদের ব্যর্থতায় অনেক লিভারপুল সমর্থক মাঠেই ঢুকতে পারেননি, অনেকে ঢুকেছেন খেলার অনেকটাই হয়ে যাওয়ার পর। সেই ফাইনাল আয়োজনের ব্যর্থতা আগেই স্বীকার করেছে উয়েফা। এখন কিছুটা দায় মেটানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা। গতকাল এক বিবৃতিতে উয়েফা জানিয়েছে, সেদিন ফাইনালের টিকিট কেটে ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন লিভারপুলের যে সমর্থকেরা, তাঁদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
স্তাদ দে ফ্রান্সের সেই ফাইনাল দেখতে প্রায় ২০ হাজার লিভারপুল সমর্থক টিকিট কেটেছিলেন। প্যারিসের সময় রাত ৯টা ও বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদ মধ্যে সেই ফাইনাল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমর্থকদের মাঠে ঢোকা নিয়ে জটিলতায় প্রথমে ১৫ মিনিট দেরিতে ম্যাচ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পরে উয়েফা আবার বিবৃতিতে জানায়, ম্যাচ শুরু করতে আরও দেরি হবে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা শুরু হয়েছিল ৩৮ মিনিট দেরিতে।
আয়োজকদের অদক্ষতায় লিভারপুল সমর্থকেরা যেসব ফটক দিয়ে ঢোকার কথা ছিল, সেসব ফটকে সময়মতো পৌঁছেও মাঠে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। লিভারপুলের সমর্থকদের অভিযোগ ছিল, পুলিশ অযথাই ফটকে ঢোকার মুখে তল্লাশিতে দেরি করছিল। এ নিয়ে হট্টগোলের একপর্যায়ে সমর্থকদের দিকে টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে মারে প্যারিসের পুলিশ। আহত হন অনেকে।
সেদিন ফাইনালের জন্য টিকিট কেটেছিলেন ১৯ হাজার ৬১৮ জন লিভারপুল সমর্থক। তাঁদের মধ্যে অনেকেই শেষ পর্যন্ত খেলা দেখতে পারেননি। কেউ কেউ মাঠে ঢুকতে পেরেছেন অনেক পরে। এ ঘটনার পর একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে উয়েফা। গত মাসে প্রকাশিত যে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়োজকদের ব্যর্থতা ফাইনালের মতো একটা আয়োজনকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল।
এ ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করে আজ উয়েফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘গেট এ, বি, সি, এক্স, ওয়াই এবং জেড—যেসব জায়গায় পরিস্থিতি খুবই কঠিন ছিল, সেসব গেটের সবাই টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন। পাশাপাশি যারা ম্যাচ শুরুর পূর্বনির্ধারিত সময়ের (প্যারিসের সময় রাত ৯টা) মধ্যে ঢুকতে পারেননি, কিংবা একেবারেই ঢুকতে পারেননি, তাঁরাও টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন।’
ওই ঘটনার পরের দিন অবশ্য উয়েফা লিভারপুল সমর্থকদের ওপরেই এই বিশৃঙ্খলার দায় চাপিয়ে দিয়ে বলেছিল, তাঁরা গেটে যেতে অনেক দেরি করেছিলেন।
সেদিনের ফাইনালে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একমাত্র গোলে এবং থিবো কোর্তোয়ার অসাধারণ সব সেভে লিভারপুলকে হারিয়ে ১৪তম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।