‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের এই সংজ্ঞার মতোই যেন শেষ হচ্ছে না এবারের ব্যালন ডি’অরের গল্প। নাটকের মঞ্চায়নের শুরুটা হয়েছিল ২৮ অক্টোবর।
সেদিন অনেককেই অবাক করে দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে পেছনে ফেলে ব্যালন ডি’অর জেতেন রদ্রি। ফলে উদ্যাপনের সব প্রস্তুতি নিয়েও ভিনিসিয়ুসকে থাকতে হয়েছে বিষণ্ন মন নিয়ে। এমনকি সেদিন ব্যালন ডি’অরের অনুষ্ঠানেও যায়নি ভিনিসহ রিয়াল মাদ্রিদ দল।
ভিনির সেই না পাওয়ার যন্ত্রণা নিশ্চয়ই আরও বেড়েছে গতকাল রাতে ভোট গণনার চিত্র দেখে। রদ্রির কাছে মাত্র ৪১ পয়েন্টে হেরেছেন তিনি। রদ্রি ও ভিনির মধ্যে কে বেশি যোগ্য, তা নিয়ে অবশ্য চাইলে লম্বা সময় ধরে বিতর্ক করাই যায়।
কিন্তু সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের কোপা ট্রফি কে জিতবেন, তা নিয়ে বোধ হয় সংশয় ছিল সামান্যই। এমনকি কেউ কেউ তো লামিনে ইয়ামালকে মূল লড়াইয়েও দেখে ফেলেছিলেন। গত মৌসুমে ইয়ামালের পারফরম্যান্সের কারণেই তাঁকে ঘিরে ছিল রোমাঞ্চ।
‘ফ্রান্স ফুটবল’–এর প্রকাশিত ভোটের হিসাবও সেই সাক্ষ্য দিচ্ছে। সাবেক ব্যালন ডি’অরজয়ীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত যে ২৩ জনের ভোটে পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ২২ জনই ভোট দিয়েছেন ইয়ামালকে। কেবল একজন বেছে নিয়েছেন ভিন্ন কাউকে।
ইয়ামালকে কোপা ট্রফির সেরা হিসেবে যাঁরা বেছে নিয়েছেন, সেই দলে আছেন লিওনেল মেসি, রুদ খুলিত, লোথার ম্যাথাউস, লুইস ফিগো, মাইকেল ওয়েন, পাভেল নেদভেদ, রোনালদিনিও, কাকা, লুকা মদরিচ, করিম বেনজেমারা।
ক্রীড়া পোর্টাল ‘গিভ মি স্পোর্টস’ যে ২৩ জনের ভোটের হিসাব দিয়েছে, সেই তালিকা অনুযায়ী শুধু একজনই ইয়ামালের বাইরে কাউকে পছন্দ করেছেন। তিনি ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও।
রোনালদো বেছে নিয়েছেন মৌসুমের শুরুতে জিরোনা থেকে ম্যানচেস্টার সিটিতে আসা স্বদেশি সাভিনিওকে। ‘দ্য ফেনোমেনন’ খ্যাত সাবেক এই ফুটবলারের দ্বিতীয় পছন্দ ছিলেন ইয়ামাল এবং তৃতীয় পছন্দ ছিলেন আর্দা গুলের।
ইয়ামালের চেয়ে বেশ পিছিয়ে থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে ভালো করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গুলের, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোবি মাইনু, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আলেসান্দ্রো গারনাচোরা।
সবার দৃষ্টি অবশ্য ছিল মেসি কাকে ভোট দিয়েছেন সেদিকে। যার প্রথম ভোট যে ইয়ামাল পেয়েছেন, তা তো জেনেই গেছেন। ৮ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই মহাতারকার অন্য দুটি ভোট গেছে বার্সার পাউ কুবারসি এবং ইউনাইটেডের স্বদেশি গারনাচোর দখলে। অন্যদের মধ্যে রোনালদিনিও দ্বিতীয় ও তৃতীয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাভিনিও ও জোয়াও নাভাসকে।
এ ছাড়া পয়েন্টের হিসাবেও বিশাল ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলেছেন ইয়ামাল। তিনি সব মিলিয়ে পেয়েছেন ১১৩ পয়েন্ট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গুলের পেয়েছেন মাত্র ২৬ পয়েন্ট। আর তিনে থাকা মাইনু পেয়েছেন ২০ পয়েন্ট।