ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে পিএসজি কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়ের এবং তাঁর ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে ফ্রান্সের পুলিশ। নিয়মানুযায়ী, আটকের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গালতিয়ের ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে হয় অভিযোগ গঠন করে গ্রেপ্তার দেখাতে হবে, নয়তো ছেড়ে দিতে হবে। সরকারি কৌঁসুলির বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গালতিয়ের ও তাঁর ছেলে জন ভ্লাহোভিচকে ‘শুনানিতে উপস্থিত করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে’।
তবে এখনই রক্ষা পাচ্ছেন না গালতিয়ের। নিসের কৌঁসুলি জানিয়েছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর গালতিয়েরকে আদালতের কাঠগড়ায় বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ৩ বছরের জেল ও ৪৫ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে।
২০২১-২২ মৌসুমে লিগ আঁর দল নিসের কোচ থাকতে গালতিয়ের মুসলিম খেলোয়াড়দের প্রতি বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক মন্তব্য করেছিলেন, এ অভিযোগ ওঠার পর গত এপ্রিলে তদন্ত শুরু হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গালতিয়ের এবং তাঁর ছেলে ভ্লাহোভিচ। কাল শুনানিতে গালতিয়ের ‘তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন’ বলে সরকারি কৌঁসুলি হাভিয়ের বোনোহাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।
এ বছরের শুরুতে নিসের মালিকের উদ্দেশে পরিচালক জুলিয়ান ফরনিয়েরের পাঠানো একটি মেইল ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গালতিয়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সামনে আসে। ফাঁস হওয়া সেই মেইলে গালতিয়েরের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় জুলিয়ানকে, যেখানে তিনি গালতিয়েরের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ ও মুসলিম খেলোয়াড়দের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ আনেন। সেই মেইলে জানা যায়, গালতিয়ের নাকি বলেছিলেন, দলে অনেক বেশি মুসলিম ও কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়। এরপরই তদন্ত শুরু হয়।
জুলিয়ান ফরনিয়ের দাবি করেছেন, সেই মেইলে গালতিয়ের তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমাদের এই শহরের (নিস) বাস্তবতা বোঝা উচিত আর তাই দলে এত বেশি কৃঞ্চাঙ্গ ও মুসলিম খেলোয়াড় থাকা উচিত নয়।’ ফরনিয়ের আরও দাবি করেছেন, গালতিয়ের ‘মুসলিম খেলোয়াড়দের সংখ্যা যতটা সম্ভব কমাতে দল ঢেলে সাজাতে চেয়েছিলেন’।
এদিকে পিএসজিতে গালতিয়েরের কোচিং অধ্যায় একরকম শেষই হয়ে গেছে। ২০২২ সালে দুই বছরের চুক্তিতে প্যারিসে এলেও এক বছর পরই তাঁকে বিদায় করে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। পিএসজির নতুন কোচ হিসেবে বার্সেলোনার সাবেক কোচ লুইস এনরিকেকে নিয়োগ দেওয়ার জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।