বার্সেলোনার ব্রায়ানস টু জেলখানায় বসে এখন ধর্ষণ মামলার রায়ের প্রহর গুনছেন দানি আলভেজ। মানসিকভাবে মোটেও ভালো নেই ব্রাজিলের সাবেক এই রাইটব্যাক। ভেতরে ভেতরে নাকি ভেঙে পড়েছেন।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম টিভি চ্যানেল ‘টেলেসিনকো’র অনুষ্ঠান ‘ফিয়েস্তা’কে এ কথা জানিয়েছেন কারাগারে আলভেজের সঙ্গেই সাজা খাটতে থাকা আরেক কয়েদি। একই কক্ষে থাকেন দুজন (সেলমেট)। সেই কয়েদি জানিয়েছেন, আলভেজ আত্মহত্যা করতে পারেন, এই শঙ্কা থেকে তাঁর জন্য ‘অ্যান্টি সুইসাইড প্রটোকল’ চালু করেছে জেল কর্তৃপক্ষ।
ধর্ষণের অভিযোগে বার্সেলোনায় আলভেজের তিন দিনের বিচারকাজ শেষ হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, সবকিছু তাঁর পক্ষে থাকলে রায়টা বিচারকাজ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে পেয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সময়টা এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে। সেই কয়েদিও জানিয়েছেন বিচারকাজে শুনানির পর থেকে ৪০ বছর বয়সী আলভেজ ভালো নেই।
আলভেজের সঙ্গে বসবাস করা কুতিনিও নামের সেই কয়েদি ‘ফিয়েস্তা’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘বিচারকাজ শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতি বিপক্ষে চলে যাওয়ায় সে (আলভেজ) ভেঙে পড়েছে। ভীষণ মুষড়ে পড়েছে। অফিশিয়াল ও এডুকেটরসরা তাকে সাহস দিচ্ছে।’ অ্যান্টি সুইসাইড প্রটোকল চালুর বিষয়ে কুতিনিও বলেছেন, ‘সে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে কিংবা এমন পাগলাটে কিছু করতে পারে—এমন ভীতি থেকে বিচারকার্য শেষ হওয়ার পরদিনই এই প্রটোকল চালু করা হয়।’
এই মামলার বাদী ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর বার্সেলোনার সাটন নামের একটি পানশালার ভিআইপি সেকশনের বাথরুমে আলভেজ তাঁকে ধর্ষণ করেন। এই অভিযোগেই তিন সপ্তাহ পর আলভেজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকেই স্পেনে কারাবন্দী জীবন কাটছে তাঁর।
মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হলে আলভেজের সর্বোচ্চ ১২ বছরের জেল হতে পারে। বাদীপক্ষের আইনজীবী দলের প্রধান এস্তের গার্সিয়াও শাস্তি হিসেবে আলভেজের ১২ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছেন। অন্যদিকে আলভেজের আইনজীবী ইনেস গার্দিওলা মনে করেন, সর্বোচ্চ ৪ বছর কারাদণ্ডই হবে যথেষ্ট শাস্তি। এর পাশাপাশি বাদীকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
পেশাদার ফুটবলে ৪৩ শিরোপাজয়ী আলভেজ ব্রাজিলের জার্সিতে ১২৬ ম্যাচে ৮ গোল করেছেন। দুবার করে জিতেছেন কোপা আমেরিকা ও ফিফা কনফেডারেশনস কাপ। সেভিয়া, জুভেন্টাস, পিএসজি মাতানো এই কিংবদন্তির ক্যারিয়ারে সেরা সময় কেটেছে বার্সেলোনায়। দুই মেয়াদে মোট ৯ মৌসুমে তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ৬ বার লা লিগা জিতেছেন। লিওনেল মেসি, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জাভি হার্নান্দেজদের সঙ্গে পেপ গার্দিওলার ‘ড্রিম টিম’–এর অন্যতম তারকা হয়ে উঠেছিলেন আলভেজ।