১৬ বছর বয়সী বার্সা ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল
১৬ বছর বয়সী বার্সা ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল

ইয়ামালকে স্পেন দলে দেখার অপেক্ষায় জাভি

বয়স ১৬ বছর পার করে দ্বিতীয় মাস চলছে। এখনো আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলেন অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে। আর এরই মধ্যে কিনা বার্সেলোনার শুরুর একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড় হয়ে ওঠার পথে লামিনে ইয়ামাল। আক্রমণভাগে খেলা এই কিশোর কাদিজের পর গতকাল ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষেও বার্সার হয়ে মাঠে নেমেছেন। শুধু মাঠে নামাই নয়, এক গোলে অ্যাসিস্ট ও আরও দুবার গোলের সুযোগ তৈরি করে বার্সার ৪-৩ ব্যবধানে জেতা ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতিও পেয়েছেন।

১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের এমন পারফরম্যান্স মুগ্ধ বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। ভবিষ্যতে ইয়ামালকে স্পেন জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখারও অপেক্ষায় বিশ্বকাপজয়ী এই সাবেক খেলোয়াড়।

বার্সেলোনার একাডেমি লা মেসিয়ায় বেড়ে ওঠা ইয়ামাল ক্লাবের মূল দলের হয়ে প্রথম খেলেন এপ্রিলে, মাত্র ১৫ বছর ৯ মাস ১৬ দিন বয়সে। বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে এটিই সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকের কীর্তি। ২০২২-২৩ মৌসুমে সেটিই ছিল ছিল তাঁর একমাত্র ম্যাচ।

টানা দুই ম্যাচে শুরুর একাদশে জায়গা পেয়েছেন লামিনে ইয়ামাল

নতুন মৌসুমে গত সপ্তাহে কাদিজের বিপক্ষে সুযোগ পান রাফিনিয়া কার্ডের কারণে নিষিদ্ধ থাকায়। প্রথম সুযোগেই মুগ্ধতা ছড়ান ইয়ামাল, ৮৫ মিনিটে বদলি হয়ে উঠে যাওয়ার সময় গ্যালারিতে সমর্থকেরা উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানায়। গতকাল ভিয়ারিয়ালের মাঠে নিজেকে আরও ছাড়িয়ে গেছেন ইয়ামাল। ম্যাচের ১২ মিনিটে তাঁর ক্রসেই বার্সেলোনাকে প্রথম গোল এনে দেন গাভি। এই অ্যাসিস্টে ইয়ামাল একটি রেকর্ডও গড়েছেন।

একুশ শতকে লা লিগায় সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে অ্যাসিস্ট এখন ইয়ামালের। ১৬ বছর ৪৫ দিন বয়সী ইয়ামাল পেছনে ফেলেছেন সতীর্থ আনসু ফাতির রেকর্ড (১৬ বছর ৩১৮ দিন)। প্রথম গোলের মতো বার্সেলোনার শেষ গোলেও ছিল ইয়ামালের অবদান। উইংয়ে খেলা ইয়ামাল ভিয়ারিয়ালের বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে যে নিচু শট নেন, তা পোস্টে লেগে চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো লেভার কাছে। পোলিশ স্ট্রাইকারকে শুধু বলে পা ছোঁয়াতে হয়েছে।

ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ইয়ামাল গোল না পেলেও সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছন

বার্সেলোনা কোচের মতে, বয়স অনুপাতে বেশ ভালোই খেলেছেন ইয়ামাল। মাঠে তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও অনেকের চেয়ে ভালো, ‘ওর ওপর প্রত্যাশা বেড়ে গেছে, সেটাই সে দেখিয়েছে। তাকে এখন শুরুতে নামানো হচ্ছে, কারণ পার্থক্য গড়ে দেওয়ার সামর্থ্য আছে। মাঠের ভেতর ওর সিদ্ধান্তগুলোও সঠিক হয়ে থাকে। আজ সে দু-তিনটা অ্যাসিস্ট করেছে। ওর বয়স আমাকে বিস্মিত করে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে প্রতিবার সঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে পারে। ফুটবলে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সবচেয়ে কঠিন।’

ইয়ামালের জন্ম বার্সেলোনার মাতারোয়। সেই সূত্রে এরই মধ্যে স্পেনের বয়সভিত্তিক দলগুলোয় খেলেছেন। এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ ইউরোতেও স্পেনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে ইয়ামালের সামনে আরও দুটি জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ আছে। তাঁর বাবা মরক্কোর, মা গিনির।

বার্সেলোনা কোচ জাভিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ইয়ামালকে তিনি স্পেন দলে দেখছেন কি না। জবাবে স্পেনের সাবেক মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমি ওকে স্পেনের হয়ে খেলতে দেখতে চাই। এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমি জানি না, সে কী করবে? আমি শুধু চাই, সে বার্সেলোনার হয়ে অনেক দিন খেলুক।’