২০২৩ সালে রোমাঞ্চকর এক সময় কাটিয়েছে ক্লাব ফুটবল। এ বছর ট্রেবল জিতে সবাইকে তাক লাগিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। শেষ দিনের রোমাঞ্চের পর বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে পেছনে ফেলে বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ২০১৯ সালের পর প্রথমবারে মতো শিরোপা জিতেছে বার্সেলোনা। পিএসজি ৬ মৌসুমের মধ্যে শিরোপা জিতেছে ৫টিতেই। ১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো সিরি ‘আ’ শিরোপা জিতেছে ডিয়েগো ম্যারাডোনার স্মৃতিবিজড়িত নাপোলি।
এরপর নতুন মৌসুমের শুরুতেও দেখা মিলেছে নানা চমক। ১৭ ম্যাচ পর লা লিগায় শীর্ষে আছে জিরোনা। ইউরোপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দলটির নাম বায়ার লেভারকুসেন, যারা বুন্দেসলিগার শীর্ষ দল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চমক দেখাচ্ছে অ্যাস্টন ভিলা। সব মিলিয়ে রোলার কোস্টার এক বছরই বলা যায়।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে হতাশ দলটির নাম সম্ভবত আর্সেনাল, যারা বেশির ভাগ সময় প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থেকেও শেষ পর্যন্ত লিগ জিততে পারেনি। লিগ না জিতলেও অন্য একদিকে অবশ্য সুখবর পেয়েছে আর্সেনাল। এ বছর যে দলটির স্কোয়াড মূল্য সবচেয়ে বেশি উল্লম্ফন দেখেছে, সেটির নামও আর্সেনাল। মূলত সাম্প্রতিক সময়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণেই এই উচ্চতায় পৌঁছেছে গানাররা।
মিকেল আরতেতার হাত ধরে গত সাম্প্রতিক সময়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর্সেনাল। গত মৌসুমে আশ্চর্য পতনে শিরোপা হাতছাড়া না করলে লিগ চ্যাম্পিয়নস হতো তারাই। এবারও বড়দিনের সময় শীর্ষে থাকা দলটির নামও আর্সেনাল। গত কয়েক বছরে তরুণদের ওপর বেশ বিনিয়োগ করেছে ক্লাবটি। এখন যার ফল পেতে শুরু করেছে তারা। সামগ্রিকভাবে এমন পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত আর্সেনালের স্কোয়াডের মূল্য বেড়েছে ৩৫০.৫ মিলিয়ন ইউরো (৩৫ কোটি ৫ লাখ ইউরো)।
ট্রান্সফারমার্কেটের এই তালিকার পরের দলটিও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। সৌদি মালিকানায় প্রিমিয়ার লিগের নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া নিউক্যাসলের স্কোয়াড মূল্য বেড়েছে ১৯১ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯ কোটি ১০ লাখ ইউরো)। নতুন মালিকানায় আন্তোনি গর্ডন, সান্দ্রো টোনালি ও হার্ভে বার্নসের মতো খেলোয়াড়দের কিনে আনার কারণে মূল্য বেড়েছে নিউক্যাসলের। পাশাপাশি এডি হাও দলটিকে নিয়ে দারুণ কাজ করেছেন। এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগেও খেলেছে তারা। যদিও গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোতে পারেনি তারা।
১৮৯ মিলিয়ন ইউরো (১৮ কোটি ৯০ লাখ) নিয়ে বাজারমূল্য বাড়ার তালিকায় তিনে ইউরোপের সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ। ১০ কোটি ৩০ লাখ ইউরোতে কেনা জুড বেলিংহামের কারণে মূলত এমন মূল্য বৃদ্ধি দেখেছে রিয়াল। সর্বশেষ হিসাবেও বাজারমূল্যে সবচেয়ে ওপরে আছেন বেলিংহাম। ট্রান্সফারমার্কেটের দেওয়া হিসাবে বেলিংহামের দাম এখন ১৮ কোটি ইউরো। সামনে এ মূল্য আরও বাড়াতে পারে। যা বাড়িয়ে দিতে পারে রিয়ালের সামগ্রিক স্কোয়াডের দামও।
গত মৌসুমে ট্রেবল জিতে সবচেয়ে সফল দল ম্যানচেস্টার সিটি। এমনকি ট্রেবল জেতা দলটি পরবর্তী সময়ে উয়েফা সুপার কাপ এবং ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতেছে। দলকে শিরোপা জেতানোর পথে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন আর্লিং হলান্ড। যিনি দামের দিক থেকে যৌথভাবে এখন সবার ওপরে অবস্থান করছেন (১৮ কোটি ইউরো)। দলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ও খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের কারণে সিটির স্কোয়াডের দাম বেড়েছে ১৮৩.৪৫ মিলিয়ন ইউরো (১৮ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ইউরো)।
২০২৩ সালে ইংলিশ ফুটবলে সবচেয়ে চমক লাগানোর দলটির নাম অ্যাস্টন ভিলা। উনাই এমেরির অধীন দারুণভাবে ছুটে চলেছে এ ক্লাবটি। প্রিমিয়ার লিগে এমেরির হাত ধরে বদলে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে অ্যাস্টন ভিলার স্কোয়াড মূল্যতেও। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা দৌড়ে থাকা (বর্তমানে ৩ নম্বরে আছে) ভিলা পার্কের ক্লাবটির মূল্য বেড়ছে ১৭০.৯ মিলিয়ন ইউরো (১৭ কোটি ৯ লাখ ইউরো)।
অন্যদিকে বাজারমূল্য কমার তালিকায় সবার ওপরে আছে ভিয়ারিয়াল। লা লিগায় ১৩ নম্বরে থাকা ক্লাবটির দাম কমেছে ১৪৭ মিলিয়ন ইউরো (১৪ কোটি ৭০ লাখ ইউরো)। এরপর অবস্থানটি ফরাসি ক্লাব লিওঁর। যাদের দাম কমেছে ৮৫.৯ মিলিয়ন ইউরো (৮ কোটি ৫৯ লাখ ইউরো)। দাম কমায় তিনে আছে রিয়াল বেতিস, যাদের দাম কমেছে ৭৬.৭ মিলিয়ন ইউরো (৭ কোটি ৬৭ লাখ ইউরো)। আর ৪ নম্বরে থাকা বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের দাম কমেছে ৭৬.৬ মিলিয়ন ইউরো (৭ কোটি ৬৬ লাখ ইউরো)।