ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ভাঁড় টেন হাগ রোনালদোকে অসম্মান করেছেন: পিটারসেন

কেভিন পিটারসেন চেলসির ভক্ত। এর পাশাপাশি তিনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরও যে ভক্ত, তা গত জুনে টের পেয়েছেন অনেকেই। নিজের জন্মদিনে পর্তুগিজ তারকার কাছে একটি প্রত্যাশা জানিয়ে টুইট করেছিলেন পিটারসেন। রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে যেন চেলসিতে যোগ দেন! ইংল্যান্ডের সাবেক এই ব্যাটসম্যানের যেমন ইচ্ছা পূরণ হয়নি, তেমনি ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটিতে রোনালদোর দুরবস্থা দেখে পিটারসেনও চুপ থাকতে পারেননি।

ঘটনাটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট নিয়ে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলছে অস্ট্রেলিয়ায়। টুর্নামেন্টটির জনপ্রিয়তা বাড়াতে নিজেদের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পিটারসেনের ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করা হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পক্ষ থেকে। পিটারসেন সেখানে করা মন্তব্যে নিজের ছবিটা সরানোর অনুরোধ করেন ইউনাইটেডের প্রতি। তার কারণ রোনালদো।

ইউনাইটেডের এই পোস্টটি পরে মুছে ফেলা হয়

কীভাবে? সে কথায় যাওয়ার আগে ইউনাইটেডের ইনস্টাগ্রাম পোস্টটি জেনে নেওয়া যাক, ‘এখন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মৌসুম। আমরা ক্রিকেট কিংবদন্তিদের স্বাগত জানিয়েছি...।’ কিন্তু পিটারসেন এই বিষয়ে মন্তব্যে লেখেন, ‘দয়া করে আমার ছবিটা সরিয়ে ফেলুন? আমি এমন কোনো ক্লাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে চাই না, যার ম্যানেজার একজন ভাঁড় এবং যিনি আমাদের সময়ের সেরা ফুটবলারকে পুরো অসম্মান করেছেন। ক্রিস্টিয়ানোই সেরা। ওই ভাঁড়টাকে কেউ মনে রাখবে না, এটা বোঝা দরকার।’

পরে ইউনাইটেডের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়।

ভাঁড় বলতে পিটারসেন যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ এরিক টেন হাগকে বুঝিয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। আর ইউনাইটেডেও সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না রোনালদোর। গত বুধবার টটেনহাম হটস্পারের বিপক্ষে লিগ ম্যাচে তাঁকে বদলি নামাতে চেয়েছিলেন টেন হাগ।

কিন্তু পর্তুগিজ তারকার তাতে আপত্তি ছিল। ম্যাচের শেষ দিকে কোচ মাঠে নামতে বললে ক্ষুব্ধ রোনালদো মাঠে তো নামেনইনি, উল্টো ম্যাচ শেষের আগে ৮৯ মিনিটে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। এর শাস্তিস্বরূপ চেলসি ম্যাচের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েন রোনালদো।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ এরিক টেন হাগ

কোচ টেন হাগ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, খেলা শেষের আগেই মাঠ ছেড়ে যাওয়ার ফল ভোগ করতে হবে রোনালদোকে, ‘আমি দলের ম্যানেজার। দলের সংস্কৃতি আমাকেই ঠিক রাখতে হবে। দলের নিয়ন্ত্রণ আমার হাতে, আমাকেই মূল্যবোধের মানদণ্ড ঠিক করে দিতে হবে। রোনালদোর সঙ্গে এ নিয়ে স্পষ্ট কথা হয়েছে।’ আগেও একবার টেন হাগের অধীনে প্রাক্‌-মৌসুম প্রীতি ম্যাচে খেলা শেষের আগেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। টেন হাগ তখন রোনালদোর মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আচরণকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

চেলসির বিপক্ষে ম্যাচের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ার পর রোনালদো বুঝতে পারেন, ভুল করেছেন। আর তাই পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে, ‘আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই সতীর্থ, পরামর্শক আর কোচদের সম্মান রক্ষা করে খেলে যেতে চেয়েছি। এর পরিবর্তন এখনো হয়নি। আমিও বদলাইনি। ২০ বছরের অভিজাত ফুটবল ক্যারিয়ারে আমি আগে যেমনটা ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় শ্রদ্ধার বিষয়টি সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’