বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর পাঁচটায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে নামবেন লিওনেল মেসি। এই ম্যাচে মেসির ইন্টার মায়ামির প্রতিপক্ষ ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়ন। আগের ম্যাচগুলোয় দারুণ খেলে সেমির টিকিট পেয়েছে ফিলাডেলফিয়া। শুধু এটুকুই নয়, এমএলএস লিগে ইস্টার্ন কনফারেন্সে ইন্টার মায়ামির অবস্থান যেখানে তলানিতে, সেখানে ফিলাডেলফিয়া আছে ৩ নম্বরে। তবে গত কদিনে বদলে গেছে পরিসংখ্যানের দাপট ও শক্তি নির্ণয়ের নিক্তি।
দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্যের নাম এখন মেসি। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা আসার পর থেকে বদলে গেছে পুরো দৃশ্যপট। আসার পর থেকে একাই প্রতি ম্যাচেই দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন মেসি। ৫ ম্যাচ খেলে মেসি করেছেন ৮ গোল। এই ম্যাচেও ফিলাডেলফিয়ার সবচেয়ে বড় বাধার নাম হবে মেসি।
ফাইনালে যেতে হলে এ কঠিন বাধা পার করতে হবে ফিলাডেলফিয়াকে। আর এই ম্যাচ দিয়ে মেসির সামনে বড় সুযোগ ইন্টার মায়ামিকে প্রথম শিরোপা জেতানোর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার। আর শেষ পর্যন্ত এই লক্ষ্যে মেসি সফল হলে সেটি তাঁর মুকুটে যোগ করবে নতুন পালক। এখন একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই ম্যাচ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
যেভাবে ফাইনালে ইন্টার মায়ামি ও ফিলাডেলফিয়া
ইন্টার মায়ামির হয়ে লিগস কাপের প্রথম ম্যাচেই জাদু দেখান মেসি। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে তাঁর করা গোলেই জয় পায় মায়ামি। ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে সেই ম্যাচে মায়ামি জেতে ২–১ গোলে। পরের গ্রুপের পরের ম্যাচেও মেসির নেতৃত্বে দারুণ জয় পায় মায়ামি। মেসির জোড়া গোলের পর আটলান্টা ইউনাইটেডকে মায়ামি উড়িয়ে দেয় ৪–০ গোলে। নকআউট পর্বের প্রথম লড়াইয়েও মেসি ছিলেন অনবদ্য।
এবারও ওরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে মায়ামির ৩–১ গোলের জয়ে দুবার বল জালে জড়ান মেসি। শেষ ষোলোয় এফসি ডালাসের বিপক্ষে মায়ামির জয়টা মোটেই সহজ ছিল না। এই ম্যাচে পিছিয়ে থাকা মায়ামিকে শেষ মুহূর্তে গোল করে সমতায় ফেরান মেসি। এদিনও মেসি করেন জোড়া গোল। আর ৪–৪ গোলে ম্যাচ সমতায় থাকার পর টাইব্রেকারে বাজিমাত করে মেসির মায়ামি। আর শেষ আটের লড়াইয়ে শার্লটের বিপক্ষে মায়ামি ছিল অপ্রতিরোধ্য। এদিন মায়ামির ৪–০ গোলের জয়ে শেষ গোলটি আসে মেসির কাছ থেকে।
অন্যদিকে লিগস কাপের শুরু থেকে ফিলাডেলফিয়া ছিল দাপুটে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ক্লাব তিজুয়ানাকে ৩–১ গোলে এবং পরের কুয়েরেতারোকে তারা হারায় ৫–১ গোলে। তবে নকআউটের প্রথম ম্যাচে ডিসি ইউনাইটেডের বিপক্ষে বেশ পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় মায়ামিকে। ০–০ গোলে সমতায় থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যেখানে ৫–৪ গোলে বাজিমাত করে ফিলাডেলফিয়া। শেষ ষোলোতেও রেড বুলসের বিপক্ষে ১–১ ব্যবধানে সমতায় থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ৪–৩ গোলে জিতে পরের পর্বে যায় ফিলাডেলফিয়া। আর শেষ আটে কুয়েরেতারোকে ২–১ গোলে হারায় ফিলাডেলফিয়া।
মুখোমুখি শেষ ৫ ম্যাচের ফল
ইন্টার মায়ামি ও ফিলাডেলফিয়ার শেষ ৫ ম্যাচের দুটিতেই জিতেছে ফিলাডেলফিয়া, দুটি ড্র করেছে এবং হেরেছে একটিতে। তবে মুখোমুখি শেষ ম্যাচে ৪–১ গোলে হেরেছিল ইন্টার মায়ামি। এ ছাড়া নিজেদের শেষ ৭ ম্যাচের সব কটিতেই জিতেছে ফিলাডেলফিয়া। আর শেষ ৫ ম্যাচে ৪ গোল হজম করার বিপরীতে তারা করেছে ১১ গোল। অন্যদিকে ইন্টার মায়ামি নিজেদের শেষ ৫ ম্যাচে করেছে ১৭ গোল এবং হজম করেছে ৬ গোল।
কখন শুরু হবে ফাইনাল
যথারীতি আগের ম্যাচগুলোর মতো এবারও মেসির খেলা উপভোগ করতে হলে উঠতে হবে ভোরে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর পাঁচটায় মাঠে গড়াবে এ ম্যাচ। আপনি যদি অ্যাপল টিভির সাবস্ক্রাইবার না হন, তবে এই ম্যাচের জন্য আপনাকে চোখ রাখতে হবে লাইভ আপডেটগুলোয়।
কোথায় হবে ম্যাচ
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার চেস্টারে অবস্থিত মাঠ সুবারো পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। এই মাঠের দর্শক ধারণক্ষমতা ১৮ হাজার ৫০০। মাঠটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১০ সালের ২৭ জুন।
সম্ভাব্য একাদশ
ইন্টার মায়ামি: ড্রাক ক্যালেন্ডার, ডেআন্দ্রে ইয়েডলিন, সের্হিল ক্রিভটসোভ, কামাল মিলার, জর্দি আলবা, ডিক্সন আরোয়ো, সের্হিও বুসকেতস, ডিয়েগো গোমেজ বা বেঞ্জামিন ক্রেমাশ্চি, রবার্ত টেলর, লিওনেল মেসি ও ইউসেফ মার্তিনেজ। কোচ: জেরার্দো মার্তিনো।
ফিলাডেলফিয়া: আন্দ্রে ব্লেক, জ্যাকব গ্লেসেন্স, জ্যাক এলিয়ট, ডামিয়োন লোয়ে, জোসে মার্তিনেজ, ওলিভিয়ের এমবাজিয়ো, জেসুস বুয়েনো, জ্যাক ম্যাকগ্লভন, কাই ওয়াগনার, জুলিয়ান কারাঞ্জা ও মিকেল উহরে। কোচ: জিম কার্টিন।
অন্য সেমিফাইনাল
একই দিন অন্য সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে মন্টেরে ও নাশভিলে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে এ দুই দল। ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ।