ডি-বক্স থেকে

মদরিচ–বাধা উপড়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে ব্রাজিল

দ্বিতীয় রাউন্ডে দুর্দান্ত সব ম্যাচ দেখেছি। তার চেয়েও দুর্দান্ত ম্যাচ আশা করছি কোয়ার্টার ফাইনালে। এ পর্বেই আপনি দেখতে পারেন দলগুলোর আসল শক্তি। সেই শক্তির বিবেচনায় আজ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলই ফেবারিট। ধারেভারে এগিয়ে থাকা সেলেসাওরা খেলছে নিজেদের সেরা ফুটবল। তবে আজ একটু বেশিই ভালো খেলতে হবে হলুদ জার্সিধারীদের। আমার ধারণা, ব্রাজিল সেটা খেলবে এবং স্কোরলাইন হতে পারে ২–০।

ব্রাজিলকে এগিয়ে রাখার কারণ শুধুই তাদের নাম নয়। ব্রাজিলের সব খেলোয়াড়ই বিপজ্জনক। তবে আমি একটু বেশি বিপজ্জনক ভাবি ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। প্রতিপক্ষকে একাই ধ্বংস করে দিতে পারে সে। ব্রাজিলের অন্যতম সেরা অ্যাটাকারও হয়ে উঠেছে ছেলেটি।

কোচ তিতের হাতে থাকা ফরোয়ার্ডদের মধ্যে আমি ভিনিসিয়ুসকেই এগিয়ে রাখছি। রিয়াল মাদ্রিদকে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছে সে। বিশ্বকাপেও গোল করেছে, করিয়েছে। মাঠে ওকে আলাদাভাবে চেনা যায়। যে মাইনাসগুলো সে করে, ব্রাজিলের স্ট্রাইকাররা তা থেকে গোল করতে পারে অনায়াসে। সে পরিপূর্ণ ফরোয়ার্ড এবং ওর উপস্থিতি ব্রাজিলকে ৩০ ভাগ এগিয়ে রাখে। নেইমার থাকার পরও কথাটা বলছি।

কোনো সন্দেহ নেই, ফ্রান্সের পাশাপাশি ব্রাজিলের আক্রমণভাগও বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। দলটির হয়ে এবার এমন সব খেলোয়াড় গোল করেছে, সেভাবে যাদের নামও শুনিনি। ফ্রান্সের মতো ব্রাজিল দলটা পরিপূর্ণও। তবে মাঝমাঠ আর আক্রমণের তুলনায় ব্রাজিলের রক্ষণ একটু পিছিয়ে। সেটা অবশ্য বিপদের কারণ হচ্ছে না। ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ডরা এত বেশি সময় বল পায়ে রাখে যে রক্ষণভাগের ওপর খুব একটা চাপ পড়ে না, ডিফেন্ডারদের তেমন ক্লান্ত হতে হয় না। তবে আজ যে ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ডরা ব্রাজিলের রক্ষণের পরীক্ষা নেবে, তাতে সন্দেহ নেই। ব্রাজিলকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে রেখে খেলতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি নকআউট পর্ব, হারলেই বিদায়।

ব্রাজিল হারবে না, সেটা জোর দিয়ে বলা কঠিন। আজকের আধুনিক ফুটবলে কোনো দলই অপরাজেয় নয়। সেখানে তো আজ ব্রাজিলের সামনে গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলকে তারা মাঠে অনেক ভোগাবে, দর্শকদের জন্য এটি তাই হবে দেখার মতো এক ম্যাচ। ক্রোয়াটদের সম্ভাবনা নেই বলব না। তবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে হিসেবি ফুটবল খেলতে হবে ওদের। ভুল করা চলবে না। আমার ধারণা, ক্রোয়েশিয়া চাইবে রক্ষণাত্মক খেলে ৯০ মিনিট পার করতে। তারপর ম্যাচ নিয়ে যাবে অতিরিক্ত সময়ে। তবে তার আগেই ক্রোয়েশিয়া পাল্টা আক্রমণে গোল পেলে তো কথাই নেই।

ক্রোয়েশিয়ার হাতে আছে লুকা মদরিচের মতো খেলোয়াড়, যে কিনা একাই তিন খেলোয়াড়ের সমান।

একসঙ্গে চার ডিফেন্ডারকে ব্যস্ত রাখে সে। বয়স ৩৭ হয়ে গেলেও এখনো যে পাসগুলো বাড়ায় মদরিচ, স্ট্রাইকার শুধু মাথা বা পা লাগালেই গোল। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মদরিচ মাঝমাঠ থেকে যেসব পাস বাড়ায়, করিম বেনজেমা কেন, আমার ছেলে হলেও গোল করে দিতে পারে। আজ ব্রাজিলের সামনে বড় বাধা আসলে এই মদরিচই।

মদরিচ–বাধা উপড়ে ফেলার ক্ষমতা অবশ্য রাখে ব্রাজিল। আর রাখে বলেই দলটার নাম ব্রাজিল।