২৫ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
২৫ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

মালদ্বীপের বিপক্ষে ‘ফাইনাল’ জিততে মরিয়া বাংলাদেশ

আগের সন্ধ্যায় লেবাননের সঙ্গে অন্তত ড্রয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে হার। শেষ ১৬ মিনিটে খেই হারিয়ে বাংলাদেশ পয়েন্ট নিতে পারেনি। এক পয়েন্টের বদলে তিন পয়েন্টও চলে আসতে পারত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে।

কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলাররা ভুল করেছেন। প্রথমে ফয়সাল আহমেদ লেবানন গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। এর ৪ মিনিট পরই ডিফেন্ডার তারিক কাজীর ভুলে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

কিন্তু লেবানন ম্যাচের আক্ষেপ নিয়ে বসে থাকলে চলছে না। ২৫ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে নামতে হচ্ছে মালদ্বীপের সঙ্গে। যে ম্যাচটা ফাইনাল হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য। তাই বাংলাদেশ দলের যত মনোযোগ এখন সেদিকেই। আজ বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে নিজেদের কৌশল ঝালিয়ে নিতে।

বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা লেবানন ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিতে বলেছেন ফুটবলারদের। আজ অনুশীলনে এসে কোচ বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘লেবাননের কাছে হেরে ফুটবলাররা কেউ হতাশ নয়। সবাই বরং উজ্জীবিত। গতকালের অভিজ্ঞতা এমন যে আমরা মনে করছি, আজ আমরা আগের দিনের চেয়ে ভালো দল। আর এটাই মালদ্বীপের বিপক্ষে অনেক বেশি সুযোগ এনে দেবে আমাদের।’

কোচ হাভিয়ের কাবরেরা লেবানন ম্যাচ থেকে ফুটবলারদের শিক্ষা নিতে বলেছেন

কোচ যোগ করেন, ‘আমাদের মানসিকতা এমন হওয়া উচিত যে আমরা মালদ্বীপের সঙ্গে জিতব। এটা ভাবলে হবে না যে এক পয়েন্ট হলেই বোধহয় যথেষ্ট। আমাদের জিততে হবে। লেবাননের সঙ্গে সবকিছু আমাদের পরিকল্পনামতোই এগিয়েছে। আমরা জানতাম, লেবানন হাইলাইন ডিফেন্স করবে আর আমরা প্রতি আক্রমণে যাব। এ দুটিই আমরা ভালোভাবে সামলেছি। এবং আমরা ১: ১ অবস্থায় মিস করেছি। হ্যাঁ, আমাদের উন্নতি করতে হবে এটা ঠিক। গতকালের ম্যাচকে আপনি নেতিবাচক-ইতিবাচক দুভাবেই নিতে পারেন। আমি ইতিবাচকভাবেই নিচ্ছি।’

বাংলাদেশ দল লেবাননের বিপক্ষে কিছু অর্জনের খুব কাছে গিয়েছিল। এমনকি সেটা তিন পয়েন্টও হতে পারত। যখন কিছু পেতে আপনি খুব কাছে চলে যাবেন, তখন হতাশাও বেশি হবে। এ কথা বলে কাবরেরা যোগ করেন, ‘গতকালের ফল আমরা বিশ্লেষণ করেছি। ওটা আমাদের উজ্জীবিত করছে। আমরা নিজেদের মধ্যে মত বিনিয়ম করছি। আমরা ভাবছি কীভাবে ভালো করতে পারি। অনুশীলনের আগে ইতিবাচক দলীয় মিটিং হয়েছে আজ আমাদের।’

কথা এসেছে বাংলাদেশের জন্য গোল করবে কে? গোল করার লোক নেই দলে। স্ট্রাইকার সুমন রেজাকে তুলে নেওয়া হয় ৫৬ মিনিটে। একটা দৈন্যদশাই চলছে আক্রমণভাগে। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া অবশ্য বলেছেন, গোল শুধু স্ট্রাইকারকেই করতে হবে এমন তো নয়। তাঁর কথা, ‘শুধু স্ট্রাইকার নয়, সবাইকে গোল করতে হবে। এখানে স্ট্রাইকারকে অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। আমরা একসঙ্গে জিতব, একসঙ্গে হারব।’

লেবাননের সঙ্গে বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়েছে এদিন। সেটা কীভাবে? জামালের কথা, ‘শেষ ১০-১৫ মিনিট আমরা মনোযোগ হারিয়েছি। সে জন্য আমরা দুটি গোল খেয়েছি।’ এরপর সামনে তাকান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘যেটা হয়েছে তা ভুলে যেতে হবে। এখন মনোযোগ মালদ্বীপ ম্যাচ নিয়ে। টুর্নামেন্টের আগে সবাই বলেছে মালদ্বীপ ম্যাচটাই আমাদের ফাইনাল হবে। এমনকি আমাদের (বাফুফে) ভাইস প্রেসিডেন্টও বলেছেন মালদ্বীপের সঙ্গে ফাইনাল।’

মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই—ভাবছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। বসুন্ধরা কিংসের মিডফিল্ডার সিনিয়র সোহেল রানা বলেছেন, ‘টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ হেরে গেছি আমরা। এখন দলীয় বন্ধনেই থাকব আমরা। ওটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। কারও উদ্দেশ্য অভিযোগ...এগুলোয় মনোযোগ দিচ্ছি না। মূল ভাবনা হলো কীভাবে এখান থেকে বের হয়ে ভালো রেজাল্ট করতে পারি মালদ্বীপের সঙ্গে। কোচ বলেছেন সবকিছুই ভালোভাবে চলছে। যেভাবে আছি, আশা করি সব ভালোভাবেই করতে পারব।’ মালদ্বীপের সঙ্গে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী সোহেল রানা, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসী যে ওই ম্যাচটা আমরা জিততে পারব।’

বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের সময়ে

লেবানন শারীরিক ও স্কিলে এগিয়ে ছিল। বাংলাদেশ দল ভালোভাবে ম্যাচটা শুরু করেছিল। সোহেল রানা বলছেন, ‘একটিবারও মাঠে আমাদের মনে হয়নি যে ম্যাচটা আমরা হারব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা একটা গোল খেয়ে ফেলি, যেটা ম্যাচেরই অংশ। আশা করি, এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচটা খেলব। প্রথম ম্যাচটা ভুলে যেতে চাই। দ্বিতীয় ম্যাচেই এখন আমাদের যাবতীয় মনোযোগ। ওটাই আমাদের জন্য ফাইনাল বলতে গেলে। কারণ, মালদ্বীপের সঙ্গে জিততেই হবে, যদি টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে চাই।’