অদ্ভুত কারণে দলবদল ব্যর্থ হয়েছিল নেইমার–রোনালিদিনিও–লেভার
অদ্ভুত কারণে দলবদল ব্যর্থ হয়েছিল নেইমার–রোনালিদিনিও–লেভার

যে অদ্ভুত কারণে হয়নি রোনালদিনিও–নেইমার–লেভাদের দলবদল

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় এসেছে লিভারপুল মিডফিল্ডার ফাবিনিওর দলবদলের ঘটনা। সৌদি ক্লাব আল ইত্তিহাদের সঙ্গে কথাও পাকা করে ফেলেছিলেন ফাবিনিও। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই থমকে যায় দলবদলের প্রক্রিয়া। একাধিক ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যম জানায়, ব্রাজিলিয়ান তারকা সৌদি আরব যাওয়ার পেছনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর পোষা কুকুর। সৌদি আরবে নাকি ‘বিপজ্জনক ও আক্রমণাত্মক কুকুর’ নিষিদ্ধ। ফলে ফাবিনিও তাঁর পোষা ফ্রেঞ্চ বুলডগ দুটিকে সৌদিতে নিতে পারবেন না।

কিন্তু ফাবিনিও জানান, তিনি কুকুর না নিয়ে যাবেন না। আর এতেই ঝুলে যায় তাঁর দলবদল। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য অ্যাথলেটিক ফাবিনিওর দলবদল আটকে যাওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে দাঁড় করায় বেতনকাঠামোর সমস্যাকে। তবে সমস্যা যা–ই হোক, সেটি সমাধান করে এখন আল ইত্তিহাদে যাওয়ার পথে আছেন ফাবিনিও। তবে অদ্ভুত কারণে দলবদল সম্পন্ন না হওয়ার ঘটনা কম নয়। নেইমার, রোনালদিনিও, ইব্রাহিমোভিচসহ অনেক তারকা ফুটবলারের ক্যারিয়ারে অদ্ভুত কারণে সম্পন্ন হয়নি কাঙ্ক্ষিত কিছু দলবদল। তেমনই কয়েকটি নিয়ে এই প্রতিবেদন।

রোনালদিনিও হতে পারতেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের

রোনালদিনিও
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

বার্সেলোনায় নিজেকে অন্যতম সেরা তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রোনালদিনিও; কিন্তু পিএসজি থেকে বার্সায় আসার আগে রোনালদিনিওর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যাওয়ার দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময় একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ডেভিড বেকহামের বিকল্প হিসেবেই রোনালদিনিওকে নিতে চেয়েছিল ইউনাইটেড। কিন্তু অনেক দূর এগোনোর পর নিজের মত বদলে ফেলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। ইউনাইটেডে যাওয়ার পথ থেকে রোনালদিনিওর সরে আসার কারণ ছিল আবহাওয়া। ইংল্যান্ডের আবহাওয়া নিয়ে অসন্তুষ্টির কারণেই তাদের ফিরিয়ে দিয়ে বার্সেলোনাকে বেছে নেন রোনালদিনিও।

অদ্ভুত কারণে দলবদল আটকে গিয়েছিল রবার্ট লেভানডফস্কির

রবার্ট লেভানডফস্কি
ব্ল্যাকবার্ন

রবার্ট লেভানডফস্কির তখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার লেভা হয়ে ওঠতে ঢের দেরি। ২০১০ সালে তিনি তখন খেলছিলেন পোলিশ ক্লাব লেচ পোজনানে। তাঁকে দলে নিতে এগিয়ে আসে ইংলিশ ক্লাব ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স। দুই পক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু আইসল্যান্ডে আগ্নেয়গিরির কারণে তৈরি হওয়া ধোঁয়ায় বিমান চলাচল করা সম্ভব ছিল না। এর ফলে কথা পাকা করার জন্য লেভার ইংল্যান্ড যাত্রাও বাধাগ্রস্ত হয়। এসবের ফাঁকে লেভাকে নিতে এগিয়ে আসে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। শেষ পর্যন্ত ব্ল্যাকবার্নকে পেছনে ফেলে সফলও হয় ডর্টমুন্ড। যা বদলে দেয় লেভার ক্যারিয়ারের গতিপথও।  

জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ খেলতে পারতেন আর্সেনালের হয়ে

ইব্রাহিমোভিচ
আর্সেনাল

২০০০ সালে ইব্রাহিমোভিচের আর্সেনালে যাওয়ার দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তাঁর ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারও। তবে ২১ বছর বয়সী ইব্রাকে নেওয়ার আগে ওয়েঙ্গার তাঁকে ট্রায়াল দিতে আসতে বলেছিলেন। আর্সেনালের কোচের সেই প্রস্তাব নিয়েই মূলত শুরু হয় বিপত্তি। ইব্রাহিমোভিচ সাফ ‘না’ করে দিয়ে বলেন, ‘ইব্রাহিমোভিচ অডিশন দেয় না।’ তাঁর এ কথার পর আর্সেনালও পিছিয়ে যায়। সরাসরি না দেখে কোনো তরুণ খেলোয়াড়কে দলে ভেড়াতে রাজি ছিলেন না ওয়েঙ্গার। আর আর্সেনালে আসার পরিবর্তে ইব্রা পরে পাড়ি জমান আয়াক্সে।

ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার খেলতে পারতেন ম্যান সিটির হয়ে

নেইমার
ম্যানচেস্টার সিটি

সান্তোস ছেড়ে বার্সেলোনায় যাওয়ার আগে নেইমারকে নেওয়ার ব্যাপার অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। সব কিছু যখন ঠিকঠাক তখনই বেঁকে বসেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। নেইমার নাকি জেনেছিলেন, ইংল্যান্ডের কাদা মাটিতে বিশেষ মডেলের বুট পরে খেলতে বাধ্য করা হয়। যে কারণে সিটির জোর প্রচেষ্টার পরও তিনি আর ম্যানচেস্টারে আসেননি। চলে যান স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায়। এবারের দলবদলে অবশ্য নেইমারের সেই ম্যানচেস্টারে (ইউনাইটেড) আসার গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। যদিও নতুন খবর হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত অন্তত আরেক মৌসুম নেইমার হয়তো পিএসজিতেই থাকছেন।

অদ্ভুত কারণে অ্যাস্টন ভিলাকে না বলেছিলেন আদেবায়োর

ইমানুয়েল আদেবায়োর
অ্যাস্টন ভিলা

২০১৫ সালে টটেনহাম থেকে ইমানুয়েল আদেবায়োরের ধারে অ্যাস্টন ভিলায় আসা প্রায় নিশ্চিত ছিল। টোগোর এ স্ট্রাইকার অ্যাস্টন ভিলায় যেতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রচারণামূলক কাজের জন্য ছবিও তুলে ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়ে বেঁকে আদেবায়োর। বলেছেন, তিনি অ্যাস্টন ভিলায় যাওয়ার ব্যাপারে মানসিকভাবে প্রস্তুত নন। এক সংবাদমাধ্যমকে আদেবায়োর বলেছিলেন, তাঁর যাজকের পরামর্শে এবং সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে অ্যাস্টন ভিলায় যাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সংকেত না পাওয়ায় তিনি ভিলা পার্কে যাননি।

কাছাকাছি গিয়েও রিয়ালের হতে পারেননি দে হেয়া

দাভিদ দে হেয়া
রিয়াল মাদ্রিদ

২০১৫ সালে দাভিদ দে হেয়া রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পথেই ছিলেন। সবকিছু চূড়ান্তও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি অদ্ভুত এক কারণে। শেষ মুহূর্তে চুক্তি যখন আলোর মুখ দেখার অপেক্ষায়, তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় নষ্ট ফ্যাক্স মেশিন। যার ফলে নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো আর জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। দলবদলের ইতিহাসে না হওয়া এই দলবদল ‘ফ্যাক্স মেশিন ইনসিডেন্ট’ নামে পরিচিত। রিয়ালে যেতে না পেরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি নবায়ন করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। এবারের দলবদলে ফ্রি ট্রান্সফার হিসেবে ইউনাইটেড ছেড়েছেন দে হেয়া।