বাংলাদেশ পুলিশেরর বিপক্ষে জিততে জিততে ড্র করেছে আবাহনী
বাংলাদেশ পুলিশেরর বিপক্ষে জিততে জিততে ড্র করেছে আবাহনী

প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ

গোলকিপারের ‘হাত ফসকে’ পয়েন্ট হারাল আবাহনী

দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই বাংলাদেশ পুলিশের এম এস বাবলু আতঙ্ক ছড়ালেন আবাহনীর রক্ষণে। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে কোচ আরিস্তিকা চিওবার বাজির ঘোড়া প্রায় হয়েই যাচ্ছিলেন। কিন্তু একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও গোল করতে পারলেন না। পরের মিনিটে সেই এম এস বাবলুরই হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট। পুলিশের ডাগআউটে তখন আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস। ১০ মিনিটে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ার পর এমন দুটি সুযোগ নষ্ট, আক্ষেপ তো হবেই। এরপর মাহাদী ইউসুফ খানও একটি সুযোগ নষ্ট করলেন। একচ্ছত্র আধিপত্য তখন পুলিশের।

আবাহনীর রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ। কিন্তু গোলটিই হচ্ছিল না। কিন্তু যেই এম এস বাবলু দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন, ৮৭ মিনিটে তিনিই ভাগ্যক্রমে গোল পেয়ে গেলেন। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর একটি নিরীহ শট আবাহনীর গোলকিপার শহীদুল আলমের হাত ফসকে জালে ঢুকে গেল।

আজ পুলিশকে হারাতে পারলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে যেখানে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে পড়ার একটা সুযোগ ছিল আবাহনীর সামনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলকিপার শহীদুলের ভুলেই গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে ১–১ গোলে ড্র করে মাঠ ছেড়েছে আকাশি–নীল শিবির।

আবাহনী ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছিল কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্টের গোলে। ১০ মিনিটের মাথায় এনামুলের ক্রস থেকে পুলিশের উজবেক ডিফেন্ডার আবদুল্লায়েভ মিস হেড করলে বল স্টুয়ার্টের সামনে পড়ে। লিগে নিজের ১২তম গোলটি করতে কোনো ভুল করেননি স্টুয়ার্ট । প্রথমার্ধে পুলিশ তেড়েফুঁড়ে শুরু করলেও যত সময় গড়িয়েছে, ততই খেই হারিয়েছে। কিন্তু পুলিশের দুর্বলতার সুযোগ আবাহনী সেভাবে নিতে পারেনি। গোলের সংখ্যা বাড়েনি। বাড়বে কীভাবে, আবাহনী যে পরিষ্কার সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। প্রথমার্ধে পুলিশ আক্রমণে উঠলেও সেগুলো বাঁধা পেয়েছে আবাহনী রক্ষণে।

পুলিশকে পয়েন্ট এনে দিয়ে ম্যাচ সেরা এম এস বাবলু

দ্বিতীয়ার্ধে কাজেম শাহ কিরমানি ও এম এস বাবলুকে নামিয়ে পুলিশের খেলাই বদলে যায়। একের পর এক আক্রমণে উঠতে থাকে তারা। ভেনেজুয়েলিয়ান এডওয়ার্ড মরিও ও কলম্বিয়ান ফুটবলার মাতেও পালাসিওর সঙ্গে শাহ কাজেম, এম এস বাবলু আর ইসমাইল হোসেন। আবাহনীর রক্ষণকে আতঙ্কে রেখেছিলেন। কিন্তু তারপরও গোল পাচ্ছিল না পুলিশ। বল লক্ষ্যেই রাখতে পারছিল না পুলিশের ফরোয়ার্ডরা। এই সময় আবাহনীও কিছুটা চাপে পড়ে যায়। তারাও সেভাবে আক্রমণে উঠতে পারেনি।

কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। আগেই বলা হয়েছে এম এস বাবলু ৫৬ ও ৫৭ মিনিটে দুটি সুযোগ নষ্ট করেন। দুটি থেকেই গোল পেতে পারত পুলিশ। মেহেদী ইউসুফ আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ৬৬ মিনিটে। পুলিশের ডাগআউট যখন আরেকটি হারের অপেক্ষায় তখনই চমক! বাবলুর নিরীহ শটে শহীদুল আলমের হাত ফসকালো।

যে গোলটি শহীদুল খেয়েছেন, সেটি দেখে মনে পড়ে গেছে ২০১৮ সালের সাফ ফুটবলে জাতীয় দলের গোলকিপার হিসেবে নেপালের বিপক্ষে সেই বাজে গোল হজমের দৃশ্যটি। শহীদুল আলমের ক্যারিয়ারে আরও একটি বাজে গোল হজমের গল্প লেখা হলো।

পুলিশ গোল আদায় করে নিল দ্বিতীয়ার্ধে ভালো ফুটবল খেলেই। এই ম্যাচ ড্র করে ১৫ ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ২৬। এক ম্যাচ কম খেয়ে মোহামেডান ২৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। পুলিশ ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে আছে তালিকার চতুর্থ স্থানে। আগামীকাল ময়মনসিংহে বসুন্ধরা কিংসের মুখোমুখি হবে মোহামেডান। সে ম্যাচে কিংস জিতলে টানা পঞ্চমবারের মতো লিগ শিরোপা নিশ্চিতই করে ফেলবে তারা। তবে আজ আবাহনীর ড্রতে মোহামেডানের লিগ রানার্সআপ হওয়ার সুযোগ বেড়ে গেল আরও।