লিওনেল মেসির পরিবার। স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোর সঙ্গে তিন ছেলে—থিয়াগো (বাঁয়ে), চিরো (মাঝে) ও মাতেও
লিওনেল মেসির পরিবার। স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোর সঙ্গে তিন ছেলে—থিয়াগো (বাঁয়ে), চিরো (মাঝে) ও মাতেও

মেয়ের বাবা হতে চান মেসি

লিওনেল মেসি—নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বল পায়ে সেই আঁকানো-বাঁকানো সেই দৌড়, ড্রিবলিং এবং গোল। আসলে ফুটবলের বাইরে তাঁকে নিয়ে কতটা ভাবা হয়, তা নিয়ে গবেষণা হতেই পারে। লোকে তাঁকে ‘ভিনগ্রহে’র বললেও মেসি তো মানুষ, পরিবার আছে তাঁর আর তাই ব্যক্তিগত জীবনে চাওয়া-পাওয়া থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু ফুটবলের বাইরের মেসি সম্পর্কে আমরা কতটা জানি?

আর্জেন্টাইন তারকা নিজ থেকে কিছু না বললে তো সেটি সম্ভব নয়। কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই ছোঁক ছোঁক করা অনুচিত। সংবাদমাধ্যমে মেসি যতটুকু বলেন, ততটুকুই। এত দিন সে বিষয়েও রক্ষণাত্মক ছিলেন মেসি। পরিবার নিয়ে হালকা কথাবার্তার বাইরে কখনো তেমন কিছুই বলেননি। কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী মেসি এবার বেশ খোলামেলা। পরিবার নিয়ে কথা বলেছেন মন খুলে। জানিয়েছেন নিজের এক ইচ্ছার কথাও।

মেসির পরিবার বলতে স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো এবং তিন ছেলে—থিয়াগো, চিরো ও মাতেও। হাসিখুশি ও সুখী পরিবার বলতে যা বোঝায়, তেমনটি ভেবে নেওয়া যায়। তবে ‘বাবা’ মেসির কিন্তু আরেকটি চাওয়া এখনো অপূর্ণ আছে। ইএসপিএনের সংবাদকর্মী ও বিখ্যাত স্ট্রিমার মিগু গ্রানাদোসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই অপূর্ণ ইচ্ছার কথাই জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি, ‘আমরা আরেকটি বাচ্চা নিতে চাই। আমরা সে চেষ্টাটা এখনো শুরু করিনি। তবে আশায় আছি, সেটি কন্যাসন্তান হবে।’

ঘরে তিন ছেলেকে নিয়ে এভাবেই সময় কাটে মেসির

অর্থাৎ, কন্যাসন্তানের মুখ থেকে ‘বাবা’ ডাক শুনতে চান মেসি। তাহলে তিন ছেলের দুষ্টুমিতে কি মেসি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন? মোটেও তা নয়। বরং সন্তানদের প্রতি ভীষণ মনোযোগী মেসি। শুনুন তাঁর মুখ থেকেই, ‘ছোটবেলায় আমাকে যা যা শেখানো হয়েছে, সেসব মূল্যবোধ আমি নিজের সন্তানদের মধ্যে প্রোথিত করার চেষ্টা করি। আমি একজন ভালো বাবা। কারণ, আমার মা–বাবা ভালো ছিলেন। আর আমি কোথায় বেড়ে উঠেছি, সেখানকার মূল্যবোধগুলোও গুরুত্বপূর্ণ।’

আর্জেন্টিনার রোজারিওতে মেসির জন্ম। সেখানকারই মেয়ে আন্তোনেল্লার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করার পর তাঁর সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন ইন্টার মায়ামির এই তারকা। মা ও স্ত্রী হিসেবে আন্তোনেল্লা কেমন, সেসব নিয়েও কথা বলেছেন মেসি, ‘সে দুর্দান্ত। মোটামুটি ২৪ ঘণ্টাই সন্তানদের সঙ্গে কাটায়। মাঝেমধ্যেই দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে থাকতে হয়—সফর, ম্যাচ, প্রাক্‌–মৌসুম, জাতীয় দল। কখনো কখনো মাসের পর মাস বাইরে থাকতে হয়। তখন সে সারা দিনই সন্তানদের সামলায়।’

মেসির বড় ছেলের নাম থিয়াগো, মেজ ছেলে মাতেও এবং ছোটটির নাম চিরো। তিন সন্তানকে নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন মেসি, ‘থিয়াগো কথা বলতে পছন্দ করে। আন্তোনেল্লাকেই সে সব বলে। মাতেও সবকিছু বলে দেবে। বকবক করতেই থাকে। কিন্তু চিরো সে তুলনায় একটু চুপচাপ।’

গত ডিসেম্বরে কাতারে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর পরিবারের সঙ্গে মেসি

পিএসজি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পেছনে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনাও একটা কারণ বলে জানিয়েছেন মেসি। নিজেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন নিয়েও কথা বলেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তি, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে ঘুম থেকে উঠে নাশতা করি। তখন ছেলেরাও উঠে পড়ে। কখনো কখনো আমি তাদের স্কুলে নিয়ে যাই। কখনো আবার নিয়ে যেতে পারি না। ওরা (সন্তানেরা) টোস্ট ও চকলেটমিশ্রিত দুধই বেশি খায়। অনুশীলন থেকে বেলা একটা নাগাদ ফিরে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদের (স্কুল থেকে) নিয়ে এসে আবারও অনুশীলনে যাই।’