দুরপাল্লার অবিশ্বাস্য গোলটির পর মাঠে হাঁটু মুড়ে বসে মিগুয়েলের উদ্‌যাপন
দুরপাল্লার অবিশ্বাস্য গোলটির পর মাঠে হাঁটু মুড়ে বসে মিগুয়েলের উদ্‌যাপন

ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েলের অবিশ্বাস্য গোলটি ‘বিশ্বাস’ থেকেই

এমন একটা গোল দেখার জন্য সারা দিনও মাঠে কাটিয়ে দেওয়া যায়।

ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে দুর্দান্ত সব গোলের সাক্ষী হন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। আজ কিংস অ্যারেনার দর্শকেরা যে গোলের সাক্ষী হলেন, সেটি কোনো অংশেই কম নয়। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার মিগুয়েল ফেরেরার প্রায় অবিশ্বাস্য এক গোলই আজ এএফসি কাপে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে বসুন্ধরা কিংসকে এনে দিয়েছে দারুণ এক জয়। অথচ গোলটি করে একেবারেই নির্বিকার মিগেল।

ইংরেজি বলতে পারেন না। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মাতৃভাষা পর্তুগিজেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন। তবে কথাগুলো বলার সময় মিগুয়েল বেশ নির্লিপ্তই লাগল। বাংলায় তাঁর কথাগুলো দাঁড়ায়, ‘আমি দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে খুশি। আমার দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ই আজ চমৎকার খেলেছে।’

যে গোলের ঘোর কাটতে হয়তো বেশ কিছুদিন সময় লাগবে—সে গোল করে কি না মিগুয়েল এতটা ভাবলেশহীন! বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন নাকি তাঁকে খেলা শেষ হতেই জিজ্ঞেস করেছিলেন গোলটি নিয়ে, ‘কীভাবে এমন গোল করলে তুমি!’ কিংসের স্প্যানিশ কোচ আসলে মিগুয়েলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ৩০ গজ দূর থেকে কী মনে করে ব্রাজিলিয়ান তারকা সেই শটটি নিয়েছিলেন! মিগুয়েল কি গোলের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন?

অসাধারণ গোলটির পর মিগুয়েলকে (৮ নম্বর জার্সি) সতীর্থদের অভিনন্দন

মিগুয়েল কোচকে বলেছেন গোলটি করেছেন নিজের ‘বিশ্বাস’ থেকেই। কোচ ব্রুজোন জানালেন, ‘মিগুয়েল বলল তাঁর মনে হয়েছিল গোলটি তিনি করতে পারবেন ওই জায়গা থেকে শট নিয়েই। সে দেখেছিল মাজিয়ার গোলকিপার একটু সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর অবস্থান দেখেই সে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় ৩০ গজ দূর থেকেই গোলে শট নেবে সে।’

দলের প্রাণভোমরা, অধিনায়ক রবসন দা সিলভা আজ চোটের কারণে ছিলেন না। শুরুতেই গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণের এক অমার্জনীয় গোলে পিছিয়ে পড়া। কিংসকে আজ বেশ এলোমেলোই লাগছিল। আরেক ব্রাজিলিয়ান দরিয়েলতন গোমেজ ছিলেন নিষ্প্রভ। মিগুয়েলও খুব ভালো খেলতে পারছিলেন না। রবসনের জায়গায় প্রথম একাদশে খেলা নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে উদো রবসনের ভার বইতে পারছিলেন না। কিংস অ্যারেনায় দর্শকদের প্রত্যাশার চাপও চেপে বসেছিল কিংসের খেলোয়াড়দের ওপর। সব মিলিয়ে একটা কঠিন ম্যাচ।

মিগুয়েলের গোলেই জয় তুলে নেয় বসুন্ধরা কিংস

মিগুয়েলের গোলটির প্রভাব আসলে এতটাই যে কোচ ব্রুজোনের ভাষায় ‘ম্যাচের চিত্র বদলে দেওয়া’ উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার বাবুরবেক ইউলদাশোভের সমতাসূচক গোলটি আড়ালে চলে যাচ্ছে। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করার পর ম্যাচের ৮০তম মিনিটে বদলি নামা শেখ মোরছালিনের মাপা কর্নার থেকে ইউলদাশোভের সেই গোলটিই নাকি আত্মবিশ্বাস আবারও জাগিয়ে তুলেছিল দলের।

কোচের ভাষায়, ‘আমি যদিও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কিন্তু ইউলদাশোভের প্রথম গোলটিই ম্যাচের ছবি বদলে দেয়। তখনই মনে হয়েছিল ম্যাচটা আমরা জিততে পারি। দ্বিতীয় গোলটা তো অসাধারণ।’