ভূমিকম্পই ঘটে গেছে জোয়ানা সাঞ্জের জীবনে। এক বন্ধুর মাধ্যমে ২০১৫ সালে দানি আলভেজের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেখান থেকে সম্পর্ক গড়িয়েছে প্রণয়ে। ২০১৭ সালে দুজন পালিয়ে যান স্পেনের ইবিজায়, বিয়েটাও সেরে নেন সেখানেই। তার পর থেকে ভালোই কাটছিল সাঞ্জের জীবন। মডেলিং ও ফুটবলার স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্যজীবনটা উপভোগ করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এক ঝড়ে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল!
যৌন হয়রানির অভিযোগে কাল স্পেনের বার্সেলোনা শহরে গ্রেপ্তার হয়েছেন আলভেজ। সরকারি কৌঁসুলির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বার্সেলোনা আদালতের বিচারক ৩৯ বছর বয়সী রাইটব্যাককে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জামিনও পাবেন না আলভেজ। শিরোপাজয়ের দিক থেকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল এ ফুটবলার পালিয়ে যেতে পারেন, এ ভাবনা থেকে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
এক নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন এই বার্সেলোনা কিংবদন্তি। সেই নারীর অভিযোগ ছিল, ৩০ ডিসেম্বর বার্সেলোনার একটি নৈশ ক্লাবে আলভেজ তাঁকে যৌন হয়রানি করেছেন। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, আলভেজ শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত সপ্তাহে স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল আতেনা ৩-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আলভেজ বলেছিলেন, ‘আমি সেদিন নাচছিলাম এবং কারও ক্ষতি না করে ভালো সময় কাটাচ্ছিলাম। আমি জানি না, এই নারী কে? একজন নারীর সঙ্গে আমি কীভাবে এমনটা করতে পারি? নাহ্।’
জোয়ানা সাঞ্জের জীবন ওলট–পালট হয়েছে গত সপ্তাহে। গত বছরে তাঁর মায়ের শরীরে টিউমার ধরা পড়ে। গত সপ্তাহে মাকে হারানোর খবর জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই গ্রেপ্তার হলেন তাঁর স্বামী। সাঞ্জ অবশ্য আলভেজের পাশেই আছেন।
ইনস্টাগ্রামে হাতে হাত রাখার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘একসঙ্গে’। ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতেও একটি পোস্ট করেছেন সাঞ্জ। মায়ের মৃত্যু ও আলভেজের গ্রেপ্তার হওয়া তাঁর জীবনকে ওলট-পালট করেছে। সে জন্য লিখেছেন, ‘জীবনের দুটি স্তম্ভই হারিয়েছি।’
সাঞ্জ তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমকে বলছি, এ মুহূর্তে আমার গোপনীয়তাকে সম্মান করুন। এক সপ্তাহ আগে মা চলে গেছেন। ভাবতেই পারছি না, সে নেই। এর মধ্যে আমার স্বামী এমন পরিস্থিতিতে পড়ল। জীবনের দুটি স্তম্ভই হারালাম। অন্যদের দুঃখের খবর আঁতিপাঁতি করে না খুঁজে একটু সহমর্মিতাও দেখাতে পারেন।’
পেশাদার ফুটবলে ৪৬ শিরোপাজয়ী আলভেজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে ৪ জানুয়ারি। এর পর থেকেই আলভেজের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাঞ্জ। টিভি চ্যানেল আতেনা ৩–এর অনুষ্ঠান ‘ইয়াহোরা সনসোলেস’-এ গিয়ে সাঞ্জ এর আগে বলেছেন, ‘আমি আমার স্বামীকে চিনি। কীভাবে সাক্ষাৎ হয়েছে, সেটাও জানি। সে অন্যদের কতটা সম্মান করে, তা–ও জানি। কারণ, আমার সঙ্গে পরিচয়ের মুহূর্তে সে আমাকে অসম্মান করেনি। নারীরা কীভাবে তাঁর দিকে এগোয়, সেটা কিন্তু আমিও দেখেছি। তারা যদি আমার সামনেই এমন করতে পারে, তাহলে আমার অনুপস্থিতিতে কী করে, তা ভাবতেও চাই না।’