রোনালদোর এজেন্ট হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন হোর্হে মেন্ডেস
রোনালদোর এজেন্ট হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন হোর্হে মেন্ডেস

ফিফার বিরুদ্ধে মামলায় হেরে গেলেন ফুটবল এজেন্টরা

ফুটবলের শিল্প থেকে যান্ত্রিকতার পথে যাত্রায় ফুটবলাররা ক্রমেই আবির্ভূত হয়েছেন ‘পণ্য’ হিসেবে। দলবদলের বাজারে প্রতিবছর তাঁরা একটি ক্লাব থেকে বিক্রি হন অন্য ক্লাবে। আর ফুটবলারদের বেচাকেনার প্রক্রিয়া তদারকির কাজ করেন ফুটবল এজেন্টরা। সাম্প্রতিক কালে ফুটবলে তাই বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন এই ফুটবল এজেন্টরা। ফুটবলারদের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ তাঁদের এনে দিয়েছে তারকা খ্যাতিও।

তবে এবার ফিফার কাছ থেকে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন এজেন্টরা। কমিশন নেওয়ার ক্ষেত্রে ফিফার নির্ধারণ করে দেওয়া হার এবং এজেন্ট হওয়ার জন্য পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার নিয়মের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) আপিল করে হেরে গেছেন তাঁরা। সিএএসের দেওয়া রায় ফিফার পক্ষে যাওয়ায় এখন নির্ধারিত কমিশন হার মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে তাঁদের। সঙ্গে দিতে হবে এজেন্ট হওয়ার জন্য পরীক্ষাও।

এজেন্টদের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে গত জানুয়ারি নতুন নীতি প্রণয়ন করে ফিফা। অক্টোবরে কার্যকর হতে যাওয়ায় এই আইনে বলা আছে, ফুটবলারদের দলবদলের ক্ষেত্রে ফিফা নির্ধারিত হারের বেশি কমিশন নেওয়া যাবে না এবং কেউ এজেন্ট হতে চাইলে তাঁকে পরীক্ষায় পাস করেই এই পেশায় আসতে হবে। ফিফার এই আইন মানতে চাননি ফুটবল এজেন্টরা।

জুরিখভিত্তিক এজেন্টদের সংগঠন প্রফেশনাল ফুটবল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (পিআরওএফএএ) এই নীতির বিরুদ্ধে সিএএসে আপিল করে। কিন্তু আপিলেও ফিফার পক্ষে রায় দিয়েছে সিএএস। পিআরওএফএএর দাবি ছিল ফিফা কর্তৃক আরোপিত নিয়মগুলোর মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।

পগবার সঙ্গে তাঁর এজেন্ট পিমেন্টা

এদিকে রায় বিপক্ষে যাওয়ার পর এজেন্টদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘চরম হতাশার’ কথা জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, ‘পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে পিআরওএফএএ রায়টি গভীরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। পাশাপাশি তারা এই নীতির বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আইনি লড়াইকে সমর্থন দিয়ে যাবে। বিশেষ করে কমিশন হার সংকুচিত করার বিরুদ্ধে নিজেদের এই লড়াই চালিয়ে যাবে।’

ফিফার দেওয়া নিয়মে ২ লাখ ডলারের বেশি অর্থমূল্যের দলবদলের জন্য ৩ শতাংশ এবং ২ লাখ ডলারের কম টাকার জন্য ৫ শতাংশ কমিশন নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এজেন্ট যখন বিক্রেতা ক্লাবের জন্য কাজ করবে, তখন কমিশনের হার হবে ১০ শতাংশ।

এই নিয়ম অনুযায়ী এজেন্টদের অবশ্যই লাইসেন্স থাকতে হবে, আর এই লাইসেন্স পেতে হলে তাদের ১ অক্টোবরের মধ্যে পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে। এজেন্টরা প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েছিলেন গত এপ্রিলে। যেখানে ৩ হাজার ৮০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন মাত্র ৫২ শতাংশ। এ ছাড়া আরও কিছু বিষয়কে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যেখানে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়াতে একাধিক প্রতিনিধিত্ব নিষিদ্ধ করা এবং এজেন্টের ফি ফিফার ফিন্যান্সিয়াল ক্লিয়ারিং হাউসের মধ্যে দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সিএএসের রায়ের প্রতিক্রিয়া ফিফার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ফিফা এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছে, যা ফিফা ফুটবল এজেন্ট রেগুলেশনের (এফএফএআ) আইনানুগ হওয়া ও বৈধ হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। রায়টি এফএফএআরের ক্ষেত্রে ফিফার অবস্থান যে যুক্তিসংগত, সেই নিশ্চয়তাও প্রদান করে। আর অনুপাত নিয়ন্ত্রণের এই উদ্যোগ খেলোয়াড়দের দলবদলের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ব্যর্থতার সমস্যার সমাধানও করবে।’