শোকে মূহ্যমান গোটা বিশ্ব, শোকে কাতর ব্রাজিল। ফুটবলের রাজা পেলে চলে গেছেন, অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন, যেকোনো খারাপ খবরের জন্য ফুটবলপ্রেমীদের একটা মানসিক প্রস্তুতি হয়তো ছিলও। কিন্তু তারপরও পেলে নেই—এটা মেনে নেওয়া কঠিন। ফুটবলকে যাঁরা একটু হলেও হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছেন, ব্যাপারটা মেনে নেওয়া তাঁদের জন্য কঠিন, কষ্টকর। ২০০২ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক কাফুর যেমন মেনে নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে ‘কালো মানিকের’ মৃত্যুর খবরটি। তিনি বিশ্বাসই করেন না যে পেলে নেই। তিনি মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করেন, পেলে তাঁদের ছেড়ে কিছুতেই চলে যেতে পারেন না।
ফুটবল সম্রাটের মৃত্যুর পর কাফুর প্রতিক্রিয়াটা এমন, ‘আমি মনে করি পেলের মৃত্যুর সংবাদটি ঠিক নয়। কোথাও কোনো ভুল হচ্ছে। পেলে কীভাবে চলে যান! তাঁর তো মৃত্যু নেই। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যেতে পারেন না। পেলে চিরন্তর। তিনি রাজা। তিনি সবার চেয়ে ভিন্ন। তিনি একটু বিশ্রামে গেছেন। তাঁর প্রতিটি দুর্দান্ত গোল চিরন্তন, বল নিয়ে প্রতিটি মুভ চিরন্তন। আমরা যারা ফুটবল একটু–আধটু খেলেছি, ফুটবলকে পেশা হিসেবে নিয়েছি, তাদের সবার কাছে তিনি আদর্শ।’
১৯৫৮ বিশ্বকাপে পেলের সতীর্থ, ব্রাজিলকে একাধিকবার বিশ্বকাপ জেতানো কোচ মারিও জাগালের মতে, পেলে সর্বকালের সেরা। পেলের মৃত্যুর দিনটিকে তিনি ব্রাজিলের মানুষের জন্য দুঃখের এক দিন বলছেন। তবে পেলের মৃত্যু তাঁর কাছে কেবল শারীরিকভাবে চলে যাওয়াই। জাগালো মনে করেন, পেলে চিরদিনই বেঁচে থাকবেন ফুটবলপ্রেমী মানুষের মনে।
ফুটবলার পেলের চেয়ে ‘মানুষ’ পেলের কথাই জাগালো তুলে ধরেছেন তাঁর প্রতিক্রিয়ায়, ‘পেলের মুখে হাসি লেগেই থাকত। তিনি হাসি ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। তাঁকে গম্ভীর কেউ দেখেনি। সবাইকে সাহায্য করতেন, সেটি যেভাবেই হোক। ব্রাজিলের সব প্রজন্ম পেলেকে মনে রাখবে।’
১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ও সাবেক কোচ দুঙ্গা বলেছেন, ‘পেলে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এমন একটা দুনিয়ায় গেছেন, যেখানে “শেষ” বলে কিছু নেই। পেলে চিরন্তন।’
রোনালদিনিওর মতে, পেলে ‘রাজা’। পেলে ‘রাজা’ ব্রাজিলের বর্তমান অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার দৃষ্টিতেও। ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক রোমারিও মনে করেন, ‘পেলের মৃত্যু মানে ব্রাজিল দেশ হিসেবে তাঁর সেরা সন্তানকে হারিয়েছে। তিনি ফুটবলের রাজা। দেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ। এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তোকে আজ গোটা দুনিয়া কুর্নিশ করছে।’