৩২ বছর বয়সে অভিষেক! এই বয়সে ফুটবলাররা তো অবসরের প্রস্তুতি নিতেই শুরু করেন। অনেকে অবসরেও চলে যান। এমন বয়সে অভিষেক তাই মূলত শেষ সুযোগই। ব্যর্থ হলে শুরুতেই সব শেষ। এভাবে শেষ দেখে ফেলা ফুটবলারের সংখ্যাও কম নয়। তবে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড হোসেলুর গল্পটা নিশ্চিতভাবেই তেমন হচ্ছে না। সম্ভাবনার দুয়ারগুলো যখন একে একে বন্ধ হয়ে আসছিল, তখনই জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নেমে চমক দেখিয়েছেন হোসেলু। নরওয়ের বিপক্ষে ইউরো বাছাইয়ে স্পেনের ৩-০ গোলের জয়ে দুই মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে স্বপ্নের এক অভিষেক দেখেছেন এই ফরোয়ার্ড।
২০০৮-০৯ মৌসুমে স্পেনের বয়সভিত্তিক দলে অভিষেক হয় হোসেলুর। ক্লাব ফুটবলেও মূল দলের হয়ে যাত্রা শুরু হয় একই বছর। ২০০৯ সালে হোসেলুর স্বপ্নটা আরও বড় হয় রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে সেল্টা ভিগোর কাছ থেকে কিনে আনলে। তবে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখতেও সময় লাগেনি তাঁর। রিয়ালের ‘বি’ দল ও সেল্টার হয়ে ধারে খেলেই কাটে দুই বছর। ২০১১ সালের মে মাসে আলমেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে রিয়ালের মূল দলের হয়ে প্রথম মাঠে নামার সুযোগ পান হোসেলু। লা লিগা অভিষেকে করিম বেনজেমার পরিবর্তে যখন মাঠে নামেন, তখন ম্যাচের বাকি ছিল ১০ মিনিট। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্রস থেকে গোল করে লা লিগার অভিষেকটাও রাঙান এই ফরোয়ার্ড। তবে অভিষেকে গোল করেও লা লিগায় রিয়ালের হয়ে দ্বিতীয়বার মাঠে নামার সুযোগ পাননি হোসেলু।
এরপর লম্বা সময় খেলেছেন একাধিক জার্মান ক্লাবে। মাঝে দুই মৌসুম ইংলিশ ক্লাব স্টোক সিটি ও নিউ ক্যাসলের হয়েও খেলেছেন হোসেলু। এরপর ২০১৯ সালে আবার স্পেনে ফিরে আসেন এই ফুটবলার। এবার যোগ দেন আলাভেসে। ২০২২ সালে তাঁকে কিনে নেয় এস্পানিওল। এই ক্লাবের হয়ে চলতি মৌসুমে আছেন দারুণ ছন্দেও। লা লিগায় এখন পর্যন্ত ২৩ ম্যাচে করেছেন ১২ গোল। এই পারফরম্যান্সই মূলত তাঁকে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলে জায়গা করে দিয়েছে। আর নতুন কোচের আস্থার প্রতিদানটা দিয়েছেন প্রথম ম্যাচেই। ৮৩ মিনিটে হেডে গোল করে লক্ষ্যভেদ করার পর ৮৫ মিনিটে করেন নিজের দ্বিতীয় গোলও।
ম্যাচ শেষে রঙিন অভিষেক যেন হোসেলুর নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। একজন খেলোয়াড় এর বেশি চাইতে পারে না। পরিশ্রমের মূল্য সব সময় পাওয়া যায়। এটাই আমাকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়। আমার মনে হচ্ছে, আমি ১৮ বছরের কিশোর।’