আগের দিনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল লিওনেল মেসি মাঠে ফিরছেন। অনুমতি ছাড়া সৌদি আরব সফরে যাওয়ায় মাসের শুরুতে পিএসজি তাঁকে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যা পরে দুই পক্ষের সমঝোতায় ১ ম্যাচে নেমে আসে।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে অবশ্য গোল বা গোলে সহায়তা করতে পারেননি মেসি। উল্টো তাঁর পায়ে বল যাওয়ার পর কিছু সংখ্যক দর্শক প্রতিবার দুয়ো দিয়ে গেছেন।
আজাকসিওর বিপক্ষে ম্যাচটি মেসির জন্য সুখকর না হলেও পিএসজির কেটেছে উৎসবে। পয়েন্ট তালিকার নিচের দিকে থাকা দলটির বিপক্ষে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা জিতেছে ৫-০ ব্যবধানে। জোড়া গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, একটি করে গোল ফ্যাবিয়ান রুইজ, আশরাফ হাকিমি। অপর গোলটি আজাকসিওর আত্মঘাতি।
এ জয়ে লিগ আঁ’র শিরোপা দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেল পিএসজি। ৩৫ ম্যাচে ৮১ পয়েন্ট তাদের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাঁস ৬ পয়েন্ট পেছনে। অপর দিকে মৌসুমের ২৪তম হারে লিগ আঁ থেকে অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেছে আজাকসিওর।
পার্ক দে প্রিন্সেসের ম্যাচটিতে দেখা গেছে তিনটি অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ের কেন্দ্রে ছিলেন মেসি; নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর কেমন খেলেন আর দর্শকই বা তাঁকে কীভাবে নেয় সেটি ছিল প্রশ্ন। দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেখা গেছে একের পর এক গোল উদ্যাপন। আর শেষ দিকে তৃতীয় অধ্যায় দেখেছে দুই দলের হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি। যার জেরে লাল কার্ড দেখেছেন উভয় দলের একজন করে দুইজন।
ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে ছিল পিএসজি। মোটের ওপর বেশির ভাগ খেলা হচ্ছিল আজাকসিওর অর্ধে। বল দখলের ওই ধারাতেই ২২ মিনিটে প্রথম গোল পেয়ে যায় পিএসজি। প্রতিপক্ষ ডি বক্সে বল পেয়ে খানিকটা সময় নিয়ে জায়গা করে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফ্যাবিয়ান রুইজ। গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় বাধা হতে পারেননি।
৪ মিনিট পর গোলমুখে শট নেন মেসিও। তবে আজাকসিওর এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল গতি হারায়, সহজেই নিয়ন্ত্রণে নেন গোলরক্ষক।
৩৩ মিনিটে পিএসজিকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন আশরাফ হাকিমি। গোলের জন্য প্রাথমিক শটটা ছিল অবশ্য এমবাপ্পের। আজাকসিও ডিফেন্ডারদের জটলার ভেতর থেকে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়া অবস্থায় শট নেন এমবাপ্পে। গোলরক্ষক জোসেফ সোলাকারো সেটি রুখে দিলেও প্রতিহত করতে পারেননি। বল ডান পাশে ফাঁকা জায়গায় চলে গেলে দৌড়ে এসে দ্রæত কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান হাকিমি।
প্রথমার্ধে গোল না পাওয়া এমবাপ্পে বিরতির পর ৯ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ফেলেন। ৪৭তম মিনিটে প্রথম আর ৫৪তম মিনিটে দ্বিতীয়। এর মধ্যে পরের গোলটি ছিল দারুণ। সের্হিও রামোস নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা করে বল বাড়ান এমবাপ্পের দিকে। অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে তিনি আজাকসিও ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। পায়ের দারুণ কাজে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভলি করে বল পাঠিয়ে দেন জালে। যে গোল দেখে অভিভূত হন গ্যালারিতে থাকা নেইমারও।
পিএসজি তাদের পঞ্চম গোলটি পায় ৭৩ মিনিটে। মার্কিনিওসের শট আটকাতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন আজাকসিওর মোহাম্মদ ইউসুফ।
পিএসজি ৫-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচ যখন নিস্তরঙ্গ, তখন উত্তাপ ছড়ান দুই দলের খেলোয়াড়রা। ৭৭ মিনিটে দুই দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই একে অপরের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে যান।
পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হওয়ার পর আশরাফ হাকিমিকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। কার্ডজনিত কারণে পিএসজির সর্বশেষ ম্যাচেও তিনি নিষিদ্ধ ছিলেন। পরে ভিএআর দেখে লাল কার্ড দেখানো হয় আজাকসিওর থমাস মাঙ্গানিকেও।
দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পর দুই দলের কেউই আর গোল করতে পারেনি। বড় ব্যবধানের জয় সঙ্গী করে পিএসজি মাঠ ছাড়ে লিগ তালিকার স্বস্তিকর অবস্থান নিয়ে।