ম্যানচেস্টার সিটির স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ড
ম্যানচেস্টার সিটির স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ড

বিশ্বকাপে খেলতে না পেরে ‘পাগল’ হয়ে ওঠা হলান্ড থেকে সাবধান

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কাল রাতে লিডস ইউনাইটেডকে ৩–১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। যথারীতি গোল পেয়েছেন সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে দ্রুততম ২০ গোলের রেকর্ডটিও কাল নিজের করে নিয়েছেন নরওয়ের এই তারকা।

কিন্তু সিটির প্রতিপক্ষ দলগুলোর ডিফেন্ডারদের জন্য এর চেয়েও বড় দুঃসংবাদ আছে। সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা মনে করেন, হলান্ড এখনো নিজের সেরাটা দেখাননি। আর হলান্ডকে পেয়ে বসেছে জেদ। বিশ্বকাপে খেলতে না পারার ক্ষোভটা হলান্ড যেন ক্লাব ফুটবলে মেটানোর পণ করেছেন। তা না হলে, জোড়া গোল করেও হলান্ড কেন আরও তিনটি গোল করতে না পারার আক্ষেপ করবেন!

বিশ্বকাপের পর প্রিমিয়ার লিগে এটাই ছিল সিটির প্রথম ম্যাচ। এর আগে লিগ কাপে লিভারপুলের বিপক্ষে সিটির জয়ের ম্যাচেও গোল করেছিলেন হলান্ড। কাল নেমেছিলেন শৈশব থেকে যে দলকে সমর্থন করেন, সেই লিডসের বিপক্ষে।

হলান্ডের বাবা আলফি হলান্ড লিডস ইউনাইটেড ছেড়ে সিটিতে যোগ দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর লিডসের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারে জন্ম আর্লিং হলান্ডের। শৈশব থেকেই লিডস ইউনাইটেডকে সমর্থন করেছেন। কাল সেই দলের বিপক্ষে গোল করে উদ্‌যাপন না করলেও এতটুকু ছাড় দেননি। বরং নিজের ব্যর্থতার জন্য দোষারোপ করেছেন নিজেকেই।

লিডসের রক্ষণে বারবার হানা দিয়েছেন আর্লিং হলান্ড

প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে রদ্রির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। বিরতির পর দুই দল মিলে করেছে আরও ৩ গোল। ৫১ ও ৬৪ মিনিটে দুটি গোল করেন হলান্ড। ৭৩ মিনিটে প্যাসকেল স্টুরিকের হেডে এক গোল শোধ করে লিডস। সিটির হয়ে মাত্র ১৪টি লিগ ম্যাচেই ২০ গোল হয়ে গেল হলান্ডের।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কোনো খেলোয়াড় এত দ্রুত ২০ গোল করতে পারেননি। এই লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩৪ গোলের রেকর্ড আছে অ্যালান শিয়ারার ও অ্যান্ডি কোলের। হলান্ড এবার রেকর্ডটি যে ভেঙে ফেলবেন, তার পক্ষে বাজি ধরার লোকের সংখ্যাই বেশি হবে। বরং বলা উচিত, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে গোলের রেকর্ড হলান্ড কোন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন কে জানে!

নরওয়ে তারকার কথা শুনলেই তাঁর গোলক্ষুধার গভীরতাটা বোঝা যায়। দুই গোল করা ছাড়াও লিডস গোলকিপার ইলান মেসলিয়ারকে কাল তিনবার একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ম্যাচ শেষে আমাজন প্রাইমকে হলান্ড বলেছেন, ‘সত্যিটা হলো, আমি ৫ গোল করতে পারতাম। তবে দলের জয়টাই বড়। আর্সেনাল এখন শীর্ষে। ওদের নামাতে হবে। তবে আমি যেহেতু স্ট্রাইকার তাই আরও বেশি গোল করতে পারতাম। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাকে আরও অনুশীলন করতে হবে।’

বিশ্বকাপে খেলতে না পারার হতাশা নিয়েও কথা বলেছেন হলান্ড। তাঁর দেশ নরওয়ে কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব উতরাতে পারেনি। ঘরে বসে বিশ্বকাপ দেখার দুঃখ হলান্ডকে ক্লাব ফুটবলের আরও ভালো খেলার প্রেরণা জুগিয়েছে, ‘ঘরে বসে বিশ্বকাপ দেখেছি। বিশ্বকাপে খেলতে না পারায় পাগলের মতো হয়ে উঠেছিলাম। সেখানে অন্যদের গোল করতে দেখে যেমন বিরক্ত লেগেছে তেমনি আরও ভালো কিছু করার প্রেরণাও পেয়েছি। আমি এখন আরও বেশি ক্ষুধার্ত।’

সিটি কোচ পেপ গার্দিওলার অধীনে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০ ম্যাচে ২৬ গোল করলেন হলান্ড। গার্দিওলার অধীনে আর কোনো খেলোয়াড় শীর্ষ লিগে এত অল্প সময়ের মধ্যে ২৫ গোলের দেখা পাননি। হলান্ডকে আরও ক্ষুরধার দেখতেই যেন তাঁকে আরও তাতিয়ে দিলেন সিটির এই কোচ, ‘আমার মনে হয় সে এখনো নিজের সেরাটা দেখাতে পারেনি। তবে এটা শুধুই সময়ের ব্যাপার। অবশ্যই আমরা তাকে নিয়ে আনন্দিত। তবে মৌসুমের শুরুর দিকে সে যে গতিতে এগোচ্ছিল, তাতে বোধ হয় একটু ভাটা পড়েছে।’

১৫ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি। সমান ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল।