কেমন হলো এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র—প্রশ্নটি যদি করা হয় ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলাকে, তিনি হয়তো মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলবেন, ‘দারুণ!’ গার্দিওলার জন্য গ্রুপ পর্বটা সত্যিই দারুণ হওয়ার কথা। ‘জি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ যে লাইপজিগ, রেড স্টার বেলগ্রেড, ইয়াং বয়েজের মতো তুলনামূলক ‘দুর্বল’ দল!
কিন্তু একই প্রশ্ন যদি পিএসজির কোচ লুইস এনরিকেকে করা হয়, তিনি হয়তো ভদ্রতার খাতিরে কাষ্ঠ একটা হাসি দেবেন। এরপর হয়তো বলবেন, ‘গ্রুপিং কেমন হলো, সে তো দেখতেই পাচ্ছেন। এটা আবার আমাকে জিজ্ঞেস করার কী আছে!’
গতকাল মোনাকোতে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্রর পর আটটি গ্রুপ দেখে যে কেউই বলবেন, একটি গ্রুপ ছাড়া বাকি সাতটিই মোটামুটি সহজ। কোন গ্রুপ থেকে কোন দুই দল পরের রাউন্ডে যাবে, ওই সাত গ্রুপে সেটা অনুমান করতে পারবে বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমীই। কোনো অঘটন ঘটে গেলে সেটা পরের কথা।
শুনুন, এটা কঠিন। কিন্তু এমন নয় যে এটা শুধু আমাদের জন্য কঠিন। নিশ্চিত করেই এটি কঠিন গ্রুপ। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, আমরা কী করতে চাই, কী পছন্দ করি? টুর্নামেন্টটা বিশ্বের সেরা প্রতিযোগিতা। খেলোয়াড় ও কোচরা বড় ম্যাচ খেলতে পছন্দ করে। আমি সব সময় ইতিবাচক জিনিসই নিই।নাসের আল খেলাইফি, পিএসজি সভাপতি
কিন্তু পিএসজির গ্রুপ নিয়ে সেটা বলার উপায় নেই। ‘এফ’ গ্রুপে পিএসজি প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে সাতবারের ইউরোপসেরা এসি মিলান, ১৯৯৭ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী বরুসিয়া ডর্টমুন্ড আর দুই দশক পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফেরা এবং নিজেদের দারুণভাবে গুছিয়ে নেওয়া নিউক্যাসল ইউনাইটেডকে।
পিএসজির গ্রুপটিকে এরই মধ্যে ‘মৃত্যুকূপ’ বলে আখ্যা দিয়েছে অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল পিএসজির সভাপতি নাসের আল খেলাইফিকেও। গ্রুপটি যে কঠিন, সেটা তিনিও মানছেন। এর সঙ্গে পাদটীকা হিসেবে তিনি একটা ‘কিন্তু’ জুড়ে দিয়েছেন।
কী খেলাইফির সেই ‘কিন্তু’, শোনা যাক তাঁর কাছ থেকেই, ‘শুনুন, এটা কঠিন। কিন্তু এমন নয় যে এটা শুধু আমাদের জন্য কঠিন।’ খেলাইফি এরপর যোগ করেন, ‘নিশ্চিত করেই এটি কঠিন গ্রুপ। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, আমরা কী করতে চাই, কী পছন্দ করি? টুর্নামেন্টটা বিশ্বের সেরা প্রতিযোগিতা। খেলোয়াড় ও কোচরা বড় ম্যাচ খেলতে পছন্দ করে। আমি সব সময় ইতিবাচক জিনিসই নিই।’
খেলাইফি এরপর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে তৈরি থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘কোচিং স্টাফ, খেলোয়াড়, সমর্থক—সবাইকে এই গ্রুপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এর মানে, আমাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। সবকিছু নিংড়ে দিতে হবে।’
পিএসজির সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই খেলাইফির, ‘সর্বশেষ তিন ম্যাচে আমরা যেমন খেলেছি, আমার মনে হচ্ছে ঠিক পথেই আছি। খেলার ধরন, কোচ...আমি নিশ্চিত যে আমরা আরও উন্নতি করব। খেলোয়াড়েরাও শারীরিকভাবে ও টেকনিক্যালি উন্নতি করবে। আমরা উচ্চাকাঙ্ক্ষী একটা ক্লাব। আমরা পরিশ্রম করব। কিন্তু আমি মনে করি, একটা একটা করে ম্যাচ ধরে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।’
চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বশেষ আসরে শেষ ষোলোয় থেমে গিয়েছিল পিএসজির অভিযান।