‘ক্ষুব্ধ ও হতাশ’—ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচ ড্র করার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াটা এমনই ছিল ফরাসি রাইট-ব্যাক ইউলেস কুন্দের। প্রতিক্রিয়া অবশ্য এমন হওয়ারই কথা। শক্তি, সামর্থ্য আর পরিসংখ্যানে যোজন যোজন পিছিয়ে থাকা ইসরায়েলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করার পর কারই–বা আর মেজাজ শান্ত থাকে। নেশনস লিগের ম্যাচে প্যারিসে ৯০ মিনিট চেষ্টা করেও ন্যূনতম একটি গোল আদায় করতে পারেনি স্বাগতিক ফ্রান্স।
অথচ ম্যাচে ৭১ শতাংশ বলের দখল রেখে ২৪টি শট নেয় দিদিয়ের দেশমের দল, যার ৮টিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ২৯ শতাংশ বলের দখল রেখে ইসরায়েল শট নেয় মাত্র ৩টি। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সের এই ব্যবধানও মেটাতে পারেনি ফ্রান্সের গোলের তৃষ্ণা। শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ফ্রান্সকে। ইসরায়েলের বিপক্ষে এই ড্রয়ে অবশ্য খুব একটা ক্ষতি হচ্ছে না ফ্রান্সের। নেশনস লিগের শেষ আটের টিকিট ঠিকই নিশ্চিত করেছে তারা।
রাজনৈতিক কারণে ইসরায়েলের বিপক্ষে ফ্রান্সের এই ম্যাচ ঘিরে ছিল বাড়তি উত্তাপ। গতকাল প্যারিসে নিরাপত্তাব্যবস্থাও ছিল বেশ কঠোর। এমনকি ৮০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি ছিল ১৭ হাজারের নিচে। উল্টো নিরাপত্তার জন্য এদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন ৪ হাজার নিরাপত্তারক্ষী।
মূলত গত সপ্তাহে আমস্টারডামে ইসরায়েলের ক্লাব ম্যাকাবি তেল আবিবের সমর্থকদের ওপর হামলার পর প্যারিসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এমনকি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দর্শকদের মাঠে আসতে নিষেধ করে। এরপরও ১০০ জনের কাছাকাছি ইসরায়েলি দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। ফ্রান্সের সমর্থকদের সঙ্গে যারা এক পর্যায়ে সংঘর্ষেও জড়ান। তবে এই দর্শকেরা শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সকে রুখে দেওয়ার সাক্ষী হয়েই মাঠ ছেড়েছেন।
অন্যদিকে এই ম্যাচ থেকে ফ্রান্সের একমাত্র প্রাপ্তি শেষ আটে যেতে পারা। যা মেনে নিয়েছেন কুন্দেও, ‘এই ম্যাচের একমাত্র ভালো দিক হচ্ছে, পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত করতে পারা।’ ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম অবশ্য প্রতিপক্ষের অতি-রক্ষণাত্মক খেলার ধরনকেই সামনে এনেছেন, ‘আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। অবশ্য আমরা সেটাই করেছি, যা আলট্রা-ডিফেন্সিভ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে করা যেত।’
একই রাতে ফ্রান্সের মতো কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়েছে ইতালিও। ব্রাসেলসে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়েছে তারা। ম্যাচের ১১ মিনিটে করা সান্দ্রো টোনালির গোলই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। ম্যাচ শেষে ইতালির কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তি বলেন, ‘ছেলেরা অনেক ভালো খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যদিও ধার হারিয়েছি, বিশেষ করে বল দখলে রাখার ক্ষেত্রে। যে কারণে অনেক ভুল পাসও দিয়েছি। ম্যাচের আগেই আমি বলেছিলাম, এই ধরনের ম্যাচে বলের দখল রাখতে হবে। এটাই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল।’
রাতের আরেক ম্যাচে গ্রিসের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। এই জয়ে নেশনস লিগের লিগ বি গ্রুপ ২-এর শীর্ষে উঠে এসেছে ‘থ্রি লায়ন্স’রা। ইংল্যান্ডের জয়ে গোল করেছেন ওলি ওয়াটকিন্স ও কার্টিস জোন্স। অন্য গোলটি আত্মঘাতী। এই ম্যাচে মূল একাদশের বদলে বেঞ্চ থেকে শুরু করেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ম্যাচ শেষে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ লি কার্সলে বলেন, ‘আমরা সঠিক পথেই আছি। আমাদের অসাধারণ কিছু প্রতিভা আছে।’