এল ক্লাসিকোয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এসি মিলানের কাছে ৩-১ গোলে হার। দুটি ম্যাচই আবার হয়েছে নিজেদের ডেরা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়।
এমন বাজে অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় কী? অবশ্যই জয়। লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ কাল কাজটা ভালোভাবেই করতে পেরেছে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের হ্যাটট্রিকে ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল।
কিন্তু একটা জয় পেতে গিয়ে যদি চোটের কারণে তিন তিনজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে মাঠ ছাড়তে হয়, তাহলে সেই জয় স্বস্তির চেয়ে অস্বস্তিতেই ফেলে দেয় বেশি।
রিয়ালের ভাগ্যে হয়তো কাল এমন কিছুই লেখা ছিল। প্রথমার্ধেই চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে দলের দুই ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও, লুকাস ভাজকেজ ও উইঙ্গার রদ্রিগোকে। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়া মিলিতাওয়ের তো ডান হাঁটুর লিগামেন্টই ছিঁড়ে গেছে। ব্রাজিলের এই ডিফেন্ডারকে শিগগিরই অস্ত্রোপচার করাতে হবে। এ মৌসুমে তাঁর আর মাঠে নামার সম্ভাবনা নেই।
গত মৌসুমের শুরুর দিকে একই ধরনের চোটে পড়েছিলেন মিলিতাও। সেবার ছিঁড়ে গিয়েছিল বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট। পুরোপুরি সেরে উঠে এ বছর মার্চে মাঠে ফিরে রিয়ালকে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা শিরোপা জেতাতে অবদান রাখেন। কিন্তু এ মৌসুমের অর্ধেকটা পেরোনোর আগেই আবারও বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হলো তাঁকে।
এক বিবৃতিতে রিয়াল জানিয়েছে, তাঁর ডান হাঁটুর লিগামেন্ট পুরোপুরি ছিঁড়ে গেছে। দুটি মেনিস্কিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামীতে তাঁকে অস্ত্রোপচার করাতে হবে। সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, মিলিতাওকে ৯ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে। ভাজকেজের ফিরতে ফিরতে তিন সপ্তাহ ও রদ্রিগোর ১ মাস লেগে যাবে।
এর আগে চোটের কারণে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি কারভাহালেরও মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। ডেভিড আলাবার এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এবং অ্যাঙ্কেল মচকে যাওয়া অরেলিয়েঁ চুয়ামেনির ডিসেম্বরের আগে ফেরার সম্ভাবনা নেই। পায়ের মাংসপেশির চোট পড়া দলের প্রধান গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া সবে অনুশীলনে ফিরেছেন। পুরোপুরি সেরে না ওঠা পর্যন্ত তাঁকে খেলানোরও ঝুঁকি নেবে না রিয়াল।
কাল ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন, ‘শুরু থেকেই ম্যাচটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। যখন থেকে আমরা গোল পেতে শুরু করেছি, তখন দলকে দারুণ দেখাচ্ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের চোটগুলো আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। তাদের এখন কী অবস্থা, আমরা দেখব।’
আনচেলত্তির দাবি, ঠাসা সূচির কারণে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার মাত্রা বেড়ে গেছে, ‘প্রথমার্ধেই তিনজনের চোটে পড়া আমার কাছে বেশ অদ্ভুত ব্যাপার। টানা ম্যাচ থাকায় ওদের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। ক্লান্তিভাব নিয়েই ওদের খেলতে হয়েছে। এতে চোটে পড়ার ঝুঁকিও বেড়ে গেছে।’
স্ট্রেচারে করে মিলিতাওয়ে মাঠের বাইরে নেওয়ার আগে তাঁকে ১০ মিনিট চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর বদলি হিসেবে রিয়ালের মূল দলে অভিষেক হয়েছে একাডেমি থেকে উঠে আসা ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিওর। ৪২ মিনিটে জুড বেলিংহামের গোলে এই আসেনসিওই বলের জোগান দিয়েছেন।
তাঁকে প্রশংসায় ভাসিয়ে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘সে (রাউল আসেনসিও) এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে এই মুহূর্তে আমাদের দরকার। সে কাস্টিয়ার (রিয়াল মাদ্রিদের রিজার্ভ দল) হয়ে দারুণ খেলেছে। এখন থেকে সে আমাদের সঙ্গে থাকবে। এ জন্য একাডেমিকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।’
রিয়ালের পরের ম্যাচ আগামী ২৪ নভেম্বর লেগানেসের বিপক্ষে। দুই সপ্তাহ আন্তর্জাতিক বিরতি থাকায় চোটজর্জর দলটাকে কিছুটা গুছিয়ে তোলার সময় পাচ্ছেন আনচেলত্তি।