বিশ্বকাপ জিতেছেন ২০১৮ সালে। ২০২১ সালে জিতেছেন উয়েফা নেশনস লিগ। কিন্তু ফ্রান্স সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় ইউরোর শিরোপা এখনো অধরাই থেকে গেল কিলিয়ান এমবাপ্পের।
অথচ মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় কাল রাতে এমবাপ্পের পাস থেকে বল পেয়ে ফ্রান্সকে এগিয়ে দিয়েছিলেন রান্দাল কোলো মুয়ানি। কিন্তু স্পেন পাল্টা জবাব দিতে খুব বেশি সময় নেয়নি। চার মিনিটের ব্যবধানে লামিনে ইয়ামাল ও আত্মঘাতী গোলে (জুলস কুন্দে) পিছিয়ে পড়ে ফ্রান্স। শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয়।
সর্বশেষ ২০০০ সালে দিদিয়ের দেশমের অধিনায়কত্বে ইউরোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। সেই দেশম জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বে আছেন এক যুগ হয়ে গেল। কিন্তু কোচের ভূমিকায় মহাদেশীয় শিরোপা এখনো জেতা হলো না।
দারুণ একটা দল নিয়েও সেমিফাইনাল থেকে ফ্রান্সের ছিটকে পড়ার পেছনে অনেকে অধিনায়ক এমবাপ্পের ওপরও দায় চাপাতে পারেন। এবারের ইউরো খুব একটা ভালো কাটেনি তাঁর। টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচ খেলে গোল পেয়েছেন মাত্র একটি, সেটাও গ্রুপের তলানির দল পোল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে।
ইউরোয় প্রত্যাশা অনুযায়ী যে পারফর্ম করতে পারেননি, সে কথা স্বীকার করেছেন এমবাপ্পে। টু্র্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্স মূল্যায়নের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার টুর্নামেন্ট? এটা কঠিন ছিল। এটা আমার ব্যর্থতা। আমরা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে খেলতে এসেছিলাম; আমিও চ্যাম্পিয়ন হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা পারিনি। ব্যর্থতা স্বীকার করতেই হবে।’
ফ্রান্সের বিদায়ের বেদনা ভুলতে আপাতত ছুটিতে যেতে চান এমবাপ্পে। চাঙা হয়ে ফিরতেই কিছুদিন ফুটবল থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘এটা ফুটবল। এখান থেকে আমাদের সামনে এগোতে হবে। সামনে লম্বা সময় পড়ে আছে। আপাতত কিছুদিনের জন্য ছুটি কাটাতে যাচ্ছি, আমার বিশ্রাম দরকার। এটা (অবকাশযাপন) আমার অনেক উপকারে দেবে। আমি আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরার চেষ্টা করব।’
এবারের ইউরোয় এমবাপ্পের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। ডুসেলডর্ফে অস্ট্রিয়ায় বিপক্ষে ফ্রান্সের প্রথম ম্যাচের শেষ দিকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার কেভিন দানসোর সঙ্গে সংঘর্ষে নাক ভেঙে যায় এমবাপ্পের। রক্তাক্ত এমবাপ্পেকে মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ঝুঁকি এড়াতে এমবাপ্পেকে কিছুদিন মাস্ক পরে খেলতে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি পোল্যান্ড, বেলজিয়াম ও পর্তুগালের বিপক্ষে মাস্ক পরেই খেলেন। কিন্তু মুখ ঢেকে খেলা অস্বস্তিকর মনে হওয়ায় কাল স্পেনের বিপক্ষে মাস্ক ছাড়াই খেলতে নামেন।
দুঃসময়ে শিষ্যের পাশে দাঁড়িয়ে কোচ দেশম মাস্কের ব্যাপারটিও সামনে এনেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরে খেলা ওর (এমবাপ্পের) জন্য সহজ ছিল না। এটা ওর দৃষ্টিশক্তি সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল এবং ওর খেলতে অসুবিধা হচ্ছিল। সে মাস্ক ছাড়া খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিল। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর সে (স্পেনের বিপক্ষে) এটা ছাড়াই খেলেছে।’
ফ্রান্সের পরের ম্যাচ আগামী ৬ সেপ্টেম্বর নেশনস লিগে ইতালির বিপক্ষে। এমবাপ্পে এর অনেক আগেই ক্লাব ফুটবলে ফিরবেন। আগামী মৌসুম থেকে তাঁকে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে।