ফেডারেশন কাপের তিন সেমিফাইনালিস্ট নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই—মোহামেডান স্পোর্টিং, বসুন্ধরা কিংস, বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। চতুর্থ দল হিসেবে আজ ঢাকা আবাহনী লিমিটেড সেমিফাইনালে উঠল। কিংস অ্যারেনায় ধানমন্ডির ক্লাবটি ৩–১ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসিকে। আবাহনীর হয়ে তিনটি গোল তিন বিদেশির—কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, ওয়াশিংটন বান্দ্রা ও জোনাথন ফার্নান্দেজের।
আগামী ৭ মে মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে মোহামেডান মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির। মুন্সিগঞ্জেই ১৪ মে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আবাহনীর প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংস।
ফর্টিস আজ আবাহনীর সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। তিনটি গোলই হয়েছে তাদের রাইট উইংয়ের দুর্বলতায়। আবাহনীর তিন বিদেশি জোনাথন ফার্নান্দেজ, ওয়াশিংটন বান্দ্রা আর কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্টের পারস্পরিক বোঝাপড়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে মধ্যমাঠে মোহাম্মদ হৃদয় ও আলমগীর মোল্লার পারফরম্যান্স। ব্রাজিলিয়ান জোনাথন ও ওয়াশিংটন—দুজনই ছিলেন আকাশি–নীলদের আক্রমণের প্রাণভোমরা। ফর্টিসের রক্ষণ তাঁদের সামাল দিতে পারেনি। ফর্টিসের ইউক্রেনিয়ান মিডফিল্ডার ভ্যালেরি, ফরহাদ মিয়া ও দিদারুল আলমদের আক্রমণগুলো আবাহনীর রক্ষণে চিড় ধরাতে পারেনি।
কৌশলগত ভুলও ছিল ফর্টিসের। তৃতীয় গোলটি আবাহনী পেয়েছে ফর্টিস খেলোয়াড় বদল করতে দেরি করায়। ম্যাচে তখন ফর্টিস ১০ জন নিয়ে খেলেছে।
ম্যাচের ৯ম মিনিটেই গোল পেয়ে যায় আবাহনী। গোলটি ছিল অসাধারণ। নিজেদের সীমানা থেকে ৬টি পাস খেলার পর কর্নেলিয়াস খুঁজে পান ফর্টিসের জাল। প্রথমে নিচের দিকে পাপন সিং ফর্টিসের খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে পাস দেন আবাহনীর আলমগীর মোল্লাকে। আলমগীর থেকে বল চলে যায় জোনাথন ফার্নান্দেজের কাছে। তিনি কিছু দূর বল এগিয়ে বাড়ান ওয়াশিংটনকে। এরপর ওয়াশিংটন ও জোনাথন নিজেদের মধ্যে আরেকটি পাস খেলেন। ওয়াশিংটন ডান দিক দিয়ে বল বাড়ান কর্নেলিয়াসের কাছে। সেন্ট ভিনসেন্টের এই ফরোয়ার্ড গোল করতে ভুল করেননি।
প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে ওয়াশিংটন আরও একটি চমৎকার গোল করেন। এই গোলেও অবদান জোনাথনের। মধ্যমাঠ থেকে ডান দিকে পাস বাড়িয়েছিলেন ওয়াশিংটনকে। তিনি বলটা একাই টেনে নিয়ে আবাহনীকে এগিয়ে দেন ২–০ গোলে।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ফর্টিস ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু আক্রমণ হলেও সেগুলো আবাহনীর রক্ষণভাগের রিয়াদুল হাসান, মেরাজ হোসেন কিংবা ইরানি মিলাদ শেখের প্রতিরোধ ভাঙতে পারেনি। এর মধ্যে আবাহনীও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছিল। সেগুলো থেকে গোলও হতে পারত।
ম্যাচে ৭৯ মিনিটে স্কোরলাইন ৩–০ করেছে আবাহনী। এই গোলও নিচ থেকে করা বিল্ডআপ এবং জোনাথন ফার্নান্দেজ ও ওয়াশিংটনের দারুণ বোঝাপড়ার সমন্বয়। এ সময় খেলোয়াড় বদল করতে দেরি করায় ফর্টিস খেলেছে ১০ জন নিয়ে। বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে যান ওয়াশিংটন। তিনি ফর্টিসের বক্সে ঢুকেও শট নেননি, বল ঠেলে দেন কর্নেলিয়াসের দিকে। কর্নেলিয়াস গোলে না মেরে পাস দেন আরও সুবিধাজনক জায়গায় থাকা জোনাথনকে। সহজেই ম্যাচের তৃতীয় গোলটি আদায় করেন জোনাথন।
ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে স্কোর লাইন ৩–১ করেন ফর্টিসের সাজ্জাদ হাসান জুম্মন।