ফাইনালে ওঠার পর দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন নেপালি মেয়েরা
ফাইনালে ওঠার পর দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন নেপালি মেয়েরা

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

এবারও ফাইনালে সাবিনাদের প্রতিপক্ষ নেপাল

নেপাল ১ (৪)–(২) ১ ভারত

অনেক নাটকের পর শেষ পর্যন্ত ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেছে স্বাগতিক নেপাল। ৩০ অক্টোবর সাফের ফাইনালে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে তারা।

এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়েদের সাফের ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-নেপাল। ২০২২ সালে কাঠমান্ডুতেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।

কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ভারত-নেপাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালটি ছিল নাটকীয় ও উত্তেজনায় ঠাসা। স্টেডিয়ামের গ্যালারিভর্তি দর্শকের চিৎকার আর আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে পুরোটা সময়ই আগুন ছড়িয়েছে এই ম্যাচ। এর মধ্যে নেপালের একটি গোল নিয়ে তৈরি হয় অচলাবস্থা। খেলা বন্ধ থাকে ৬৭ মিনিট। গ্যালারির দর্শকেরাও হয়ে পড়েছিলেন উত্তেজিত। গ্যালারি থেকে পানির বোতলও পড়েছে মাঠে।

নেপাল–ভারতের সেমিফাইনাল অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে

নাটকের শুরু ম্যাচের ৭২ মিনিটে। ওই সময় দশরথ স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দূরপাল্লার দারুণ এক শটে ভারতকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন সংগীতা বাসফোর। ভারতীয় ফুটবলাররা যখন নিজেদের ডাগআউটের সামনে গিয়ে উদ্‌যাপনে ব্যস্ত, ঠিক তখনই মধ্যমাঠে বল বসিয়ে নেপালি দল খেলা শুরু করে দেয়। শুধু খেলা শুরুই নয়, ফাঁকা মাঠে বল জালেও পাঠিয়ে দেন প্রীতি রাই। এই সময় ভারতীয় ফুটবলারদের কেউই মাঠে জায়গামতো ছিলেন না। টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায় ভুটানি রেফারি ওম চাকি খেলা শুরুর বাঁশিও বাজিয়েছেন।

ভারতীয় দল প্রতিবাদ জানায় স্বাভাবিকভাবেই। রেফারিও তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। এই সময় পাল্টা প্রতিবাদ জানায় নেপাল দল। গ্যালারি থেকেও শুরু হয় বোতল বর্ষণ। দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু হয় অচলাবস্থা। নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় ফুটবলাররাও মাঝমাঠে আশ্রয় নেন। পরে অবশ্য নেপাল মাঠে ফিরলে খেলা শুরু হয়।

সময় যোগ করে ম্যাচের বাকি ১৮ মিনিটের খেলাও ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। খেলা শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই একটি প্রতি আক্রমণ থেকে নেপালকে সমতায় ফেরান সাবিত্রা ভান্ডারি। ১-১ সমতায় ম্যাচের বাকি সময় যে কেউই গোল করে এগিয়ে যেতে পারত। তবে এই সময় নেপালকে মনে হয়েছে বেশি উজ্জীবিত। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর সরাসরি টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয় ম্যাচ।

নেপালি মেয়েদের আনন্দাশ্রু, হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন ভারতীয় গোলকিপার (ডানে)

টাইব্রেকারে নেপালের সাবিত্রা ভান্ডারি, গীতা রানী, সাবিতা রানা মাগার ও অমিশা কারকি গোল বল পাঠান। ভারতের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেন মনীষা ও কারিশমা সিরভোইকর। তবে অধিনায়ক আশালতা দেবীর শট পোস্টে লেগে ফেরে, চানু সরোখাইবামের দুর্বল শট সহজেই ফেরান টাইব্রেকারের জন্যই বদলি নামা নেপালি গোলকিপার অঞ্জনা রানা মাগার।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র করে গ্রুপ পর্ব শুরুর পর ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ-সেরা হয়েই সেমিতে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেরা চারের লড়াইয়ে আজ দুপুরে ভুটানকে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে ৭-১ গোলে