পিএসজি তারকা মেসি
পিএসজি তারকা মেসি

‘পিএসজি সমর্থকদের দুয়োর জন্য মেসিই দায়ী’

অ্যাজাকসিওর বিপক্ষে ম্যাচে লিওনেল মেসির উদ্দেশে শিস দিয়েছেন পিএসজির সমর্থকেরা। সেই দুয়ো কিংবা শিসের অর্থ পরিষ্কার, তোমাকে আমাদের আর পছন্দ হচ্ছে না! ব্যাপারটা মেসির মাপের একজন ফুটবলারের জন্য হতাশার। পিএসজির সমর্থকদের এই আচরণ এখন ফুটবল দুনিয়াতে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের বিষয়।

ক্লাব কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সৌদি আরবে গিয়েছিলেন মেসি। সৌদি আরবের পর্যটনদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু ক্লাবের অনুশীলন বাদ দিয়ে সৌদি সফরকে একেবারেই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি পিএসজির কাছে। মেসিকে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। কিন্তু মেসি সৌদি সফরের কারণ ব্যাখ্যা করে ক্ষমা চাইলে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে তাঁকে খেলানো হয় অ্যাজাকসিওর বিপক্ষে ফ্রেঞ্চ লিগের ম্যাচ।

সে ম্যাচের আগেই অবশ্য আরেক খবর বোমা ফাটায়। ফ্রান্সেরই বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, সৌদি আরবের কোনো ক্লাবের সঙ্গে (ক্লাবের নাম তারা বলেনি) চুক্তি নাকি চূড়ান্তই করে ফেলেছেন। তিনি আগামী মৌসুমে সৌদি আরবে খেলবেন। এই খবর মেসিকে বেশ বিব্রতকর অবস্থাতেই ফেলে।

পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এমন খবর! স্বাভাবিকভাবেই মেসির ঘনিষ্ঠজনেরা তা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু সেটি হলে কী হবে, মেসি বার্সেলোনায় ফেরত যেতে চান, বার্সেলোনাও তাঁকে নিতে মরিয়া; নিজের বেতন আকাশে চড়িয়ে পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তি তিনি ঝুলিয়ে রেখেছেন, এসব তো এখনকার প্রতিদিনের খবর।

কিছুদিন আগে সৌদি আরবে গিয়ে ছবিটি তুলেছিলেন মেসি

ফ্রান্সের সাবেক কোচ রেমন্ড ডমেনেখের মতে, মেসি নিজ দোষেই পিএসজির সমর্থকদের বিরাগভাজন হয়েছেন। অ্যাজাকসিওর বিপক্ষে সমর্থকেরা যে তাঁর উদ্দেশে শিস দিয়েছে, এ জন্য আর্জেন্টাইন তারকাই দায়ী বলে মনে করেন ডমেনেখ।

সম্প্রতি ফরাসি সংবাদমাধ্যম লেকিপের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ‘লেকিপ ডু সোয়ার’ নামে এক অনুষ্ঠানে ডমেনেখ বলেন, ‘মেসি পিএসজিতে সফল হয়নি। পিএসজির সমর্থকদের সাফল্যও উপহার দিতে পারেনি। এখন সে কারণেই মেসিকে পছন্দ করছে না ক্লাবের সমর্থকেরা। এটা একটা বড় সমস্যা। যেভাবেই হোক, পরিস্থিতিটা মেসিই তৈরি করেছে। সমর্থকেরা যে তাকে দুয়ো দিচ্ছে, তার উদ্দেশে শিস বাজাচ্ছে, এ জন্য সে-ই দায়ী।’

ডমেনেখ মনে করেন, সাফল্য ছাড়াও কোনো ক্লাবের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সমর্থকদের একধরনের সম্পর্ক তৈরি হতে পারে। মেসি এটা গত দুই বছরে একেবারেই করেননি বলে মনে করেন ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কোচের দায়িত্বে থাকা ডমেনেখ, ‘খেলা শেষ হলেই সে সোজা হেঁটে ড্রেসিং রুমে চলে যায়। সমর্থকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হয়। তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাত নাড়তেও তাকে খুব কম দেখা গেছে। সে দর্শকদের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্ক তৈরি করেনি। সুতরাং, এমন পরিস্থিতি হওয়াটাই স্বাভাবিক।’

পিএসজির সমর্থকদের সঙ্গে মেসির ঠান্ডা সম্পর্ক প্রথম মৌসুম থেকেই। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছিল পিএসজি। ফ্রেঞ্চ লিগে এরপর বোর্দোর বিপক্ষে খেলতে নামার আগে মেসির উদ্দেশে সমর্থকেরা দুয়ো দিয়েছিল।

এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগেও বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় হয়ে যায় পিএসজির। দুয়ো পিছু ছাড়েনি এবারও। তবে সৌদি আরবে যাওয়ার পর মেসির বিরুদ্ধে পিএসজির সমর্থকগোষ্ঠীর মিছিল বের করে তাঁকে ‘ভাড়াটে’ বলে স্লোগান দেওয়ার বিষয়টি ছিল নজিরবিহীন।