লিওনার্দো হারাকে (বাঁয়ে) গুলি করার হুমকি দিয়েছে ভেলেজ সার্সফিল্ডের সমর্থকেরা
লিওনার্দো হারাকে (বাঁয়ে) গুলি করার হুমকি দিয়েছে ভেলেজ সার্সফিল্ডের সমর্থকেরা

আর্জেন্টিনায় ফুটবলারদের মারধর, গুলির হুমকি

বিদায়টা মধুর হয়নি দিয়েগো গদিনের। পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটায় যে হেরেছে তাঁর দল ভেলেজ সার্সফিল্ড। আর্জেন্টিনার প্রিমেরা ডিভিশনে উরকানের কাছে হেরেছে তারা।

তবে গদিন নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন! রোববারের সেই ম্যাচের পর তো কোনো ঝঞ্ঝাট ছাড়াই বিদায় বলে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন উরুগুইয়ান তারকা। তবে সেই সৌভাগ্য হয়নি তাঁর কয়েকজন সতীর্থের। বাড়ি ফেরার আগে রীতিমতো সশস্ত্র আক্রমণের শিকার হয়েছেন তাঁরা। প্রতিপক্ষ নয়, নিজ দলের সমর্থকেরাই আক্রমণ করেছে ভেলেজ সার্সফিল্ডের খেলোয়াড়দের।

সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে কোনোরকমে অবনমন এড়িয়েছে ১০ বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন সার্সফিল্ড। ২৭ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করা ক্লাবটি ২৮ দলের লিগে হয়েছে ২৫তম। পুরো লিগে মাত্র ৫টি ম্যাচ জিতেছে সার্সফিল্ড, ড্র করেছে ১২টিতে, হেরেছে বাকি ১০ ম্যাচে। দলের এমন পারফরম্যান্সে খেপে গিয়েই খেলোয়াড়দের ওপর চড়াও হয়েছে সমর্থকেরা।

লিগে ২৮ দলের মধ্যে ২৫তম হয়েছে ভেলেজ সার্সফিল্ড

সার্সফিল্ডের খেলোয়াড়েরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন ভিলা অলিম্পিকা স্টেডিয়ামের বাইরে। স্টেডিয়াম থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি ফিরতে খেলোয়াড়েরা বের হতেই রোষানলে পড়েন সমর্থকদের। গাড়িতে করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়েই চড়াও হয় হামলাকারীরা।

সার্সফিল্ডের স্ট্রাইকার জিয়ানলুকা প্রেস্তিয়ান্নি গতকাল ইএসপিএনকে ঘটনার বর্ণনা দেন, ‘গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরতে স্টেডিয়াম থেকে যখন বের হলাম, ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে ছিল এলাকাটা। এমন সময় “ব্রাভা ব্রাভা” সমর্থকগোষ্ঠীর কয়েকটি গাড়ি আমাদের সামনে চলে এল। পাঁচ থেকে ছয়টি তো হবেই। তারা আমার জ্যাকেট ধরে মুখে দুবার আঘাত করে। খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’

পিস্তল হাতে খেলোয়াড়দের কীভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেটিও জানিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার, ‘ওরা না আবার পিছু নেয়, এই ভয়ে সতীর্থদের কেউ তখন আর বাড়ি যেতে চাইছিল না। ওরা তো আমাদের একজনকে এটাও বলল, “গাড়ি থেকে বের হও, নইলে পায়ে দুটি গুলি করব।”’ এমন অভিজ্ঞতার পর সার্সফিল্ড ছাড়ার চিন্তাভাবনার কথাও জানিয়েছেন প্রেস্তিয়ান্নি।

ভেলেজ সার্সফিল্ডেই ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা খেলেছেন উরুগুয়ের দিয়েগা গদিন

যে খেলোয়াড়কে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়, তাঁর নাম লিওনার্দো হারা। স্থানীয় এক বেতারকেন্দ্রে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন একটা সময় বোকা জুনিয়র্সে খেলা এই ডিফেন্ডার, ‘ওরা আমার সামনে একটি গাড়ি আড়াআড়ি রাখল। এরপর আমাকে গাড়ি থেকে নামতে বলে। আমার পায়ে গুলির করার হুমকিও দেয় তারা।’

ওই ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন ফরোয়ার্ড সান্তিয়াগো কাস্ত্রো ও ডিফেন্ডার ফ্রান্সিসকো ওর্তেগাও।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ ঘটনার পর ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও করেননি খেলোয়াড়েরা। তবে পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়েই তদন্ত শুরু করেছে ও খেলোয়াড়দের কাছে ঘটনার বর্ণনা চেয়েছে। দলটির কোচ সেবাস্তিয়ান মেন্দেজ ক্লাবের পরিচালকদের জানিয়ে দিয়েছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে অনুশীলনে ফিরবেন না তাঁরা।